মঙ্গলবার ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, মাঘ ২৯ ১৪৩১, ১২ শা'বান ১৪৪৬

ব্রেকিং

সাড়ে ১৬ হাজার ‘গায়েবি মামলা’ প্রত্যাহার হচ্ছে: আসিফ নজরুল আশুলিয়ায় স্বামী-স্ত্রীসহ ৩ পোশাক শ্রমিকের লাশ উদ্ধার জুলাই অভ্যুত্থানের নৃশংসতা নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদন বুধবার কোনো অপরাধীকে ‘বাইরে’ দেখতে চান না স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ডিসেম্বরকে টার্গেট করে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি ইতিহাসের সেরা নির্বাচন হবে এবার: ইউএনডিপি বইমেলার স্টলে হট্টগোলের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা, দোষীদের বিচারের আওতায় আনার নির্দেশ গণহত্যার আসামির জামিনে বিচারকদের ‘সতর্ক’ থাকতে বললেন আইন উপদেষ্টা দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশ ১৪তম ‘সাগর-রুনি হত্যায় যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তারা মুখ খুলেছেন’ সাগর-রুনি হত্যার ১৩ বছর: তদন্ত নিয়ে এখনও ধোঁয়াশায় পরিবার জুনের মধ্যে বাংলাদেশি পাসপোর্ট পাচ্ছেন সৌদিতে থাকা ৬৯ হাজার রোহিঙ্গা ‘আরাকান আর্মির হাতে’ ৪ বাংলাদেশি জেলে অপহৃত জিম্মি মুক্তি না দিলে গাজায় যুদ্ধবিরতি বাতিল হওয়া উচিত: ট্রাম্প ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি স্থগিত করেছে হামাস

রাজনীতি

শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় চার বিএনপি নেতার মুক্তি

 প্রকাশিত: ১৯:১৯, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় চার বিএনপি নেতার মুক্তি

আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে পাবনার ঈশ্বরদীতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় ফাঁসির দণ্ড থেকে খালাস পাওয়া চার বিএনপি নেতা রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। তাঁরা হলেন ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র মোখলেছুর রহমান (বাবলু), সাবেক সভাপতি এ কে এম আখতারুজ্জামান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম, এবং সাবেক দপ্তর সম্পাদক আজিজুর রহমান (শাহীন)। তারা পাঁচ বছর সাত মাস ফাঁসির সেলে বন্দী ছিলেন।

৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের রায়ে এই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত ৪৭ জন বিএনপি নেতা-কর্মীকে খালাস দেওয়া হয়। মুক্তি পাওয়ার পর ঈশ্বরদী বিএনপির নেতা-কর্মীরা রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের ফটকে উপস্থিত হয়ে ফুলের মালা পরিয়ে তাদের বরণ করেন। গাড়িগুলোতে কারামুক্ত নেতাদের ছবিযুক্ত ব্যানার ছিল।

মুক্তি পাওয়া এ কে এম আখতারুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, "বর্তমান সরকারের কাছে আমার দাবি, অতি স্বল্প সময়ের মধ্যে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন, যার মাধ্যমে দেশের মানুষ যেন জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারেন। যাতে দেশে একটি নির্বাচিত সরকার কায়েম হয়।"

তিনি কারাগারের দুরবস্থার কথাও তুলে ধরেন, বিশেষ করে ফাঁসির সেলে তাদের কাটানো সময়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে। তিনি বলেন, "এই রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের মধ্যে যাঁরা বন্দী রয়েছেন, বিশেষ করে আমরা যাঁরা ফাঁসির সেলে পাঁচ বছর সাত মাস ধরে বসবাস করে আসলাম, এত জঘন্য পরিবেশ এই কারাগারে দেখলাম। এই কারাগারের পরিবেশটা ভালো করা উচিত। এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমাদের দাবি, এই কারাগারে মধ্যে যে অচলাবস্থা, যে অব্যবস্থা তার দূর করতে হবে।"

মুক্তি পাওয়ার পর পৌর বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক ও ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবের সভাপতি আজিজুর রহমান বলেন, ‘‘হাসিনা নিজের ক্ষমতা বলে মিথ্যা ঘটনায় আমাকে পাঁচ বছর আট মাস জেল খাটালেন। অত্যন্ত অমানবিক ও বর্বরোচিত কাজ এটা। জেলের ভেতরে আমরা খুব কষ্টে ছিলাম। এদিকে বাইরে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য সব কেড়ে নিয়েছে।’’

মুক্তি পাওয়া চারজনকে অভ্যর্থনা জানাতে এসেছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও পাবনা জেলা বিএনপির নেতা হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে এই রকম জঘন্য রায় আর হয়নি। কোনো ধরনের ঘটনা ছাড়াই, কেউ আহত হয়নি, কেউ নিহত হয়নি, সেই মামলায় ফাঁসি দেওয়া হলো, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হলো।

পাবনা জেলা বিএনপির নেতা হাবিবুর রহমান মুক্তি পাওয়া নেতাদের অভ্যর্থনা জানাতে আসেন এবং তিনি এই রায়কে ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্য রায় বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, "কোনো ঘটনা ছাড়াই, কেউ আহত হয়নি, কেউ নিহত হয়নি, তারপরও ফাঁসি ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।"

১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর, শেখ হাসিনা তখন বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে খুলনা থেকে সৈয়দপুরে দলীয় কর্মসূচিতে যাচ্ছিলেন। ঈশ্বরদী স্টেশনে ট্রেনটি ঢোকার সময় দুর্বৃত্তরা শেখ হাসিনার কামরায় গুলি চালায়। এরপর ঈশ্বরদী রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। সিআইডি অধিকতর তদন্ত করে ৫২ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয়। পরে বিচারিক আদালত ২০১৯ সালে ৯ জনকে ফাঁসির আদেশ দেয় এবং ২৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।

ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষে ৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট এই মামলায় সকল আসামিকে খালাস দেয়।