শুক্রবার ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ফাল্গুন ৯ ১৪৩১, ২২ শা'বান ১৪৪৬

রাজনীতি

নতুন রাজনৈতিক দলের আহ্বায়ক হচ্ছেন নাহিদ 

 প্রকাশিত: ১৮:৩৮, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

নতুন রাজনৈতিক দলের আহ্বায়ক হচ্ছেন নাহিদ 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতৃত্বে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। এই দলটির নাম এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিক বিষয় চূড়ান্ত করার জন্য ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে জনমত জরিপ শুরু হয়েছে। জরিপে পাঁচটি প্রশ্ন রাখা হয়েছে, যার মধ্যে দেশ পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় কাজ, নতুন দলের কাছে প্রত্যাশা, দলের নাম এবং প্রতীক সম্পর্কিত প্রশ্ন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রায় দুই লাখ মানুষের মতামত সংগ্রহ করা হয়েছে এবং বেশিরভাগ মানুষ 'গণতন্ত্র', 'নাগরিক', 'জাস্টিস' ও 'বৈষম্যবিরোধী' শব্দগুলো দিয়ে দলের নামের পরামর্শ দিয়েছেন।

জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেন, "সাধারণ কি-ওয়ার্ডগুলোর মধ্যে বেশি এসেছে ‘গণতন্ত্র’, ‘নাগরিক’, ‘জাস্টিস’ ও ‘বৈষম্যবিরোধী’। অর্থাৎ বেশির ভাগ মানুষ চান নতুন দলের নামের মধ্যে এ ধরনের শব্দ থাকুক।"  তিনি বলেন, "মানুষের মতামতের ভিত্তিতে দলের নাম চূড়ান্ত করা হবে। আর এই ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে যেকোনো দিন দলের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের কথা ভাবা হচ্ছে।"

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করে দলটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন মো. নাহিদ ইসলাম। জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, "শীর্ষ পদে নাহিদ ইসলামকেই সবার পছন্দ। দ্বিতীয় শীর্ষ পদের জন্য আলোচনায় আছেন আখতার হোসেন, নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও সারজিস আলম।"  ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতারা এবং বামপন্থী নেতারা নিজেদের পছন্দের ব্যক্তিদের শীর্ষ পদে বসানোর চেষ্টা করছেন।

নতুন দলের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে আসতে পারে, ১৫ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে যেকোনো দিন এটি ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানান জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। অন্যদিকে সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ফেব্রুয়ারির শেষাংশে দলের ঘোষণা আসতে পারে।

বিএনপি তরুণদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে, তবে তারা সরকার বা প্রশাসনের সহায়তা নিয়ে দল গঠনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা জানিয়েছে, নতুন দলের নেতৃবৃন্দ যদি সরকারের সহযোগিতা নেন, তবে তা জনগণের হতাশা সৃষ্টি করবে।

এছাড়া, নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের পাশাপাশি একটি নতুন ছাত্রসংগঠন গঠনের পরিকল্পনাও রয়েছে। তবে এই ছাত্রসংগঠন 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন' নামে হবে না। এটি একটি নতুন নাম নিয়ে গঠিত হবে এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আলাদা প্ল্যাটফর্ম হিসেবে থাকবে। এই চিন্তা-ভাবনা এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ২০২৩ সালের ১ জুলাই সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছিল, যা পরে গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নেয়। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটানোর পর আন্দোলনকারীরা রাজনৈতিক সংগঠন গঠনের চিন্তা করেন। এর পর জাতীয় নাগরিক কমিটি গঠিত হয় এবং তারা নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের জন্য নেতৃত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে তারা দেশের প্রায় ৩০০ থানায় কমিটি গঠন করেছে এবং নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের কাজ এগিয়ে চলছে।