বুধবার ১২ মার্চ ২০২৫, ফাল্গুন ২৮ ১৪৩১, ১২ রমজান ১৪৪৬

রাজনীতি

দ্রুততম সময়ে মাগুরায় শিশু ধর্ষণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান রিজভী

 প্রকাশিত: ১৪:০৯, ১০ মার্চ ২০২৫

দ্রুততম সময়ে মাগুরায় শিশু ধর্ষণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান রিজভী

দ্রুততম সময়ের মধ্যে মাগুরায় শিশু ধর্ষণকারীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

সোমবার সকালে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের প্রতিবাদ শোভাযাত্রার আগে বিক্ষোভ সমাবেশে এই দাবি জানিয়েছেন রিজভী।

সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “বলতে চাই, যেটি মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস বলেছেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে শিশুটির ওপর জুলুমকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়। যে দৃষ্টান্ত দেখে অন্যান্য অপরাধীরা, অন্যান্য ধর্ষকরা, অন্যান্য দুস্যরা তাদের হৃদয়ে হৃদকম্পন তৈরি হয়।

“এটাই হচ্ছে আইনের শাসন, এটার জন্যই ১৫ বছর আমরা লড়াই করেছি। এর জন্য এত আত্মত্যাগ, এর জন্য আরেক দস্যু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে।”

রিজভীর ভাষ্য, সমাজে নারীরা ‘নিরাপদ নয়’।

“আজকে আপনার মেয়েকে স্কুলে পাঠিয়ে তার প্রত্যাবর্তন কিভাবে হবে, ক্ষত-বিক্ষত হয়ে বাসায় ফিরবে না স্বাভাবিকভাবে বাসায় ফিরবে তার কোনো নিরাপত্তা নাই।”

দেশের গণতন্ত্রমনা মানুষ, সব রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সংগঠনকে ধর্ষকদের বিরুদ্ধে এক হওয়ার করার আহ্বান জানিয়েছেন রিজভী।

তিনি জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মাগুরার শিশুটির সুবিচারের জন্য সমস্ত আইনি দায়িত্ব নিয়েছেন।

জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে শোভাযাত্রাটি কাকরাইলের নাইটেঙ্গল রেস্তোরাঁর মোড় হয়ে নয়া পল্টনে গিয়ে শেষ হয়।

নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের প্রতিবাদ শোভাযাত্রায় বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

‘প্রশাসনে কারা?’

রিজভী বলেন, “এখন তো অন্তবর্তীকালীন সরকার, স্বৈরাচার তো নাই। তাহলে কেন এসব ঘটনা ঘটছে? প্রশাসনে কারা? আমরা অনেক বারই বলেছি, কোনো দিনই সমাজে ধর্ষণ, খুন, জখম, দুর্নীতির প্রসার ঘটবে না যদি আপনার প্রশাসন ঠিক হয়। প্রশাসন ঠিক থাকতো তাহলে এটি হত না।

“অনেকে বঞ্চিত ছিলেন শেখ হাসিনার আমলে। অনেক প্রমোশন পেয়েছেন, ডাবল প্রমোশন হয়েছেন। তাহলে আপনাদের মধ্যে যে ক্ষোভ ছিল সেই ক্ষোভ থাকার কথা নয়। তাহলে তৃণমূলে প্রশাসনের কর্তৃত্ব প্রয়োগ হচ্ছে না কেন? এটা তো একটা বড় প্রশ্ন। এর দায় তো যাবে অন্তবর্তীকালীন সরকারের ওপরে।”

‘ধর্ষকদের ফাঁসি চাই’

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস বলেন, “আমরা প্রধান উপদেষ্টাসহ সরকারকে বলব, আপনারা এর বিচার করুন, আমরা এর বিচার চাই।

“এ যে সরকার বলছে যে, ১৮০ দিন বা তিন মাস বা ছয় মাস লাগবে তদন্ত শেষ করতে। যে তদন্তে আপনারা রিপোর্ট পেয়ে গেছেন যে, শিশুটির বোন যেখানে প্রমাণ, তার শাশুড়ি যেখানে প্রমাণ, কেন তাহলে আপনাদের দেরি করতে হবে? আমি তো মনে করি তিন দিনের মধ্যে এই ধর্ষকদের ফাঁসি কাষ্ঠে ঝুলানো উচিত? এদের শাস্তি যদি দ্রুত না দেন তাহলে আরো ধর্ষণ মামলাটি ঝুলে যাবে, আরও ঘটনা ঘটবে।”

আফরোজা আব্বাস বলেছেন, সারাদেশের জনগণের সামনে এই মাগুরার ধর্ষকদের ফাঁসি কার্য্কর করা হোক।

‘ছাত্রদের জায়গা শিক্ষাঙ্গনে’

রিজভী বলেন, ‘আমরা শুনি ডিসি অফিস, এসপি অফিস, মন্ত্রণালয়, বিভিন্ন জায়গায় নাকি ছাত্ররা গিয়ে যারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র তাদের প্রতি তো আমাদের কৃতজ্ঞতা রয়েছেই, তাদের অবদান তো আমরা ভুলি না, কিন্তু তারা যদি ডিসিকে নির্দেশ দেয়, তারা যদি এসপিকে নির্দেশ দেয় তারা যদি ডিসি-এসপির ঘরে বসে থাকে তাহলে আইন প্রয়োগ হবে কি করে?”

প্রশাসকরা অন্যায় করে থাকলে তার প্রতিবাদ ছাত্রদের ক্যাম্পাসে গিয়ে করতে হবে বলে মন্তব্য করেচেন রিজভী।

“আপনার (ছাত্র-ছাত্রী) জায়গায় ক্যাম্পাস। আপনার হাতে বই থাকবে শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও কিভাবে মজবুত করা যায়, আরও কিভাবে শিক্ষার মেরুদণ্ডকে মজবুত করা যায় সেটা করুন। আমি বৈষম্ বিরোধী ছাত্রদের অনুরোধ করবো আপনারা ক্যাম্পাসে অন্যায়ের প্রতিবাদ গড়ে তুলুন।”

তিনি বলেন, ‘‘ একটা কথা আছে, বন্যরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে। ছাত্রদের কাজ ক্যাম্পাস, ছাত্রদের কাজ ক্লাসরুমে, ছাত্রদের কাজ লাইব্রেরিতে।”

মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহীনুর নার্গিসের সঞ্চালনায় সমাবেশে মহিলা দলের সহ সভাপতি নেওয়া হালিমা আরলি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহানা আখতার শানু মহানগর উত্তরের সভানেত্রী রুমা আখতার, দক্ষিণের সদস্য সচিব লুনা লায়লাসহ আরো অনেকে বক্তব্য রাখেন।