সিলেটে আওয়ামী লীগ নেতা মিসবাহ সিরাজের ওপর হামলার অভিযোগ
আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের ওপর হামলা চালিয়ে দুর্বৃত্তরা তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সিলেট নগরীর সুবিদবাজার এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটার কথা শুনেছেন বলে জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
শনিবার সকালে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শুনেছি অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের ওপর হামলা হয়েছে। তবে কী কারণে হামলা, কারা করেছে সেটি বোঝা যায়নি।
“আল হারামাইন হাসপাতালে উনি চিকিৎসা নিয়েছেন সেটি নিশ্চিত হওয়া গেছে। ওনার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়া দুর্বৃত্তরা তাকে অপহরণের পর মুক্তিপণ নিয়ে ছাড়ার বিষয়টি জানতে পেরেছি। বিষয়টি আমরা খোঁজ নিচ্ছি।”
এর আগে শুক্রবার রাতে সিলেট কোতোয়ালি থানার ওসি জিয়াউল হক বলেছিলেন, “এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। বিয়ষটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মিসবাহ সিরাজ তিনবার দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তিনি জেলা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর (পিপি) দায়িত্বও পালন করেছেন দীর্ঘদিন। তিনি সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্যও ছিলেন।
সিলেট আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে নগরীর সুবিদবাজার এলাকায় একটি বাসায় যাচ্ছিলেন মিসবাহ সিরাজ।
সুবিদবাজারের ফাজিলচিশতে পৌঁছামাত্র কয়েকটি মোটরসাইকেলে কয়েকজন যুবক মিসবাহ উদ্দিনের অটোরিকশার গতিরোধ করে অস্ত্রের মুখে অন্য একটি অটোরিকশায় তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়।
এরপর মিসবাহ সিরাজের ব্যক্তিগত মোবাইল থেকে তার পরিবারের লোকজনের কাছে কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করে দুর্বৃত্তরা। এক পর্যায়ে অপহরণকারীদের মুক্তিপণ দেওয়া হলে রাত সাড়ে ৩টায় তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় নগরীর সাগরদিঘীরপাড় এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারের পর ভোর ৪টায় তাকে নগরের সোবহানীঘাটস্থ আল হারামাইন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতেই চিকিৎসকরা তার শরীরে অস্ত্রোপচার করেন। পরে শুক্রবার সকালের দিকে একটি হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে নিয়ে নিরাপদে সরে যান তার পরিবার।
আল হারামাইন হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. চৌধুরী নাহিয়ান সাংবাদিকদের বলেন, “গত রাতে ৪টার দিকে মিসবাহ উদ্দিন সিরাজকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার স্বজনরা। পরবর্তী সময়ে তার পায়ে অস্ত্রোপচার করা হয়। যদিও স্বজনরা হাসপাতালে বলেছেন তিনি দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন।”
তিনি আরও বলেন, “মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের বাম পায়ে হাটুর নিচে রক্তাক্ত জখম রয়েছে। অস্ত্রোপচারের পর শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। পরে তাকে নিয়ে চলে যান তার স্বজনরা।”
এ বিষয়ে জানতে মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ ও তার স্ত্রীর মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের মেয়ে মুনতাহা আহমদ মিসবাহ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, “আমার বাবার অবস্থা গুরুতর। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সবার কাছে আমার বাবার সুস্থতার জন্য দোয়া চাই।”