সোমবার ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, পৌষ ১ ১৪৩১, ১৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ব্রেকিং

গ্রেপ্তার অভিযান আরো জোরদার করা হবে: আসিফ মাহমুদ দেশকে আরও উন্নত ও স্বাধীনতার পূর্ণ সুফল ভোগ করতে আমরা বদ্ধপরিকর : প্রধান উপদেষ্টা ভবিষ্যতে ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা কমানো হবে: অর্থ উপদেষ্টা বেনজীর ও মতিউর পরিবারের বিরুদ্ধে ৬ মামলা ‘কয়েকজন’ বিচারপতির বিষয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে জুডিশিয়াল কাউন্সিলের প্রতিবেদন রাজনৈতিক মঞ্চে সশরীরে আসছেন খালেদা জিয়া ভোট ‘চুরিতে’ জড়িত কর্মকর্তাদের বিচার চায় বিএনপি মহার্ঘ্য ভাতা সব সরকারি কর্মচারী পাবেন: জনপ্রশাসন সচিব রাষ্ট্রের সংস্কার কখনো রাজনীতিবিদদের অবসর দিয়ে হয় না: রিজভী ছাত্রলীগের সাবেক নেত্রী নদীসহ চার জন রিমান্ডে মানহানির মামলায় এবিসি নিউজ থেকে দেড় কোটি ডলার পাচ্ছেন ট্রাম্প

পর্যটন

পর্যটকের পদচারণে মুখর সেন্টমার্টিন, কর্মচঞ্চল দ্বীপ

 প্রকাশিত: ১১:৫৬, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪

পর্যটকের পদচারণে মুখর সেন্টমার্টিন, কর্মচঞ্চল দ্বীপ

দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে দেরিতে হলেও পা পড়েছে পর্যটকের। এতে মুখে হাসি ফুটেছে দ্বীপের সাড়ে ১০ হাজার বাসিন্দার।

 পর্যটকরা বলছেন, পর্যটক আগমনে প্রাণ ফিরবে দ্বীপের, চাঙা হবে সব পর্যটন ব্যবসা। দূর হবে আর্থিক অনটন। তবে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে সব জাহাজ চলাচলের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।  

তারা জানান, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে প্রতিদিন মাত্র দুই হাজার পর্যটক রাত্রিযাপনের সুযোগ পাচ্ছেন। ফেব্রুয়ারিতে পুরোপুরি বন্ধ রাখা হবে পর্যটন কার্যক্রম। সরকারি এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য দ্বীপবাসী এবং পর্যটন সংশ্লিষ্টরা দাবি জানিয়েছেন। পর্যটকের সংখ্যা বাড়লে দ্বীপবাসী ও ব্যবসায়ীরা ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন। এখন কক্সবাজার থেকে জাহাজ এসে এক/দুই ঘণ্টার বেশি থাকতে পারে না। বলতে গেলে এখন জাহাজ ভ্রমণ হচ্ছে।

সেন্টমার্টিনের স্থায়ী বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ। পেশায় একজন ভ্যানচালক। মৌসুম এলে ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু দীর্ঘ প্রায় ১০ মাস সেন্টমার্টিনে আসেননি কোনো পর্যটক। এতে অনেক কষ্টে দিন পার করতে হয়েছে তাকে। তবে এখন দ্বীপে পর্যটক আসা মুখে হাসি ফুটেছে নুর মোহাম্মদের। তিনি দ্রুত টেকনাফ থেকে গেলবারের মতো আট/নয়টি জাহাজ চলাচলের কথা বলেন।  

দ্বীপের বাসিন্দা হোটেল মারমেইডের স্বত্বাধিকারী মাহবুবুর রহমান বলেন, পর্যটক না আসায় দীর্ঘদিন ধরে অনেক কষ্টে দিন কাটিয়েছি। এখন দ্বীপে পর্যটক আসতে শুরু করায় অনেক ভালো হয়েছে। আশা করছি, এখন খুব ভালোভাবে সংসার চালাতে পারব।

শুধু তারা নন, কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে গত পহেলা ডিসেম্বর পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হওয়ার পর প্রাণ ফিরেছে দ্বীপের বাসিন্দাদের মধ্যে। কর্মচাঞ্চল্য এসেছে পর্যটন নির্ভর সব ব্যবসায়। তবে এখনো তুলনামূলক কম। অনেক পর্যটক দ্বীপে এসে রাত্রিযাপন করছেন।

বার্মিজ দোকানি হেলাল উদ্দিন বলেন, বেচাকেনা ছিল না, তাই দোকানও বন্ধ রেখেছিলাম প্রায় ১০ মাস। এখন পর্যটক আসছেন, তাই দোকানও খুলেছি। মোটামুটি ভালোই বিক্রি হচ্ছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ভেঙে যাওয়া দোকান এখনো ঠিকমতো মেরামত করতে পারিনি।  

হোটেল সি-প্রবালের পরিচালক আব্দুল মালেক বলেন, অনেক আন্দোলন সংগ্রামের পর দ্বীপে পর্যটক আসছেন। সরকারের বিধিনিষেধের কারণে অনেক পরিবর্তন আনতে হয়েছে হোটেলেও। আজ হোটেলে ১০টি রুম বুকিং রয়েছে। আস্তে আস্তে বাড়ছে পর্যটকের চাপ। আমরা পর্যটকদের সন্তুষ্ট রাখার চেষ্টা করি সব সময়। আশা করি, এ মৌসুমের বাকি সময় বেশ ভালো কাটবে।

তবে দ্রুত টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে সব পর্যটকবাহী জাহাজ চালু করার দাবি জানিয়েছেন দ্বীপের ব্যবসায়ীরা।

সেন্টমার্টিনে বেড়াতে আসা ঢাকার মোহসিনুল, তোফা, রিদুয়ান ও আনোয়ার বলেন, অনেকদিন পর দ্বীপে এসে খুব ভালো লাগছে। তবে কক্সবাজার থেকে ছয়/সাত ঘণ্টার ভ্রমণ কষ্টকর হচ্ছে। জাহাজ চলাচল টেকনাফ থেকে হলে খরচ-সময় বাঁচবে এবং আরামদায়ক হবে। এখন দ্বীপের জেটির অবস্থা খুবই খারাপ, তাও সংস্কার করা দরকার। আমরা দ্রুত টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে সব পর্যটকবাহী জাহাজ চালুর দাবি জানাচ্ছি। 

দ্বীপের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব জানালেন, প্রয়োজনে সামনে চার মাস জাহাজ চলাচলের ব্যবস্থা করা হোক। তাহলে দ্বীপবাসী, ব্যবসায়ী ও পর্যটকরা আরও খুশি হবেন।
 
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন জানান, সরকারের বিধিনিষেধ ও নিয়মাবলী মেনে এখন কক্সবাজার থেকে প্রতিদিন তিন/চারটি জাহাজ আসছে। মৌসুমের প্রথমদিন আসা পর্যটকদের ফুল দিয়ে বরণ করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে, আগত পর্যটকরা যেন কোনো হয়রানির শিকার না হন। সেই কারণে জেটিঘাটসহ বিভিন্ন স্পটে পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।