পর্দা : দু’টি মৌলিক কথা
সমস্ত নবী-রাসূল আ.সহ বিশ্বের জ্ঞানী, মেধাবী, আত্মমর্যাদার অধিকারী প্রত্যেক ব্যক্তি এ বিষয়ে একমত যে, ব্যাভিচার একটি নিকৃষ্টতম অপরাধ। যা আত্মমর্যাদা ও সম্মানের জন্য বড় লজ্জাস্কর। নিন্দনীয় চরিত্র এবং জঘন্য কাজের উৎস। একথা স্বীকৃত যে, মহিলাদের দেখলে পুরুষের অন্তরে কু-প্রবৃত্তি ও মন্দচিন্তার সৃষ্টি হয়। অনুরূপভাবে পুরুষকে দেখার দ্বারা মহিলাদের অন্তরেও বাজে চিন্তার রোগ সৃষ্টি হয়। এই কারণে প্রজ্ঞাবান ও আত্মমর্যাদার দাবিদারদের দাবী এই পন্থা বন্ধ হয়ে যাক। এ কারণেই পবিত্র শরীয়ত যিনা থেকে আত্মরক্ষার জন্য পর্দার বিধান দিয়েছে।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ পাক এ বিষয়ে বলেন-
১.
وَقَرْنَ فِيْ بُيُوْتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُ وْلٰى
তোমরা নিজের ঘরে অবস্থান করো এবং মূর্খতার যুগের ন্যায় সাজগোজ করে বাহিরে বের হয়ো না। (সূরা আহযাব : ৩৩)
২. আর যদি ঘরে বসে বসে গাইরে মাহরামের সাথে কথা বলার প্রয়োজন হয়, তখন বিধান হলো-
فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِيْ فِيْ قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَّعْرُوْفًا
যদি তোমাদের কোন গাইরে মাহরামের সাথে কথা বলার প্রয়োজন হয়, তখন নরম সুরে কথা বলো না। অন্যথায় যার অন্তরে কুপ্রবৃত্তির ব্যধি আছে সে তোমার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়বে। তবে সঠিক কথা বলো। (সূরা আহযাব : ৩২)
৩. আর শরীয়ত পুরুষদেরকে নির্দেশ দিচ্ছে-
وَإِذَا سَأَلْتُمُوْهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوْهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذٰلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوْبِكُمْ وَقُلُوْبِهِنَّ
যখন তোমারা মহিলাদের কাছে কোন কিছু চাও তখন পর্দার আড়াল থেকে চাও। এই বিধানটি তোমাদের ও তাদের অন্তরের জন্য সর্বোত্তম পবিত্রতা। (সূরা আহযাব : ৫৩)
৪. পুরুষকে এই আদেশও করা হয়েছে যে, সে যেনো কোনো গায়রে মাহরাম মহিলার প্রতি দৃষ্টি উঠিয়ে না দেখে।
قُلْ لِّلْمُؤْمِنِيْنَ يَغُضُّوْا مِنْ أَبْصَارِهِمْ
(হে মুহাম্মাদ!) আপনি মু’মিন পুরুষদেরকে বলে দিন, তারা যেনো তাদের দৃষ্টিকে নত করে রাখে। (সূরা নুর : ৩০)
৫. শরীয়ত মহিলাদের জন্য আযান, একামত এবং ইমামতিকে নিষিদ্ধ করেছে।
৬. যেসব নামাযে কেরাত উচ্চস্বরে পড়া হয় তাতে মহিলাদেরকে উচ্চস্বরে কুরআন পড়তে নিষেধ করা হয়েছে।
- মহিলাদেরকে হজ্জের সময় জোরে তালবিয়াহ পড়তে নিষেধ করা হয়েছে।
- যুবতী মেয়েদের জন্য গায়রে মাহরাম পুরুষকে সালাম করাও না জায়েজ।
- অপরিচিত মহিলার আলোচনা থেকে মজা নেয়ার উদ্দেশ্যে শোনা নিষেধ
করা হয়েছে।
- অপরিচিত মহিলার ছবি দেখে মজা নেয়াকে হারাম করা হয়েছে।
- অপরিচিত মহিলার খাবারের অবশিষ্টাংশ খাওয়া মাকরূহ।
- অপরিচিত ব্যক্তির সাথে মুসাফাহা এবং হাত মেলানোকে নিষেধ করা হয়েছে। যেমন কিছু মূর্খ পীর মহিলাদের হাতে হাত রেখে বাইয়াত করে- এটা নাজায়েজ। মহিলাদের বাইয়াত করানো হবে مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ তথা পর্দার আড়াল থেকে অথবা হাত ধরা ব্যতীত শুধু মৌখিকভাবে।
বুদ্ধিমান ও আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন ব্যক্তি মাত্রই উপলব্ধি করতে পারেন যে, ইজ্জত-সম্মান ও মান-মর্যাদা রক্ষার চেয়ে বড় আর কিছু হতে পারে না। যা শরীয়ত নির্ধারণ করেছে।
উপমহাদেশের মুসলিম মহিলাদের লজ্জা-শরম ও গৌরব-মর্যাদার অবস্থা প্রবাদতুল্য ছিল। এই নতুন সভ্যতার ফেরীওয়ালারা তাদের বক্তৃতার দ্বারা এর উপর পানি ছিঁটিয়ে দিয়েছেন।
إِنَّا لِلّٰهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُوْنَ
হাদীসে নববী
হাদীসের কিতাবে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি দীর্ঘ খুতবায় উল্লেখ আছে, তিনি বলেন-
اَلنّسَاءُ حَبَائلُ الشَّيْطَانِ
মহিলারা শয়তানের জাল।
যার মাধ্যমে সে লোকদের শিকার করে। জালের মধ্যে পেঁচিয়ে তার কু-প্রবৃত্তির পূজারীদের তামাশা দেখাতে থাকে।
কোন বস্তুকে হেফাজত করা সে বস্তুর মূল্যবান হওয়ার প্রমাণ। তেমনি নারীকে হেফাজত নারীর মর্যাদার প্রমাণ। আর এ মর্যাদাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আল্লাহ তা’আলা পর্দাকে ফরয করেছেন।
অনলাইন নিউজ পোর্টাল