খাবারের পরে ৫ মিনিট হাঁটার ৫টি উপকারিতা

হাঁটা হলো সেরা নিম্ন-তীব্রতার ওয়ার্কআউট, যা সব বয়সের মানুষের জন্য নিরাপদ। বিশেষ করে রাতের খাবারের পরে এটি উপকারী, যখন শরীর কম সক্রিয় থাকে। স্পোর্টস মেডিসিন-এ প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, মাত্র ২ মিনিট হাঁটাচলা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ, হজম উন্নতকরণ ও রক্তচাপ হ্রাসে সহায়ক। এই স্বল্প-প্রভাব অনুশীলন ওজন হ্রাস ও মেজাজ উন্নত করতে পারে। সময়ের চেয়ে ধারাবাহিকতা গুরুত্বপূর্ণ, তাই খাবারের পরপরই ২-৫ মিনিট হাঁটার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত।
১. রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে
হাঁটা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। খাবারের পরে ৫-১০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস শরীরের গ্লুকোজ শোষণ প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায়, ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল থাকে। এতে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
খাবারের পর বসে থাকলে গ্লুকোজ দ্রুত রক্তে জমে যায়, যা ইনসুলিন প্রতিরোধের ঝুঁকি বাড়ায়। তবে হালকা হাঁটাচলা করলে শরীরের পেশিগুলো সক্রিয় হয় এবং রক্তপ্রবাহ বাড়িয়ে গ্লুকোজ দ্রুত ব্যবহার করে। ফলে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রিত থাকে। সুস্থতা বজায় রাখতে প্রতিদিন খাবারের পর সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য হাঁটার অভ্যাস করা গুরুত্বপূর্ণ।
২. হজম উন্নত করে
হাঁটা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং খাবার দ্রুত পরিপাক হতে সাহায্য করে। খাবারের পরে ৫-১০ মিনিট হাঁটলে গ্যাস, অ্যাসিডিটি ও অম্বল কমে। এটি অন্ত্রের গতিশীলতা বাড়ায়, ফলে হজম সহজ হয়। দীর্ঘক্ষণ বসে থাকলে হজম ধীরগতিতে হয়, তাই সুস্থ হজমের জন্য খাবারের পর নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি।
৩. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
হাঁটা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে খাবারের পরে ৫-১০ মিনিট হাঁটলে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক থাকে এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমে। নিয়মিত হাঁটার ফলে হৃদযন্ত্র শক্তিশালী হয়, রক্তনালী প্রসারিত হয় এবং রক্তচাপ স্থিতিশীল থাকে। এটি স্ট্রেস কমিয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। সুস্থ হৃদযন্ত্রের জন্য প্রতিদিন হাঁটার অভ্যাস করা জরুরি।
৪. ওজন কমাতে সহায়ক
হাঁটা ওজন কমাতে ভূমিকা অপরিসীম। খাবারের পরে ৫-১০ মিনিট হাঁটলে বিপাকক্রিয়া সক্রিয় হয় এবং ক্যালোরি দ্রুত পোড়ে, যা অতিরিক্ত চর্বি জমা প্রতিরোধ করে ও ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করে এবং ফ্যাট কমাতে সহায়ক।
হাঁটার ফলে পেশিগুলো সক্রিয় হয়, যা শক্তি ব্যয় বাড়িয়ে ফ্যাট কমাতে সহায়ক। দীর্ঘক্ষণ বসে থাকলে শরীরে চর্বি জমার সম্ভাবনা বাড়ে, যা ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। নিয়মিত হাঁটা ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করে, হজম উন্নত করে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। তাই ওজন কমানোর জন্য প্রতিদিনের রুটিনে হাঁটার অভ্যাস গড়ে তোলা গুরুত্বপূর্ণ।
৫. স্ট্রেস কমায়
হাঁটা স্ট্রেস কমাতে সহায়ক। বিশেষ করে খাবারের পরে হাঁটলে শরীরে এন্ডোরফিন নামক সুখী হরমোনের উৎপাদন বেড়ে যায়, যা মনকে শান্ত রাখে। এটি স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত করে এবং উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত হাঁটা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী, এবং এটি মনের চাপ কমাতে সহায়ক। স্ট্রেস মুক্ত থাকতে হাঁটার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত।