দেশে অস্থিরতা বিরাজ করছে: কাকরাইলে আলোচনায় বিএনপি মহাসচিব

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর | ফাইল ছবি
দেশে এখন এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘এই সময়টা আমাদের পরীক্ষার সময়। পত্রপত্রিকা, টেলিভিশন টক শো—সবকিছু দেখেন, কেমন একটা অস্থিরতা চলছে দেশে।’
রোববার বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলস্থ ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রয়াত নেতা আবদুল্লাহ আল নোমানের স্মরণে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্ধারিত অনেক বিষয়ই আজ অনির্ধারিত হয়ে পড়েছে। অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সংস্কার, নির্বাচন—এই শব্দগুলো এখন বেশি উচ্চারিত হচ্ছে। সব রাজনৈতিক দলের উচিত ধৈর্যের সঙ্গে সমস্যাগুলোর সমাধানে এগিয়ে আসা।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির বৈঠকের প্রসঙ্গ তুলে তিনি জানান, সেখানে বিএনপির পক্ষ থেকে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান আসবে এবং শিগগিরই নির্বাচন হবে, যেখানে জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারবে।
দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি। গণতন্ত্র এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি। নির্বাচনের মাধ্যমে সঠিক সরকার এবং সংসদ এখনো আসেনি। কাজেই আমাদের সচেতনভাবে, সাহসিকতার সঙ্গে এগোতে হবে।’
আলোচনায় তিনি প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলামের হত্যার প্রসঙ্গও তুলে ধরেন। বলেন, ‘জাহিদুলকে হত্যা করা হয়েছে। কারা করেছে তা এখনো জানা যায়নি। তবে যারা এই সময়ে একজন ত্যাগী ছাত্রনেতাকে হত্যা করতে পারে, তারা দেশের পক্ষে, গণতন্ত্রের পক্ষে নয়।’
তিনি শ্রমজীবী মানুষের অবস্থা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের নানা সংস্কার থাকলেও শ্রমজীবী মানুষের জন্য কোনো কথা নেই। কৃষক ন্যায্যমূল্য পায় না, শ্রমিকের সন্তানেরা ভালো শিক্ষা পায় না, বই পায় না।’ তার ভাষায়, ‘সাধারণ মানুষ এখন মিডিয়া ও নাটকেও অনুপস্থিত।’
আবদুল্লাহ আল নোমানের স্মৃতিচারণায় তিনি বলেন, ‘এই সন্ধিক্ষণে তাঁর মতো নেতার অভাব স্পষ্ট। তিনি ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন, দিকনির্দেশনা দিতেন।’
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আহমদ আজম খান, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রয়াত নেতার ছেলে সাঈদ আল নোমান প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন।