শনিবার ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ফাল্গুন ১০ ১৪৩১, ২৩ শা'বান ১৪৪৬

ব্রেকিং

এনআইডি জালিয়াতি: ছয় কর্মচারীকে বরখাস্ত করল ইসি বিএনপির বিরুদ্ধে কারো অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না: তারেক রহমান আজহারের মুক্তির ব্যবস্থা করুন, সরকারকে জামায়াত আমির নতুন দলের আত্মপ্রকাশ ২৬ ফেব্রুয়ারি, মতবিরোধের পর শীর্ষ পদ চূড়ান্ত নায়েম থেকে সরিয়ে দেওয়া হল কবি গালিবকে বাসে ডাকাতি-‘শ্লীলতাহানি’: তিন ডাকাত গ্রেপ্তার, এএসআই বরখাস্ত বাংলাদেশ ভ্রমণে পাকিস্তানিদের ‘ভিসা ক্লিয়ারেন্স’ লাগবে না স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ রোজায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে প্রস্তুতি রয়েছে: জ্বালানি উপদেষ্টা স্থায়ী ক্যাম্পাস না থাকলে ব্যবস্থা নেবে ইউজিসি পিতৃমাতৃহীন সিয়ামকে কি মনে রাখবে এই দেশ পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে দুই ফিলিস্তিনি শিশু নিহত সশস্ত্র বাহিনী প্রধানকে বরখাস্ত করলেন ট্রাম্প তেল আবিবকে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়ার হুমকি ইরানের, ‘প্রস্তুত’ ইসরায়েল

খেলা

যে কোনো দলকে হারানোর বিশ্বাস নিয়ে ভারতের সামনে বাংলাদেশ

 প্রকাশিত: ১১:৪৪, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

যে কোনো দলকে হারানোর বিশ্বাস নিয়ে ভারতের সামনে বাংলাদেশ

ভারতের সঙ্গে পাকিস্তান নাকি নিউ জিল্যান্ড? এই গ্রুপ থেকে সেমি-ফাইনালের সম্ভাব্য দুই দল নিয়ে আলোচনা অনেকটা এরকমই। বাংলাদেশ এখানে ঠিক বিবেচনায়ই নেই। কিন্তু নাজমুল হোসেন শান্ত তো আগেই বলেছেন, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য তাদের! যে কথা তিনি বলে গেছেন দেশ থেকে, দুবাইয়ে নিজেদের প্রথম ম্যাচের আগে তার কণ্ঠে সেই একই জোর। বাংলাদেশ অধিনায়কের আত্মবিশ্বাসী উচ্চারণ, যে কোনো দলকে হারাতে পারে তার দল।

এমন প্রত্যয়ী উচ্চারণের জন্য প্রশংসা পেতেই পারেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তবে মাঠের পারফরম্যান্সে সেই সামর্থ্য ও তাড়নার প্রমাণ রাখতে না পারলে এই প্রশংসাই পরে রূপ নেবে কৌতুকে। প্রমাণের পালায় প্রথম ম্যাচেই শান্তদের অপেক্ষায় সম্ভাব্য সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ।

ফেভারিট ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু বাংলাদেশ সময় দুপুর ৩টায়।

সবশেষ কয়েকটি মুখোমুখি লড়াইয়ে দুই দলকেই মনে হবে প্রায় সমানো সমান। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পুনেতে জিতেছিল ভারত। তবে এর আগের মাসেই এশিয়া কাপে কলম্বোতে জিতেছিল বাংলাদেশ। ২০২২ সালে দেশের মাঠে তিন ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশ জিতেছিল ২-১ ব্যবধানে।

তবে সময়ের পরিক্রমায় বদলে গেছে অনেক কিছুই। এবারের লড়াইয়ে ভারত মাঠে নামছে পরিষ্কার ফেভারিট হিসেবেই।

তবে ওয়ানডে ক্রিকেট বলেই আত্মবিশ্বাসের হাওয়া বইছে বাংলাদেশ দলে। অধিনায়ক শান্তর বিশ্বাস, ভারতত তো বটেই, টুর্নামেন্টের সব দলকে হারানোর সামর্থ্য আছে তার দলের।

“আমার মনে হয়, সব বিভাগেই আমাদেরকে ভালো খেলতে হবে, ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং। গত কয়েক বছরে এই সংস্করণে যেভাবে খেলেছি আমরা, আমাদের দলটি বেশ ভালো। কন্ডিশনও অনেকটা আমাদের মতো। নিজেদেরকে যেভাবে তৈরি করেছি, তাতে আমরা বেশ আত্মবিশ্বাসী। আগামী কালের ম্যাচের জন্য সেরা কিছুর আশাই করছি।”

“এই সংস্করণে আমাদের দল বেশ ভারসাম্যপূর্ণ এবং আমরা বিশ্বাস করি, এই টুর্নামেন্টে যে কোনো দলকে আমরা হারাতে পারি। সব দলই ট্রফি জয়ের সামর্থ্য রাখে। তবে আমি এমন একজন, প্রতিপক্ষ নিয়ে খুব বেশি যে ভাবে না। আমরা যদি নিজেদের পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করতে পারি যথাযথভাবে, যে কোনো দিনে যে কোনো দলকে হারাতে পারি আমরা।”

টুর্নামেন্ট শুরুর আগে প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তান ‘এ’ দলের সঙ্গেই লড়াই করতে পারেনি বাংলাদেশ। তবে সেই ম্যাচে ফলাফলকে গুরুত্বই দিচ্ছেন না অধিনায়ক।

“প্রস্তুতি ম্যাচের হারের কোনো ধরনের কোনো প্রভাব পড়বে না। প্রস্তুতি ম্যাচে আমরা অনেক কিছু দেখেছি, সবাইকে বোলিং বা ব্যাটিংয়ের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। অনুশীলনের জন্যই ওসব করা। আমার মনে হয় না, খুব বেশি একটা প্রভাব পড়বে।”

সেদিন বোলাররা সবাই নিজেদের ঝালিয়ে নিলেও ব্যাটিং করেননি মাহমুদউল্লাহ ও পারভেজ হোসেন ইমন। পারভেজ এমনিতেও একাদশের বিবেচনায় নেই। তবে চোট-টোট বাধা হয়ে না দাঁড়ালে মাহমুদউল্লাহ থাকবেন নিশ্চিতভাবেই। একাদশ আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আছে দলের।

ইনিংস শুরু করবেন সৌম্য সরকার ও তানজিদ হাসান, তিন নম্বরে অধিনায়ক শান্ত। চার নম্বরে মিরাজ থাকছেন বলেই মনে হচ্ছে। সবশেষ দুই সিরিজে চারে খেলেই ছয় ম্যাচে তিনটি ফিফটি করেছেন এই অলরাউন্ডার। দুবাইয়ে প্রস্তুতি ম্যাচেও চারে নম্বরে নেমে দলের সর্বোচ্চ ৪৪ রান আসে তার ব্যাট থেকে।

এরপর মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ। সাতে জাকের আলি নাকি তাওহিদ হৃদয়, সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে দলকে। সম্ভাবনায় এগিয়ে জাকেরই।

লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার রিশাদ হোসেনের ওপর দলের আস্থা প্রবল। খেলবেন তিনিও। পেস আক্রমণে তাসকিন আহমেদের সঙ্গে আছেন মুস্তাফিজুর রহমান। বাকি জায়গাটির বিবেচনায় থাকবেন তানজিম হাসান ও নাহিদ রানা।

ম্যাচের আগের দিন অধিনায়ক শান্তর সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় সংবাদকর্মীরা বারবার জানতে চাইলেন নাহিদের নানা কিছু নিয়ে। তুমুল গতির কারণে তাকে ঘিরে আগ্রহের পারদ এত উঁচুতে। গতিতে তানজিমও খুব পিছিয়ে নেই। সঙ্গে আগ্রাসান ও উইকেট শিকারের প্রবণতা মিলিয়ে দল তাকে বেছে নিলেও বিস্ময়কর কিছু হবে না তা।

ভারত বড় ধাক্কা পেয়েছে চোটের কারণে দলের সেরা বোলার জাসপ্রিত বুমরাহকে না পাওয়ায়। তার পরও শক্তি-সামর্থ্য-ফর্ম-অভিজ্ঞতা মিলিয়ে আসরের সবচেয়ে ফেভারিট তারাই। ম্যাচের আগের দিন অধিনায়ক রোহিত শার্মার সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশকে নিয়ে কোনো প্রশ্ন-টশ্ন তো দূরের কথা, ‘বাংলাদেশ’ নামটিই উচ্চারিত হলো না একবারও। যাদের দৃষ্টি ট্রফিতে, তারা কেন প্রথম বাধা নিয়ে ভেবে কাতর হবে!

ভিরাট কোহলি অবশ্য স্টার স্পোর্টসে বললেন, এই টুর্নামেন্টের ধরনের কারণেই প্রথম ম্যাচ থেকেই সেরাটা উজাড় করে দিতে হবে তাদের। বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৪ বছর আগের এক সুখস্মৃতিও মনে পড়ল তার।

“শেষবার যখন আইসিসি টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলেছি আমরা, আমাদের জন্য বিশ্বকাপ খুব ভালো গিয়েছে। বিশ্বকাপ জিতেছিলাম আমরা, ২০১১ সালে। ভালো স্মৃতি আছে সেটির।”

“এই টুর্নামেন্ট ওয়ানডে হলেও এখানে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মতো চাপ থাকে। একই রকম অনেকটা, কারণ ওখানেও তিন-চার ম্যাচই থাকে (গ্রুপে)। শুরুটা ভালো না করলে চাপে পড়ে যেতে হয়। প্রথম দুটি ম্যাচ তাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই ম্যাচগুলোয় নিজেদের সেরা খেলাটা বয়ে আনা জরুরি। এজন্য এই টুর্নামেন্টকে আমি পছন্দ করি। চাপ প্রথম ম্যাচ থেকেই থাকে, শুরু থেকেই সেরাটা খেলতে হয়।”

ভারত সেরাটা খেলতে পারলে বাংলাদেশের সম্ভাবনাও উধাও হয়ে যাবে। তবে শান্তর সেই কথা চলে আসে এখানে আবারও। তাদের লক্ষ্য চ্যাম্পিয়ন হওয়া। কাজেই ভারতে ভড়কালে চলবে কেন!