হাসিনা ফেরাউন-নমরুদের মত আচরণ করেছিল: ঢাবিতে মামুনুল হক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে ছাত্রদলের অনুষ্ঠানে কথা বলেন মামুনুল হক।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলেমদের ওপর ব্যাপক নিপীড়ন চালিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের আমির মামুনুল হক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে মঙ্গলবার দুপুরে ছাত্রদলের এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে একথা বলেন তিনি।
হেফাজতের এই নেতা বলেন, “শেখ হাসিনার সবচেয়ে বড় নির্মম অত্যাচার হল বাংলাদেশের আলেম সমাজকে জাতির কাছে হেয়প্রতিপন্ন করবার চেষ্টা করেছেন। যতজন আলেমকে তারা ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়েছেন, যতজন আলেমকে নির্মম অত্যাচার করেছেন, প্রত্যেক আলেমের সঙ্গে এমন নির্দয় আচরণ করেছেন এবং তাদের চরিত্র হননের এমন জঘন্য আচরণ করেছেন…। ফেরাউন, কারুন, নমরুদ যে আচরণ করেছিল, শেখ হাসিনা সেই আচরণ করেছেন।
“আমি প্রমাণ দিয়ে দেখিয়ে দিতে পারব একজন নমরুদ, একজন ফেরাউন, একজন কারুন, আরেকজন মুনাফেক সর্দার আবদুল্লাহ ইবনে উবাই, এই চারটাকে এক পাত্রে গুলালে একটা শেখ হাসিনা তৈরি হয়। এজন্য শেখ হাসিনা ও তার প্রেত্মাতাদের বাংলাদেশের রাজনীতিতে আর কোনোদিন পুনর্বাসিত হতে দেওয়া যাবে না। যেকোনো মূল্যে রুখে দাঁড়াতে হবে আমাদেরকে।”
বিএনপি ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির ঐতিহাসিক ধারা বর্ণনা করে মামুনুল হক বলেন, “অনেকে বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে এক পাল্লায় পরিমাপ করে। আমি মনে করি, এটা অবিচার। বিএনপি ও আওয়ামী লীগ কেউই ইসলামী রাজনীতি করে না, বরং তাদের ভিন্ন রাজনৈতিক দর্শন রয়েছে। তবে এই দুইটি মধ্যে অনেক ব্যবধান রয়েছে।
“ঠিক যেমনিভাবে আবু জাহেল ও আবু তালেব…কেউ কিন্তু ইসলামের পথে অনুসারী ছিলেন না। কিন্তু কেউ যদি আবু জাহেল ও আবু তালেবকে এক পাল্লায় মাপে তার চেয়ে বড় জালেম আর কেউ হতে পারে না। আমি মনে করি, ইসলামী রাষ্ট্রের দৃষ্টিকোণ থেকে বিএনপি আবু তালেবের ভূমিকায় আর আওয়ামী লীগের আগাগোড়াই আবু জাহেলের ভূমিকা। কাজেই এই জন্য বিএনপিকে একথা মনে রাখতে হবে, তার নেতৃত্বকে এই কথা মনে রাখতে হবে।”
ছাত্রদলের অনুষ্ঠানে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে কাজ করার বার্তা দিয়েছেন মামুনুল হক। বলেন, “রাজনৈতিকভাবে আপনারা (ছাত্রদল) একটা আদর্শের রাজনীতি করেন, আমরা আরেকটা আদর্শের রাজনীতি করি। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটা কথা আমাদের মনে রাখতে হবে। সেটা হল, বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী শক্তি এবং ইসলামী শক্তি পরস্পর সহযোগিতার মাধ্যমেই বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে হবে।
“যদি জাতীয়তাবাদী শক্তি ও ইসলামী শক্তির মধ্যে বিভেদ তৈরি হয় বাংলাদেশ বিপন্ন হবে। বাংলাদেশবিরোধী ফ্যাসিবাদী শক্তি আবার শক্তিশালী হবে। যারা বাংলাদেশ থেকে ইসলামকে মুছে ফেলতে চায়, তারাই বাংলাদেশের স্বাধীনতার শত্রু, তারাই বাংলাদেশের স্বাধীনতার দুশমন।”
অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল বলেন, “দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে গোটা বাংলাদেশজুড়ে নতুনভাবে ছাত্রদল আবার পুনর্গঠিত হবে, সুসংগঠিত হবে এবং মেধাবীদের দিয়ে দেশে গঠনের জন্য যোগ্য নেতৃত্ব এখান থেকে বেরিয়ে আসবে সেই প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি।”
ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল ও শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম বকুল বক্তব্য দেন।