Tech for Good: প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশ্বকে বদলে দিচ্ছে তরুণরা

টেক ফর গুড
প্রযুক্তি কেবল সুবিধা বৃদ্ধির জন্য নয়, বরং বিশ্বের উন্নতির জন্যও ব্যবহার করা যায়—এটাই প্রমাণ করছে তরুণ উদ্ভাবকরা। Tech for Good হলো CNN এর একটি সিরিজ। যেখানে এমন শিক্ষার্থী ও গবেষকদের তুলে ধরা হয়, যারা পরিবেশ রক্ষা, মহাকাশ প্রযুক্তি, ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে নতুন উদ্ভাবন আনছে। প্রবালপ্রাচীর পুনরুদ্ধার, পুনর্ব্যবহারযোগ্য রকেট, ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে হাঙ্গর সনাক্তকরণসহ নানা উদ্যোগ বিশ্বকে আরও টেকসই ও নিরাপদ করে তুলছে। তরুণদের নতুন ভাবনার মাধ্যমেই ভবিষ্যৎ সমস্যার সমাধান সম্ভব। তাদের প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনই আগামী বিশ্বের রূপ বদলাবে।
এখানে লন্ডনে অংশ নেওয়া উদ্ভাবকদের এবং তাদের প্রযুক্তির সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরা হল।
'প্রবালপ্রাচীর রক্ষার জন্য একটি টুলকিট'
অস্ট্রেলিয়ার পিএইচডি গবেষক টেলর হুইটম্যান তার উদ্ভাবিত প্রবালপ্রাচীর পুনরুদ্ধার ডিভাইস নিয়ে লন্ডনে আসেন। গ্রেট ব্যারিয়ার রিফসহ বিশ্বজুড়ে প্রবালপ্রাচীর উচ্চ তাপমাত্রার কারণে ক্ষতির মুখে পড়ছে, যা প্রবালের ব্লিচিং ও ধ্বংস ঘটাতে পারে।
CNN-এর Tech for Good সিরিজে হুইটম্যানের উদ্ভাবন দেখানো হয়, যা প্রবালের বাচ্চাদের নিরাপদ আশ্রয় দিয়ে প্রবালপ্রাচীর পুনরুদ্ধারে সহায়তা করে। তিনি আশা করছেন, এই প্রযুক্তি বিশ্বব্যাপী সম্প্রসারণ করে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের জন্য সহজলভ্য করা যাবে।
তিনি বলেন, "আমরা এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ের মধ্যে আছি। এখনই যদি কিছু না করা হয়, তাহলে পরে অনেক দেরি হয়ে যাবে।"
'রকেট পুনরুদ্ধার প্রযুক্তি'
সুইস আল্পসে ETH Zurich-এর শিক্ষার্থী হান্নেস শাটজম্যান ও তার দল একটি কাস্টম-ডেভেলপড রকেট পুনরুদ্ধার ব্যবস্থা পরীক্ষা চালায়। AI চালিত প্রযুক্তিটি প্যারাশুটকে নির্দিষ্ট স্থানে নামাতে সাহায্য করে, যাতে রকেট পুনরুদ্ধার ও পুনঃব্যবহার করা যায়।
লন্ডনের মঞ্চে শাটজম্যান জানান, তারা শীঘ্রই একটি প্রকৃত রকেট উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা করছেন, যেখানে হেলিকপ্টারের পরিবর্তে সরাসরি রকেট উৎক্ষেপণ ও পুনরুদ্ধার করা হবে।
তিনি আশা করেন, একদিন তাদের প্রযুক্তি মহাকাশ শিল্পের মানদণ্ড হয়ে উঠবে এবং আরও টেকসই মহাকাশ অভিযান সম্ভব করবে।
"আমি চাই, শিক্ষার্থীরা বড় স্বপ্ন দেখুক এবং সেই স্বপ্নগুলোকে বাস্তবায়নের জন্য কাজ করুক।"
'তরুণরা ভিন্নভাবে ভাবে'
'SharkEye' প্রকল্প সান্তা বারবারার সৈকতে ড্রোন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে সাদা হাঙ্গর শনাক্ত করে।
গবেষক নিল নাথান জানান, তার লক্ষ্য হাঙ্গর সম্পর্কে ভুল ধারণা দূর করা। তিনি বলেন, "হাঙ্গর আক্রমণ বিরল, ট্যাক্সিতে আহত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি"।
বর্তমানে, প্রকল্পটি ক্যালিফোর্নিয়ায় সাদা হাঙ্গর শনাক্ত করার ওপর কাজ করছে। নাথান আশা করেন, ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তি অন্য প্রজাতির হাঙ্গর শনাক্তকরণেও ব্যবহৃত হবে।
তিনি বলেন, "এই প্রযুক্তি অন্যান্য সম্প্রদায়ের কাছে পৌঁছানো উচিত, যাতে তারা এর সুবিধা নিতে পারে"।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে, নিল নাথান বলেন, "তরুণরা আগের প্রজন্মের চেয়ে ভিন্নভাবে ভাবে" এবং "জলবায়ু পরিবর্তন, প্লাস্টিক দূষণ, বন্যপ্রাণী সংকট, মহাকাশ অনুসন্ধান - এই বড় সমস্যা সমাধানে নতুন মনের নতুন সমাধান দরকার।" তিনি উল্লেখ করেন, তরুণ উদ্ভাবকদের হাত ধরেই প্রযুক্তি একটি ভালো বিশ্বের চাবিকাঠি হবে।