অস্ট্রেলিয়ান ওপেন
স্ফেরেফকে গুঁড়িয়ে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের মুকুট ধরে রাখলেন সিনার
শিরোপা লড়াইয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে নিজেকে মেলে ধরলেন ইয়ানিক সিনার। আলেক্সান্দার স্ফেরেফকে তেমন কোনো সুযোগই দিলেন না তিনি। সরাসরি সেটে জিতে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের মুকুট ধরে রাখলেন ইতালিয়ান তারকা।
প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপার হাতছানিতে রোববার মেলবোর্ন পার্কের রড লেভার অ্যারেনায় নেমে স্ফেরেফ যা একটু লড়াই করতে পারেন দ্বিতীয় সেটে; কিন্তু সিনারের গতি আর ছন্দের সঙ্গে পেরে ওঠেননি তিনি। পুরুষ এককের ফাইনালে দুই ঘণ্টা ৪২ মিনিটে ৬-৩, ৭-৬ (৭-৪), ৬-৩ গেমে জিতে ট্রফি নিশ্চিত করেন ২৩ বছর বয়সী সিনার।
বছরের প্রথম এই গ্র্যান্ড স্ল্যামে এবার দুর্দান্ত কেটেছে র্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর সিনারের। পুরো টুর্নামেন্টে মাত্র দুটি সেট হেরেছেন তিনি; দ্বিতীয় ও চতুর্থ রাউন্ডে।
ইতালির প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে তিনটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের কীর্তি গড়লেন সিনার। পেছনে ফেললেন ১৯৫৯-৬০ এর টানা দুবার রোলা গাঁরোয় পুরুষ এককে চ্যাম্পিয়ন হওয়া নিকোলা পিয়েত্রানগেলিকে।
গত বছর অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয়ের পর ইউএস ওপেনেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন সিনার। ১৯৯২-৯৩ এ জিম কুরিয়ারের পর সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে টানা দুবার শিরোপা জিতলেন তিনি।
চ্যাম্পিয়নশিপ পয়েন্ট নিশ্চিত হতে দুই হাত তুলে বেশ শান্তভাবে উদযাপন করেন সিনার। পরে মাইক্রোফোন হাতে উচ্ছ্বাস প্রকাশের মাঝে বিশেষ করে দলের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
“এই পজিশনে আসার জন্য আমরা অনেক পরিশ্রম করেছি। এই অনুভূতি আপনাদের সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করতে পারাটা চমৎকার, সাফল্য অর্জন এবং তা আপনাদের সঙ্গে উপভোগ করতে পারা দারুণ ব্যাপার।”
প্রতিপক্ষকেও প্রেরণা জোগালেন সিনার। আগামী দিনের জন্য জানালেন শুভকামনা।
“নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখুন। আমরা জানি, খেলোয়াড় ও ব্যক্তি হিসেবে আপনি কতটা শক্ত প্রতিপক্ষ এবং (একদিন) আপনি ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে পারবেন।”
দারুণ আরও দুটি কীর্তি গড়েছেন সিনার। ১৯৭৩ সালে এটিপি র্যাঙ্কিং চালুর পর থেকে, শীর্ষে থেকে খেলা প্রথম ৫০ ম্যাচে সর্বোচ্চ জয়ের রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন তিনি, ৪৭টি; দুই গ্রেট বিয়র্ন বর্গ ও জিমি কনর্সের সমান, আরেক গ্রেট রজার ফেদেরারের চেয়ে একটি বেশি।
এছাড়া, ৩৫ বছরের মধ্যে চতুর্থ খেলোয়াড় হিসেবে কোনো গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে সার্ভিসে পয়েন্ট হারাননি তিনি। এই সময়ে এমন কীর্তি আছে কেবল পিট স্যাম্প্রাসের (১৯৯৫ সালের উইম্ভলডন), ফেদেরার (২০০৩ সালের উইম্বলডন) ও রাফায়েল নাদালের (২০১৭ সালের ইউএস ওপেন)।
সিনারের এমন দাপুটে পারফরম্যান্সে স্ফেরেফের অধরা গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের অপেক্ষা বাড়ল আরও। এই নিয়ে তিনটি গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে হারলেন তিনি। ২০২০ সালের ইউএস ওপেনের পর গত বছর ফরাসি ওপেনের ফাইনালে হেরেছিলেন তিনি।
সেমি-ফাইনালে এক সেট পরই নোভাক জোকোভিচ চোট পেয়ে সরে দাঁড়ানোয় ফাইনালের দুয়ার খুলে যায় স্ফেরেফের সামনে। কিন্তু ব্যর্থতা তার পিছু ছাড়ল না এখানেও। বারবার রানার্সআপের ট্রফি হাতে তোলাটা যে কতটা কষ্টের, ম্যাচ শেষে তা লুকালেন না ২৭ বছর বয়সী জার্মান।
“প্রথমত, এই ট্রফির (চ্যাম্পিয়ন) পাশে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকা এবং ওটা ছুঁতে না পারাটা খুব খারাপ (কষ্টের)। ইয়ানিককে অভিনন্দন, এটা তোমারই প্রাপ্য। অনেক এগিয়ে থেকে বর্তমানে তুমিই বিশ্বের সেরা। আশা করেছিলাম, আজ ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ব; কিন্তু তুমি বেশিই ভালো খেলেছ। এটাই আসল বিষয়।”