বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের ধর্ষণ চেষ্টা : তিনজন গ্রেপ্তার

ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী চলন্ত বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনায় জড়িতরা মাদকাসক্ত বলে জানিয়েছে পুলিশ। মাদক কেনার টাকা জোগাড় করতেই তারা ডাকাতি করে এবং লুট করা মোবাইল বিক্রি করে গাঁজা কেনে। গাঁজা বিক্রেতার সূত্র ধরে পুলিশ ডাকাত দলের সন্ধান পায় এবং অভিযান চালিয়ে সাভার থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।
গত সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে ইউনিক রোড রয়েলসের একটি বাসে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটে। রাত ১১টায় ঢাকার গাবতলী থেকে বাসটি উত্তরবঙ্গের উদ্দেশে রওনা হয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের জিম্মি করে বাসটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয় ডাকাত দল। তিন ঘণ্টা ধরে বাসটিকে বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে যাত্রীদের টাকা-পয়সা ও মালামাল লুট করে তারা। এ সময় নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানিও করা হয়। ঘটনার তিন দিন পর বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ওমর আলী নামের এক যাত্রী মির্জাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (দক্ষিণ) এসআই মো. আহসানুজ্জামান জানান, তদন্তের পর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ডাকাত দলের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পুলিশ জানতে পারে, সাভার-আশুলিয়া এলাকায় কিছু মাদকাসক্ত যুবক নিয়মিত বাস ডাকাতি ও ছিনতাই করে। এরপর এক মাদক কারবারিকে আটক করে তার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
গত শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সাভারের চন্দ্রা-নবীনগর সড়কের একটি পেট্রলপাম্পের সামনে থেকে ওই মাদক কারবারিকে আটক করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সাভারের গেন্ডা এলাকার একটি গ্যারেজ থেকে ঘুমন্ত অবস্থায় মো. সবুজ ও শরীফুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আটক করা হয় ডাকাত দলের আরেক সদস্য শহিদুল ইসলামকে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের পরিচয়:
১. শহিদুল ইসলাম ওরফে মহিদুল ওরফে মুহিত – মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার লাউতারা গ্রামের বাসিন্দা, তার বিরুদ্ধে দুটি বাস ডাকাতি ও তিনটি মাদক মামলা রয়েছে।
২. মো. সবুজ – শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের ইসমাইল মোল্লার ছেলে।
৩. শরীফুজ্জামান শরীফ – সাভারের টানগেন্ডা এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে।
পুলিশ জানিয়েছে, মো. সবুজ ও শরীফুজ্জামান টাঙ্গাইলের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা ডাকাতির সঙ্গে জড়িত আরও তিনজনের নাম-ঠিকানা প্রকাশ করেছেন। পুলিশ তাদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. আহসানুজ্জামান বলেন, “বাসে ডাকাতির সময় নারী যাত্রীদের ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি, তবে তারা শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন।” পুলিশ জানায়, পুরো ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকল অপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।