অভ্যুত্থানের সময় সাফারি পার্কে ছবি নিয়ে সাকিবের ব্যাখ্যা

অভ্যুত্থানের সময় তোলা ছবি ঘিরে বিতর্কে মুখ খুললেন বাংলাদেশি অলরাউন্ডার ছবি - সাকিব আল হাসান
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় নীরব ভূমিকায় থাকার কারণে গত বছর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন বাংলাদেশের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ওই সময় সাকিবকে দেখা যায় কানাডার একটি সাফারি পার্কে ঘুরতে, যার ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেন তাঁর স্ত্রী শিশির। সেই ছবি ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয় এবং দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর সাকিবের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে। এরপর থেকে দেশে আর ফেরেননি সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব।
সম্প্রতি দেশের একটি ইংরেজি দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাকিব এই প্রসঙ্গে মুখ খোলেন।
ছবিটি নিয়ে সাকিব বলেন, 'সত্যি বলতে, আমি তখন বেশ কিছুদিন দেশের বাইরে ছিলাম। প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রে মেজর লিগ ক্রিকেট খেলতে গিয়েছিলাম, এরপর কানাডায় যাই। ছবিটি কানাডায় তোলা হয়েছিল। আমি নিজে এটি পোস্ট করিনি, তবুও দায় নিচ্ছি। এটি ছিল একটি পূর্বপরিকল্পিত পারিবারিক ভ্রমণ। এখন বুঝতে পারছি, একজন পাবলিক ফিগার হিসেবে আমাকে আরও সচেতন হওয়া উচিত ছিল। আমি তা স্বীকার করছি। তবে আমার মনোযোগ সবসময় ক্রিকেটেই ছিল—সংসদ সদস্য হওয়ার আগেও এবং পরে। আমাকে কখনো রাজনীতিতে জড়াতে বলা হয়নি, বরং সবসময়ই বলা হয়েছে শুধু ক্রিকেটে মনোযোগ দিতে।'
ছবিটি যে এমন প্রতিক্রিয়া তৈরি করবে তা বুঝতে পারেননি বলেও জানান তিনি। বলেন, 'সত্যি বলতে, আমি ভাবিনি ছবিটি এতটা ছড়িয়ে পড়বে। প্রতিক্রিয়া শুরু হওয়ার পর বুঝতে পেরেছিলাম পরিস্থিতি কতটা গুরুতর। অনেকেই বলেছে, ওই সময় এমন ছবি দেখে তারা কষ্ট পেয়েছে। এখন বুঝতে পারি, সেটা একটি ভুল ছিল। অন্যরাও এমন ছবি পোস্ট করলেও, আমারটা বেশি মনোযোগ পেয়েছে—হয়তো আমি বলেই। আরও সতর্ক থাকা উচিত ছিল আমার।'
কানাডায় গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগে খেলার সময় এক দর্শকের সঙ্গে বাগবিতণ্ডার প্রসঙ্গেও কথা বলেন সাকিব। তাঁর ভাষ্য, 'আমার মনে হয়, সে লোকটি আমাকে উসকানি দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এসেছিল, অথবা হয়তো সে খুব হতাশাগ্রস্ত ছিল। সে বারবার জিজ্ঞাসা করছিল, আমি কিছু করছি না কেন। একপর্যায়ে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করি, "ভাই, আপনি কী করেছেন?" সেখান থেকেই উত্তেজনা তৈরি হয়। আমি কিছু করেছি কি না, সেটা মানুষ বিচার করবে। তবে কেউ যদি বারবার প্রশ্ন করে, আমার কি জবাব দেওয়ার অধিকার নেই? আমি তখন তাদের জিজ্ঞাসা করেছিলাম, আমি কী করতে পারি? আমি ঘটনা উপেক্ষা করছিলাম না, বরং বুঝে উঠতে পারছিলাম না কী করব। সরকার ও অন্যরা আমাকে কিছু পোস্ট করতে বলেছিল, কিন্তু তা কি কাজে আসত? আমি সবসময় দায়িত্বশীলভাবে কাজ করতে বিশ্বাস করি। আমি যদি বাস্তব কোনো পরিবর্তন আনতে না পারি, তাহলে ফাঁকা বুলি দিয়ে কী হবে?'
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন সাকিব। ঘরের মাঠে শেষ টেস্ট খেলার ইচ্ছা পূরণ হয়নি তাঁর। খেলতে পারেননি পাকিস্তান ও দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও।