ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চায় বিএনপি, সর্বদলীয় ঐকমত্য গঠনে তৎপরতা

বিএনপি চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আদায়ে সর্বদলীয় ঐকমত্য গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। এ লক্ষ্যে দলটি ডান, বাম, প্রগতিশীল ও ইসলামি ধারার দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। ইতোমধ্যে ১২ দলীয় জোট, এলডিপি এবং সিপিবি-বাসদসহ বাম দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছে তারা। ২০ এপ্রিল সিপিবি-বাসদের সঙ্গে চা-চক্রে মিলিত হন বিএনপির সিনিয়র নেতারা।
এই আলোচনা প্রক্রিয়ার পেছনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির বৈঠকের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে, যেখানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং আলোচনার বিষয়বস্তু, চিঠির বিবরণ এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি উঠে আসে। বিএনপি ডিসেম্বরকে নির্বাচন আয়োজনের ‘কাট-অফ টাইম’ হিসেবে চিহ্নিত করে দলগুলোর মধ্যে সম্মিলিত মত গঠনের উদ্যোগ নিচ্ছে।
এ বিষয়ে ১২ দলীয় জোটের একজন নেতার ভাষ্য— বিএনপি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের কাট অফ লাইন চায়। তারা এ বিষয়ে জনমত ও দলমত গঠন করতে চায়। এজন্য সব দলের সঙ্গে বসতে চায়। ডান, বাম, প্রগতিশীল, ইসলামি দল— সবার সঙ্গে আলোচনা করে সর্বদলীয় মত তৈরি করতে চায়।
আরেক নেতা বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে বিগত ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে, ২৪-এর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি, এমন দলগুলোর সঙ্গেও বৈঠকের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে।’
তবে কিছু ইসলামি দল যেমন জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন ও এনসিপি ডিসেম্বরের সময়সীমা মেনে নিতে চায় না। তারা আগে রাজনৈতিক সংস্কার ও বিচার দাবি করছে। যদিও এসব দলের ভেতরে ভিন্নমত ও কার্যকলাপের কারণে তাদের অবস্থান নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
বিএনপি নির্বাচনের বিষয়ে সরকারের ওপর চাপ না দিয়ে কূটনৈতিকভাবে ও সকল পক্ষের সম্মতির মাধ্যমে সমাধান চায়। দলের অভ্যন্তরীণ কিছু নেতার মতে, বেশি চাপ প্রয়োগ করলে সরকার আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফাঁদে পড়তে পারে, যার সুবিধা পেতে পারে জামায়াত। সেজন্য বিএনপি ধৈর্যের সঙ্গে এগিয়ে যেতে চায়।
গণতন্ত্রে উত্তরণের জন্য নির্বাচন অপরিহার্য উল্লেখ করে বিএনপির নেতারা বলেন, তারা সরকারকে বিরোধিতা নয় বরং জনআকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী কাজের আহ্বান জানাচ্ছে। সব রাজনৈতিক দলের মতামতের ভিত্তিতে একটি সম্মিলিত অবস্থান তৈরির পর সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাবনা দেওয়া হবে।
এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিএনপি রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তুলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আদায়ের জন্য সহানুভূতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়।