বিমানবন্দরের পথে খালেদা জিয়া, নেতাকর্মীদের ঢল
উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যেতে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাত ৮টা ১৫ মিনিটে তিনি নিজের গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’ থেকে বের হন।
তাকে বহনকারী গাড়ি ফিরোজা থেকে বের হতেই নেতা-কর্মীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। তারা স্লোগান দিতে থাকেন খালেদা জিয়ার নামে।
কাতারের আমিরের পাঠানো রাজকীয় ‘এয়ার অ্যাম্বুলেন্স’-এ উন্নত চিকিৎসার জন্য রাত ১০টায় ঢাকা ত্যাগ করবেন খালেদা জিয়া। তিনি প্রথমে কাতারের রাজধানীর দোহা বিমানবন্দরে যাবেন। সেখান থেকে যাবেন লন্ডনে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, ‘লন্ডন ক্লিনিক’-এ খালেদা জিয়াকে ভর্তি করা হবে। এয়ারপোর্ট থেকে সরাসরি হাসপাতালে যাবেন তিনি। চিকিৎসকরা সেখানে খালেদা জিয়ার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন। তাদের (চিকিৎসক) পরামর্শে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ’
বিদেশযাত্রার আগে খালেদা জিয়াকে শুভেচ্ছা জানাতে ‘ফিরোজা’র সামনে ভিড় করেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। তখন বাড়িটির সামনের রাস্তাটিয় গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। তৎপর দেখা যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের।
দীর্ঘদিন পর বিএনপি চেয়ারপারসনকে এক নজর দেখতে এবং তাকে শুভেচ্ছা জানাতে পথে পথে অবস্থান নেন দলের নেতা-কর্মীরা। এসময় তারা খালেদা জিয়া, বিএনপি, তারেক রহমানের নামে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
খালেদা জিয়াকে বহনকারী গাড়িটি গুলশান-২ এর গোলচত্বর হয়ে কাকলী দিয়ে বিমানবন্দরে পৌঁছাবে।
দলীয় প্রধানকে বিদায়ী শুভেচ্ছা জানাতে এসে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল বলেন, বিগত সরকারের সময় আমরা বারবার আবেদন করেছিলাম। সরকার প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি, চিকিৎসার ব্যবস্থাও করেনি। দেশের ১৬ কোটি মানুষ দোয়া করে, আমাদের নেত্রী যেন সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আসেন, এটা আমাদের সবার প্রত্যাশা।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, দেশের মানুষের প্রত্যাশা চিকিৎসা শেষে মা ও ছেলে একসঙ্গে দেশে আসবেন।
মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ বলেন, খালেদা জিয়া এ দেশের মানুষের আবেগের জায়গা। আমাদের নেতা তারেক রহমান মাকে নিয়েই দেশে ফিরবেন, এটা আমাদের আশা।
কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বু্লেন্স হলো দ্রুতগামী এয়ারবাস। এতে রয়েছে অত্যাধুনিক সব চিকিৎসা সুবিধা। ফ্রান্সের এয়ারবাস কোম্পানির তৈরি এই অত্যাধুনিক উড়োজাহাজ জরুরি পরিস্থিতিতে রোগীদের জন্য সর্বোত্তম চিকিৎসাসেবা দিতে সক্ষম।
এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে কাতারের চারজন চিকিৎসক এবং প্যারামেডিক থাকবেন। ঢাকা থেকে খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের ছয় সদস্য এই উড়োজাহাজে যাবেন। তারা হলেন শাহাবুদ্দিন তালুকদার, এফ এম সিদ্দিক, নূরুদ্দিন আহমেদ, জাফর ইকবাল, এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও মোহাম্মদ আল মামুন।
এছাড়া খালেদা জিয়ার সঙ্গে যাচ্ছেন তার প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান। দলীয় নেতাদের মধ্যে আছেন তার উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ড. মোহাম্মদ এনামুল হক চৌধুরী, দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল, খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তারসহ ব্যক্তিগত কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত সহকারী মো. মাসুদুর রহমান, প্রটোকল অফিসার এসএম পারভেজ এবং গৃহকর্মী ফাতিমা বেগম ও রূপা শিকদারও হয়েছেন সফরসঙ্গী।
খালেদা জিয়া ২০১৭ সালের জুলাই মাসের পর প্রথমবারের মতো বিদেশ সফর করছেন।