কিশোরদের গেছোবাড়ির গল্প এবার বইয়ের পাতায়
লোকালয় থেকে বেশ দূরে জঙ্গলের ধারে একটা বাড়ি। আশপাশের গ্রামের লোকজন এই বাড়িটা নাম দিয়েছে গেছোবাড়ি। এই বাড়ির ছেলে রিন্টু। মা-বাবা আর দাদিকে নিয়ে সে গেছোবাড়িতে থাকে।
এ বাড়ির মানুষগুলো বড় অদ্ভুত। গাছপালা, পশুপাখি সবকিছুর উপরে এদের প্রচণ্ড ভালোবাসা। বাবা তো সারাদিন জঙ্গলের গাছপালার সাথে গল্প করে, ওদের যত্ন করে। দাদি বিভিন্ন দুষ্প্রাপ্য গাছ সংগ্রহ করে ওষুধ তৈরি করে। রিন্টুর মা মদিনা শক্ত হাতে সংসারের হাল ধরে রাখে, আর সবাইকে বকাবকি করে সংসারটি ঠিক রাখে।
রিন্টু, বাড়ির আশপাশের গাছপালার নিচে ঘুরে ঘুরে কোন অসুস্থ পাখির বাচ্চা পড়ে আছে কিনা দেখে। বাড়ির ছোটখাটো কাজ যেমন আগ্রহ নিয়ে করে, তেমনি পাখির অসুস্থ বাচ্চা বাড়িতে এনে সবার সাহায্য নিয়ে চিকিৎসা করে সুস্থ করে তুলতেও তার ভালো লাগে।
ওদিকে রিন্টুকে তার স্কুলের বন্ধুরা একটু ভয় পায়। জঙ্গলের ধারে বাড়ির ছেলেকে তারা মানুষের বাচ্চা ভাবতে পারে না। তাদের ধারণা কোনো সুস্থ মানুষ ওই জঙ্গলের ধারে বাস করতে পারে না। তাই রিন্টুর বাড়িতে তারা কখনো বেড়াতে আসে না। তারপরও রিন্টুর অদ্ভুত উপায়ে তিনজন বন্ধু হয়।
মিম-জিম নামের দুই জমজ ভাইবোন, আর জুব্বার নামের অদ্ভুত এক ছেলে। যারা ওদের বাড়িতে আসে। কুড়িয়ে পাওয়া পাখির ছানার সেবায় তারাও অংশ নেয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে পাখির ছানা সুস্থ হয়ে উড়ে যায়। কিন্তু এবার লালচে রঙের ঘুঘু পাখির ছানাটা উড়তে শিখেও ওদের সাথে থেকে যায়। জমে ওঠে ওদের বন্ধুত্ব।
আচ্ছা গেছো বাড়ির মানুষ, তাদের বন্ধু এবং আজব মায়াবী এই লালচে রঙের ঘুঘু পাখি কি সবসময় একসঙ্গেই থাকে? নাকি তাদের মধ্যেও দূরত্ব তৈরি হয়?
এমন প্রশ্নের উত্তর নিয়েই মায়াবী এক গল্প লেখা হয়েছে ‘গেছোবাড়ির বাসিন্দারা’ নামে কিশোর উপন্যাসে। শিশু-কিশোরদের পাশাপাশি বড়দেরও এমন গল্প নিয়ে যাবে স্মৃতি ঘেরা রঙিন শৈশবে। যেখানে সোনার ফ্রেমে বাঁধা আছে আমাদের টুকরো টুকরো দামি মুহূর্তেগুলো।
এখনকার শহুরে গেজেট প্রিয় শিশু-কিশোরদের চোখের সামনে ‘গেছোবাড়ির বাসিন্দারা’ খুলে দেবে মায়াবী পৃথিবীর দুয়ার। যেখানে গিয়ে সবাই জুড়াতে চাইবে।
উপন্যাসটি লিখেছেন কামরুন্নাহার দিপা। তার বইটি প্রকাশিত হয়েছে কাকাতুয়া প্রকাশনী থেকে। প্রচ্ছদ করেছেন সেলিম হোসেন রাজু। কিশোরদের জন্য দিপার আরও দুইটি উপন্যাস হলো ‘মানতাসার জঙ্গলে’ ও ‘পিক্কিন’।