বুধবার ১৬ এপ্রিল ২০২৫, বৈশাখ ৩ ১৪৩২, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল ৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা

 প্রকাশিত: ২৩:০৬, ১২ এপ্রিল ২০২৫

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল ৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের ১১টি দানবাক্সে এবার মিলেছে রেকর্ডসংখ্যক ৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা, যা মসজিদটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ দানের অঙ্ক। শনিবার দিনভর গণনা শেষে এ তথ্য জানিয়েছেন মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ফৌজিয়া খান।

এর গত বছরের ৩০ নভেম্বর মসজিদের ১০টি দানবাক্স থেকে সর্বোচ্চ ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। এবার মাত্র ৪ মাস ১১ দিনের ব্যবধানে দানবাক্স খুলে পাওয়া গেল আরও বেশি অঙ্কের অর্থ।

ডিসি ফৌজিয়া খান জানান, “শনিবার ১১টি দানবাক্স থেকে প্রাপ্ত ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা ইতোমধ্যে ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়েছে।” সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীর উপস্থিতিতে বাক্সগুলো খোলার পর বের হয় ২৮ বস্তা টাকা।

এবারের গণনায় অংশ নেন সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষ। মোট ৪৯৪ জনের বিশাল টিম দানকৃত অর্থের হিসাব রাখার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। এর মধ্যে ছিলেন মাদ্রাসা ও জামিয়ার ২৮৬ জন ছাত্র, রূপালী ব্যাংকের ৮০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৭৫ সদস্য, এবং মসজিদ পরিচালনা কমিটির ৩৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। পুরো প্রক্রিয়া তদারকি করেন ১৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। গণনা শেষ হয় সন্ধ্যা ৬টার দিকে।

নগদ অর্থ ছাড়াও এবার দানবাক্সে বিভিন্ন দেশের বৈদেশিক মুদ্রা ও সোনা-রুপার গয়না মিলেছে। তবে এসব পরবর্তীতে গণনা করা হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে প্রাপ্ত অর্থ থেকে মসজিদ পরিচালনা, মাদ্রাসা, এতিমখানা ও গোরস্থানের ব্যয় নির্বাহ করা হয়। সেই সঙ্গে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও দুস্থ জনগোষ্ঠীর সহায়তায়ও এ অর্থ ব্যয় করা হয়।

প্রায় চার একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত এই তিন গম্বুজবিশিষ্ট সুউচ্চ মিনারের মসজিদ কিশোরগঞ্জের অন্যতম ঐতিহাসিক ধর্মীয় স্থাপনা। নরসুন্দা নদীর তীরে হারুয়া এলাকায় অবস্থিত পাগলা মসজিদটি প্রায় পাঁচশত বছর আগের, যা ঈশা খাঁর সময়কার দেওয়ান জিল কদর পাগলার নামানুসারে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে প্রচলিত আছে।