‘করণীয় ঠিক করতে’ শরিকদের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক শুরু
সফল গণআন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারকে হটানোর পর রাষ্ট্র সংস্কার ও আগামী জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় ঘোষণা নিয়ে আলোচনার মধ্যে যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দল ও জোটগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে বিএনপি।
তারই অংশ হিসেবে প্রথম দিন শনিবার বিকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও বাংলাদেশ লেবার পার্টির সঙ্গে বৈঠক হয়েছে দলটির।
বিএনপির তরফে বলা হয়েছে, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অবস্থা পর্যালোচনা করে ‘পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে’ ধারাবাহিকভাবে শরিকদের সঙ্গে বৈঠক করবে দলটি। এরপর সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
বিকাল ৪টায় ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের পর নজরুল ইসলাম খান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক অবস্থা, অর্থনৈতিক অবস্থা, জনগণের নানা সমস্যা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আমরা জোটের মতবিনিময় করেছি।”
তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে থাকা রাজনৈতিক জোট ও দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠকের পর ‘কোনো সিদ্ধান্ত হলে তা সংবাদমাধ্যমকে পরে জানানো হবে’।
বৃহস্পতিবার বিএনপি বলেছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনের যে সম্ভাব্য সময়সূচি প্রধান উপদেষ্টা ঘোষণা করেছেন, তা ‘স্পষ্ট’ হয়নি।
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বিষয়টি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে বলেছেন, নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা এবং তার প্রেস সচিবের দেওয়া বক্তব্য ‘সাংঘর্ষিক’।
বিজয় দিবসের সকালে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ভোট কবে হবে তা নির্ভর করবে রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে কতটা সংস্কার করে নির্বাচনে যাওয়া হবে, তার ওপর।
সংস্কারে জাতীয় ঐকমত্য ও ভোটার তালিকা হালনাগাদ সাপেক্ষে মোটা দাগে ২০২৫ সালের শেষ দিক থেকে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ধারণা দেন তিনি।
পরদিন ১৭ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। তবে কম সংস্কার হলে তা ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে হতে পারে।
প্রধান উপদেষ্টা ও প্রেস সচিবের বক্তব্যের বিষয়ে বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানোর পর বিএনপি যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের সঙ্গে বৈঠক শুরু করল।
শনিবার বৈঠকে উপস্থিত থাকা ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “আজকের বৈঠকে দেশের বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে আগামী দিনের আমাদের কর্মসূচি কি হওয়া উচিত তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে কথা-বার্তা বলেছি। কিন্তু কেনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।”
১২ দলীয় জোটের সঙ্গে বৈঠকের পর জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও লেবার পার্টির সঙ্গে আলাদা বৈঠক করে বিএনপি।
বৈঠকে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের নেতৃত্ব দেন জোটের সমন্বয়ক ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ফরিদুজ্জামান ফরহাদ। লেবার পার্টির নেতৃত্বে ছিলেন দলটির চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান ইরান।