একই ব্যক্তি টানা দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়ার পক্ষে বিএনপি

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ ২২ এপ্রিল জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দলটির তৃতীয় দফা বৈঠকের মধ্যাহ্ন বিরতিতে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘একই ব্যক্তি টানা দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বিপক্ষে বিএনপি। তবে দুবারের পর বিরতি দিয়ে আবারও সেই ব্যক্তিকে প্রধানমন্ত্রী করা যেতে পারে।’ তারা প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রাখার পক্ষে।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রীর কর্তৃত্ব বাতিলের কথা বলেছে কমিশন। আমরা বলেছি কর্তৃত্ব থাকা উচিত। তবে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বাড়ানোর পক্ষে বিএনপি। আমরা চাই— কিছু ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর বাইরেও তিনি (রাষ্ট্রপতি) সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য থাকবে।
বিএনপি প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতার একই ব্যক্তি হওয়ার পক্ষে এবং প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ পাঁচ বছরই রাখতে চায়। চার বছরের মেয়াদ প্রস্তাব তারা প্রত্যাখ্যান করেছে। এছাড়া দলটি আইনসভাকে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট করার পক্ষে মত দিয়েছে— যেখানে ৪০০ আসনের মধ্যে ১০০ আসনে নারী এমপি নির্বাচিত হবেন সরাসরি ভোটে, এবং দুইজন ডেপুটি স্পিকার বিরোধী দল থেকে আসবেন। সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতিতেও বিরোধীদলের অগ্রাধিকার থাকবে।
বিএনপি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার না করার পূর্বের দাবিও পুনর্ব্যক্ত করেছে। তারা প্রস্তাব দিয়েছে, সংসদ সদস্যরা যেন কোনও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে পদে থাকতে না পারেন। ধর্মনিরপেক্ষতা বাতিল করে বিভিন্ন ধর্ম ও সংস্কৃতির স্বাধীনতার বিষয়েও কমিশনের সঙ্গে একমত হয়েছে দলটি।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘ধর্ম নিরপেক্ষতা বাতিল করার কথা বলেছে কমিশন। তারা বাংলাদেশে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর স্বাধীনতা ও মতের কথা বলেছে। আমরা এর সঙ্গে একমত পোষণ করেছি।’
সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হয়, যেখানে বিএনপি বলেছে আপিল বিভাগের প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে তিনজন বিচারপতির একটি প্যানেল বিবেচনায় রাখা উচিত।
বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ইসমাইল জবিউল্লাহ, আবু মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান এবং ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। কমিশনের পক্ষ থেকে অংশ নেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামানসহ অন্যান্য সদস্যরা। এর আগে ১৭ ও ২০ এপ্রিল প্রথম ও দ্বিতীয় দফা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।