শনিবার ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, পৌষ ৭ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

তালাক পতিত করার অধিকার না পেলেও তালাক দিলে কি তা হবে?

 প্রকাশিত: ০৬:১২, ১১ জুন ২০২০

তালাক পতিত করার অধিকার না পেলেও তালাক দিলে কি তা হবে?

প্রশ্ন
প্রশ্নটা আপনাদের সাইটে নেই। দয়া করে সাহায্য করবেন।
 
আসসালামু আ’লাইকুম।
 
মুফতি সাহেব আশা করি ভালো আছেন। আমি আল্লাহ রব্বুল আ’লামীন এর একজন গুনাহগার বান্দা। আপনার পরামর্শ আমার দরকার মুফতি সাহেব। আশা করি সাহায্য করবেন।
 
নাম: আহমেদ শাব্বির আলম।
বয়স: ৩০ বছর।
বাংলাদেশী। সুন্নী মুসলিম। চাকুরিজীবী।
 
আমি ২০১১ ইং সালে একটি মেয়েকে পছন্দ করে কাজী অফিসে বিয়ে করি। তার সাথে আমার সম্পর্কের কথা দুই পরিবারই জানতো। বিয়ের সময় আমার পরিবার আমাদের বিয়ের কথা জানত। ওর পরিবারও জানত বলে আমি সন্দেহ করি, যদিও তারা স্বীকার করে না।
 
আমি আমার স্ত্রীকে ২০১২ সালের ২১শে জানুয়ারি তারিখে আমার বাসায় নিয়ে আসি। তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করি। তারা আমাকে তাদের মেয়ের স্বামী হিসাবে মেনে নেয়, যদিও সপ্তাহ দুয়েক তারা তাদের মেয়ের সাথে যোগাযোগ বন্ধ রাখে।
 
আমার স্ত্রী, সেপ্টেম্বর ২০১৩ ইং সালে আমার সাথে ঝগড়া করে তার বাবার বাসায় চলে যায়। আমি তাকে কয়েকবার চলে আসতে বললে সে বলে, ২/৩ দিন পর আসব। কিন্তু সে আসে না।
 
এখানে উল্লেখ্য যে বিয়ের কাবিনের ১৮ নং ধারা সম্পর্কে কাজী সাহেব বিয়ের সময় আমাকে কিছু বলেন নি। আমি কাবিন নামা হাতে পাওয়ার পর দেখি যে ১৮ নং ধারায় বলা হয়েছে আমি আমার স্ত্রীকে তালাকের অনুমতি দিয়েছি। কিন্তু এ ব্যাপারে বিয়ের সময় কাজী সাহেব আমাকে কিছুই বলেন নি। আমি সেসময় ১৮ নং ধারা সম্পর্কে কিছু জানতাম কিনা, তাও এখন মনে করতে পারছি না।
 
২৪শে ডিসেম্বর ২০১৩ ইং সালে আমার স্ত্রী আমাকে কাজী অফিস থেকে তালাক দেয়। তালাক-ই-তফউইজ। আমি জানি না এটা কি। আমি ২৯শে ডিসেম্বর, ২০১৩ ইং তারিখে “মহিলা তালাকের নোটিশ’ হাতে পাই। যেটা ১৯৬১ ইং সনের বাংলাদেশ মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী করা। নোটিশ পাওয়ার পর আমি কাজী অফিসে ফোন করলে কাজী সাহেব বলেন, ৯০ দিনের মধ্যে স্বামী-স্ত্রী উভয়ে গেলে তালাক বাতিল করে দিবেন।
 
আমি আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে একথা বললে সে আমাকে আমার বাবা-মা সহ ওর বাসায় যেতে বলে। কিন্তু আমি যাইনি। কারণ, ওয়ালিমার দিন কিছু সমস্যা হওয়ায় দুই পরিবারের মাঝে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। আর আমার মনে হয়েছে আমি এমন কোন দোষ করিনি যার জন্য তালাক দেয়া যেতে পারে।
 
পরের ৩ মাস আমি আল্লাহ রব্বুল আ’লামীন এর দরবারে আমার স্ত্রীকে ফিরে পাওয়ার জন্য দোয়া করি, কান্নাকাটি করি, নফল ইবাদৎ করি। কারণ আমি আমার স্ত্রীকে অনেক ভালোবাসি। আমি এর মাঝেও ওকে চলে আসতে বলি, কিন্তু সে নিজের কথায় অটল থাকে। তারপর সে ১১ই মার্চ ২০১৪ ইং থেকে আমার সাথে আবার যোগাযোগ শুরু করে। সে বলে আমি আমার বাবা-মা সহ ওর বাসায় গেলেই ও চলে আসবে। সে আমাকে এটাও বলে আমরা যেন ওর বাসায় ওকে আনতে যাই, তাই ও আমাকে তালাক করছে। অন্য কোন কারণে নয়। সেও আমাকে ভালোবাসে।
 
কিন্তু পারিবারিক সমস্যার কারণে আমি তা করতে পারিনি। আমি ব্যক্তিগতভাবে ওর সাথে দেখা করি। ও বলে ওর বাবা-মার সাথে কথা বলতে। কিন্তু আমি বলি আমি তো কোন দোষ করিনি। আমাকে কেন কথা বলতে হবে? এখানে আমি কিছুটা জিদ দেখাই। যদিও আমি নিশ্চিত ওর সাথে রাগ করা ছাড়া আমার আর কোন দোষ ছিল না। তারপরও আমি ওর বাবাকে ফোন করি, কিন্তু উনি রিসিভ করেননি।
 
৯০ তম দিনে সে আমাকে ফোন করে বলে, “শাব্বির আমি তালাক বাতিল করলাম।” তবে সেটা সে মুখে বলে, লিখিতভাবে নয়।
 
আমি আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেবের কাছে জিজ্ঞেস করলে উনি বলেন, “যেহেতু তোমার স্ত্রী লিখিতভাবে তোমাকে তালাক দিয়েছে তাই ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী সেই তালাক প্রথম দিনেই হয়ে গেছে। সেখানে আর ৯০ দিন অপেক্ষা করার দরকার নাই।”
 
এটা শুনে আমি আমার স্ত্রীকে ফোন করি। সে বলে, “না। কখনোই না। কাজী অফিস থেকে কাজী সাহেব আমাকে বলছেন এই তালাক ৯০ দিনের মধ্যে বাতিল করা যাবে। আমি এটা জেনে তোমাকে তালাক দিছি। নাহলে দিতাম না। আমার তোমাকে ছেড়ে যাওয়ার কোন ইচ্ছা নাই। প্লিজ কিছু কর। আমি তোমাকে ভালোবাসি ও তোমার সাথে থাকতে চাই।”
 
এখন মুফতি সাহেব দয়া করে বলবেন কি আমরা এখন কি করতে পারি? আমরা দুজন দুজনকে ভালোবাসি ও একসাথে থাকতে চাই। কিন্তু আমরা আল্লাহকে ভয় করি ও হারাম থেকে বাঁচতে চাই।
 
যেহেতু আমার স্ত্রী তালাকের নিয়ম জানত না এবং কাজী অফিস থেকেও ওকে ভুল তথ্য দেয়া হইছে এবং যেহেতু তার আমাকে তালাক দেয়ার নিয়্যত ছিল না, এখন কি এটা ঠিক করার কোন উপায় আছে? উপরন্তু আমি নিজেও ১৮ নং ধারা সম্পর্কে জানতাম না। (বিয়ের আগে জানতাম কিনা মনে পড়ছে না, সত্যিটা বললাম।)
 
মুফতি সাহেব দয়া করে আপনার সুচিন্তিত ফতোয়া দিয়ে আমাকে সাহায্য করবেন।
 
যাজাকাল্লাহু খাইরান।
 
আল্লাহ হাফেজ।
 
আহমেদ শাব্বির আলম।
 
উত্তর
 وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
 
আসলে দেশের মানুষের মৌলিক সমস্যা হল ধর্ম সম্পর্কে অজ্ঞতা। যেকোন জরুরী বিষয় চাই সেটি দ্বীনী বিষয় হোক বা দুনিয়াবী বিষয় হোক এক্ষেত্রে একজন প্রাজ্ঞ আলেম থেকে পরামর্শ নিয়ে করা উচিত। তাহলে এসব সমস্যার সৃষ্টি হয় না।
বিয়ের সময় যদি একজন আলেমের সাথে পরামর্শ করে নিতেন কিভাবে কাবিন নামায় সাইন করা হবে। তাহলে অনেক ভাল হতো।
যেহেতু আইয়ুব খানের প্রবর্তিত নামধারী মুসলিম পারিবারিক আইনে অনৈসলামিক পদ্ধতিতে তালাক দেয়ার আইন করা হয়েছে। তাই এক্ষেত্রে প্রতিটি মুসলিমেরই বিয়ের সময় প্রাজ্ঞ মুফতীর শরনাপন্ন হয়ে মাসআলাগুলো সম্পর্কে পরিস্কার ধারণা রাখা উচিত।
 
আপনার সাথে সাথে আপনার মত আরো অনেকের উপকার হতে পারে বলে কিছুটা অপ্রাসঙ্গিক হলেও বিয়ে-কাবিন নামা এবং তালাক সম্পর্কে কয়েকটি জরুরী বিষয় নিচে উদ্ধৃত করা হল।
 
কাবিন নামায় সাইন করার সময় অবশ্যই ১৮ ও ১৯ নং ধারাটি পড়ে নেয়া উচিত। সেই সাথে তাতে লিখবে-
নমুনা স্বরূপ-
যদি স্বামী কর্তৃক স্ত্রীর উপর শারিরীক বা মানসিক নির্যাতন করা হয়, বা স্বামী নিরুদ্দেশ হয়ে যায়, কিংবা স্ত্রীর ভরণপোষণ না দেয়, এবং এ বিষয়টি স্বামী পক্ষের তিনজন মুরুব্বী এবং স্ত্রী পক্ষের তিনজন মুরুব্বী সত্যায়ন করে, তাহলে স্ত্রী নিজের উপর এক তালাক পতিত করার অধিকার পাবে”।
 
এরকমভাবে লিখে স্ত্রীকে এক তালাকের অধিকার প্রদান করবে। তিন তালাক কখনোই নয়। কারণ তিন তালাক প্রদান ইসলামী পদ্ধতি নয়। এবং একসাথে তিন তালাক প্রদানকে রাসূল সাঃ বিদআত বলে অভিহিত করেছেন। তবে এটি নাজায়েজ হলেও তিন তালাক দিলে তিন তালাক পতিত হয়ে যায়। যেমন কাউকে হত্যা করা নাজায়েজ হলেও হত্যা করলে হত্যা হয়ে যায়।
এ কারণে তালাক স্বামী দেয়ার সময়ও এক তালাকের উর্দ্ধে দেয়া যেমন উচিত নয়, তেমনি স্ত্রীকে অধিকার দেয়ার সময়ও এক তালাকের অধিকার দেয়া উচিত নয়। আর একের অধিক তালাক দেয়ার যেমন কোন প্রয়োজন নেই, তেমনি স্ত্রীকে অধিকার দেয়ার কোন প্রয়োজন নেই। কারণ এক তালাকের মাধ্যমেওতো স্বামী থেকে স্ত্রী পৃথক হয়ে যায়। তাহলে সেখানে অযথা দু ইবা তিন তালাক কেন দেয়া হবে? যেখানে এক আঘাতে কোন কিছু ধ্বংস করা যায়, সেখানে যেমন একাধিক আঘাত করা অযথা ও অপ্রয়োজনীয় কাজ তেমনি যেখানে এক তালাকের মাধ্যইে পৃথক হয়ে যাচ্ছে, সেখানে দুই বা তিন তালাক দেয়াও অযথা ও অপ্রয়োজনীয় কাজ। তাই এ ব্যাপারে স্বামী স্ত্রী উভয়েরই সতর্ক থাকা উচিত।
 
প্রশ্নটির জবাব
 
যদি আপনার বক্তব্য সত্য হয়, তাহলে বিধান হল, স্বামীর সম্পূর্ণ অজ্ঞাতসারে কাজী স্ত্রীকে তালাকের অধিকার দিয়েছে বলে লেখে দেয়, আর স্বামী একথা না জেনে বিবাহ হয়েছে মর্মে সাইন করে তাহলে স্বামী স্ত্রীকে তালাকের অধিকার দিয়েছে বলে ধর্তব্য হবে না। এতে করে কাজী স্বামীর সাথে ধোঁকাবাজী করেছে বলে ধর্তব্য হবে। কাজীর তালাকের অধিকার দেয়ার মাধ্যমে স্ত্রী তালাকের অধিকার পায় না। স্বামীর অধিকার দেয়ার মাধ্যমে স্ত্রী তালাক দেয়ার অধিকার পায়।
সুতরাং যদি সত্যিই আপনার সম্পূর্ণ অজ্ঞাতসারে কাজী তালাকের তাফয়ীজ লিখে থাকে, তাহলে মূলত স্ত্রীকে তালাক দেয়ার অধিকারই দেয়া হয়নি। যেহেতু স্ত্রী নিজের উপর তালাক পতিত করার অধিকারই পায়নি, তাই তার নিজের উপর তালাক পতিত করাও সহীহ হয়নি। এ কারণে আপনাদের বিবাহ বন্ধন ভেঙ্গে যায়নি। এখনো অটুট আছে। তাই ভাবনার কিছু নেই।
كُلُّ كِتَابٍ لَمْ يَكْتُبْهُ بِخَطِّهِ وَلَمْ يُمِلَّهُ بِنَفْسِهِ لَا يَقَعُ بِهِ الطَّلَاقُ إذَا لَمْ يُقِرَّ أَنَّهُ كِتَابُهُ كَذَا فِي الْمُحِيطِ (الفتاوى الهندية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى الطلاق بالكتابة-1/379، المحيط البرهانى، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى ايقاع الطلاق بالكتاب-4/486، تاتارخانية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى ايقاع الطلاق بالكتاب-3/380)
হ্যাঁ, তবে যদি স্বামীর দস্তখত করার সময় জানা থাকে যে, কাজী স্ত্রীকে তালাক দেয়ার অধিকার দিয়েছে মর্মে উপরে লিখে দিয়েছে, একথা জানার পরও যদি স্বামী উক্ত কাগজের নিচে সাইন করে, তাহলে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাক দেয়ার অধিকার দেয়া হয়েছে বলে সাব্যস্ত হবে। সেই হিসেবে স্ত্রী যদি পরবর্তীতে নিজের উপর তালাক পতিত করে থাকে, তাহলে তালাক পতিত হয়ে যায়।
সুতরাং আপনি যদি কাজী তালাকের অধিকার দিয়েছে জানার পর দস্তখত করে থাকেন, তাহলে আপনি স্ত্রীকে তালাক দেয়ার অধিকার দিয়েছেন বলে ধর্তব্য হবে। সেই হিসেবে স্ত্রীর নিজের উপর তালাক পতিত করাটিও সহীহ হয়েছে।
এখন আপনার জানা ও নাজানার উপর নির্ভরশীল তালাক পতিত হয়েছে কি না?
সেই সাথে উক্ত কাবিন নামায় কত তালাকের অধিকার দেয়া হয়েছে সেটিও বিবেচ্য বিষয়। যদি তিন তালাকের অধিকার দেয়া হয়ে থাকে, তাহলে স্ত্রী যদি তালাকনামায় তিন তালাকই স্বামী দিয়ে থাকে, তাহলে তিন তালাকই পতিত হয়ে গেছে। আর আপনাদের দুইজনের একসাথে থাকার কোন সুযোগ নেই। আর তিন তালাকের কম পতিত করে থাকে, তাহলে নতুন করে বিয়ে করে নিলেই চলবে। আর যদি স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে কাবিননামার মাধ্যমে তিন তালাকের কম তালাক দেয়ার অধিকার দেয়া হয়ে থাকে, তাহলে যত তালাকের অধিকার দেয়া হয়েছে শুধু ততটি তালাকই নিজের উপর পতিত করতে পারে স্ত্রী।
তাই কাবিন নামায় কী উল্লেখ আছে?আর স্ত্রী কর্তৃক তালাকনামায় কী উল্লেখ আছে? এ উভয় বিষয় পরিস্কার হওয়া ছাড়া বিষয়টি আসলে পরিস্কার জবাব দেয়া সম্ভব নয়।
এ কারণে উসূলী জবাব দেয়া হল। অর্থাৎ স্বামীর সম্পূর্ণ অজ্ঞাতসারে তালাক নামায় কাযি তালাকের অধিকার দিলে স্ত্রী নিজের উপর তালাক পতিত করলে তালাক হয়নি। আর যদি স্বামী জ্ঞাতসারে তালাকের অধিকার দেয়া হয়, তাহলে যত তালাকের অধিকার দেয়া হয়েছে। স্ত্রী শুধু ততটুকু তালাকই নিজের উপর পতিত করতে পারে। এক্ষেত্রে তিন তালাক অধিকার দেয়া হলে, আর স্ত্রী তিন তালাকই পতিত করলে স্বামী স্ত্রীর বন্ধন শেষ হয়ে গেছে। আর একসাথে থাকার সুযোগ নেই। আর যদি তিন তালাকের কম অধিকার দেয়া হয়ে থাকে, তাহলে স্ত্রী তালাক পতিত করলেও স্বামী এখন স্ত্রীকে নতুন করে মোহর ধার্য করে বিয়ে করে নিলেই হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে যত তালাক পতিত হল, কেবল বাকিটারই কেবল সুযোগ থাকবে। তথা যদি দুই তালাক হয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে বাকি থাকবে আর এক তালাকের অধিকার।
رَجُلٌ اسْتَكْتَبَ مِنْ رَجُلٍ آخَرَ إلَى امْرَأَتِهِ كِتَابًا بِطَلَاقِهَا وَقَرَأَهُ عَلَى الزَّوْجِ فَأَخَذَهُ وَطَوَاهُ وَخَتَمَ وَكَتَبَ فِي عُنْوَانِهِ وَبَعَثَ بِهِ إلَى امْرَأَتِهِ فَأَتَاهَا الْكِتَابُ وَأَقَرَّ الزَّوْجُ أَنَّهُ كِتَابُهُ فَإِنَّ الطَّلَاقَ يَقَعُ عَلَيْهَا(الفتاوى الهندية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى الطلاق بالكتابة-1/379، رد المحتار، كتاب الطلاق، مطلب فى الطلاق بالكتابة-4/456، المحيط البرهانى، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى ايقاع الطلاق بالكتاب-4/486، تاتارخانية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى ايقاع الطلاق بالكتاب-3/380)
فى الفتاوى الهندية-إذاكانالطلاقبائنادونالثلاثفلهأنيتزوجهافيالعدة وبعدانقضائهاوإنكانالطلاقثلاثافيالحرةوثنتينفيالأمةلمتحللهحتىتنكحزوجاغيرهنكاحاصحيحا (الفتاوى الهندية-1/472-473)
 
বিবাহ একটি পবিত্রতম সম্পর্ক। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের এক বড় নেয়ামত। সামান্য রাগের বশে এভাবে এ সুন্দর সম্পর্ককে নষ্ট করা কিছুতেই উচিত নয়। স্ত্রীর উপর যেমন স্বামীর হক আছে, তেমনি স্বামীর উপরও স্ত্রীর হক আছে। যে মেয়েটি নিজের পরিবার পরিজন, মা-বাবা সবাইকে ছেড়ে দিয়ে একজন পুরুষের কাছে নিজের সব কিছুকে বিলীন করে দিল, তার সাথে দুব্যবহার করা কিছুতেই উচিত নয়। আর স্ত্রীরও স্বামীর হকের প্রতি খেয়াল রাখা উচিত। কারণ স্বামীর অসন্তুষ্টি নিয়ে যে স্ত্রী ইন্তেকাল করে তার প্রতি আল্লাহর রাগ আপতিত হয় মর্মে হাদীসে হুশিয়ারী উচ্চারিত হয়েছে।
 
কোন মানুষের সব কিছুই ভাল লাগবে এমন নয়। এ কারণেই রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَا يَفْرَكْ مُؤْمِنٌ مُؤْمِنَةً، إِنْ كَرِهَ مِنْهَا خُلُقًا رَضِيَ مِنْهَا آخَرَ
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, কোন মুমিন পুরুষ যেন কোন মুমিন নারীকে শত্রু মনে না করে। কেননা, যদি সে তার এক কাজকে নাপছন্দ করে, তার অপর কাজকে পছন্দ করবে। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৪৬৯, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৩৬৩}
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” إِنَّ مِنْ أَكْمَلِ الْمُؤْمِنِينَ إِيمَانًا، أَحْسَنَهُمْ خُلُقًا، وَأَلْطَفَهُمْ بِأَهْلِهِ
হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, মুমিনদের মধ্যে সেই ব্যক্তি অধিকতর পূর্ণ মুমিন, যে ব্যক্তি সদাচারী এবং নিজ পরিবারের জন্য কোমল এবং অনুগ্রহশীল। {সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-২৬১২, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২৪২০৪}
 
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
ইমেইল- [email protected]
[email protected]

 

অনলাইন নিউজ পোর্টাল