মাঠ প্রশাসন নিরপেক্ষ না হয়ে বিএনপির পক্ষ অবলম্বন করছে,এ পরিস্থিতিতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়: নাহিদ

মাঠ প্রশাসন নিরপেক্ষ আচরণ করছে না এবং বিএনপির পক্ষে কাজ করছে—এমন অভিযোগ তুলে আসন্ন নির্বাচনে এ ধরনের প্রশাসনের অধীনে অংশগ্রহণ সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
বুধবার বিকেলে ঢাকায় সফররত যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল চুলিকের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা জানান এনসিপির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম।
গুলশানে মার্কিন দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশনের বাসভবনে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন এবং সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম জানান, “আমরা সংস্কার কমিশনে যে মৌলিক সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছি, তা তুলে ধরেছি। আমাদের তিনটি প্রধান দাবি—সংস্কার, বিচার ও গণপরিষদ নির্বাচন—সেই কথাগুলোই বলেছি।”
তিনি বলেন, “আমরা শুধু ন্যূনতম পরিবর্তন চাই না, বরং রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার ও গুণগত পরিবর্তনের লক্ষ্যে কাজ করছি। মৌলিক পরিবর্তন ছাড়া কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। সেই নির্বাচনে এনসিপির অংশগ্রহণও অনিশ্চিত থাকবে।”
প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে নাহিদ ইসলাম বলেন, “মাঠ প্রশাসন নিরপেক্ষ না হয়ে বিএনপির পক্ষ অবলম্বন করছে। আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় প্রশাসন নিশ্চুপ। চাঁদাবাজির মতো অপরাধে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা লক্ষ্য করছি। এ পরিস্থিতিতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। নিরপেক্ষ প্রশাসন, আমলাতন্ত্র এবং পুলিশ নিশ্চিত করতেই হবে।”
তিনি আরও বলেন, “বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আসন্ন নির্বাচন, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা এবং এনসিপির আদর্শ ও সাংগঠনিক কাঠামো সম্পর্কে জানতে আগ্রহ দেখান। আমরা তাদের বিস্তারিত জানিয়েছি।”
নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বর থেকে জুন সময়সীমা বলেছেন, যা আমরা প্রাথমিকভাবে সমর্থন করি। তবে আগে বিচার ও সংস্কারের রোডম্যাপ বাস্তবায়ন করতে হবে। জুলাই সনদের কার্যকরতা ছাড়া নির্বাচনের সময় নিয়ে আলোচনা অর্থহীন।”
আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে নাহিদ বলেন, “না, সে বিষয়ে কোনো স্পষ্ট আলোচনা হয়নি। আমরা আমাদের দলীয় অবস্থান জানিয়েছি—বিচার ছাড়া আওয়ামী লীগের নির্বাচনে আসার সুযোগ নেই।”
এছাড়াও বৈঠকে ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ, অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা এবং ক্ষমতায় এলে এনসিপির করণীয় নিয়ে আলোচনা হয়। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতাও চাওয়া হয়েছে বলে জানান এনসিপি আহ্বায়ক।