শনিবার ১৫ মার্চ ২০২৫, চৈত্র ১ ১৪৩১, ১৫ রমজান ১৪৪৬

ব্রেকিং

বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নীতি: ১০% খেলাপি ঋণ থাকলে লভ্যাংশ নিষিদ্ধ ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতা ও গণহত্যার কৌশল প্রয়োগ করছে ইসরায়েল: জাতিসংঘ প্রতিবেদন মার্কিন ইহুদিদের বিক্ষোভ: ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিলের মুক্তির দাবি প্রশাসনের ঢিলেমিতে অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছে—রিজভী পরমাণু ইস্যুতে বেইজিংয়ে চীন, ইরান ও রাশিয়ার বৈঠক শুরু এলজিইডি প্রকৌশলীর গাড়ি থেকে নগদ ৩৭ লাখ টাকা জব্দ সংস্কার: ৩০ দলই ঐক্যমত্য কমিশনে মতামত দেয়নি তথ্যানুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন: ১৫ জুলাই হামলা ছিল পরিকল্পিত, ঢাবির ১২২ জন শনাক্ত ২৮ মার্চ শি’র সঙ্গে বৈঠকে বসবেন ইউনূস: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি আদায়ের নামে রাস্তা অবরোধ করলে কঠোর ব্যবস্থা: আইজিপি বাংলাদেশ সম্পর্কে ভারতের সাম্প্রতিক মন্তব্যকে ঢাকা অযৌক্তিক বলল ৩ মাসে কোটি টাকার ব্যাংক হিসাব বেড়েছে প্রায় ৫ হাজার চিকিৎসক নিয়োগে আসছে বিশেষ বিসিএস বাংলাদেশ ব্যাংক তিনটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়েছে ফল আমদানিতে উৎসে কর কমল

ইসলাম

রমাদানের দিন রাত...

 আপডেট: ০৩:৩২, ১৫ মার্চ ২০২৫

রমাদানের দিন রাত...

প্রথম স্তর 

ব্যস্ততা থেকে নিজেদের ফারেগ করা যাদের জন্য সম্ভব নয় তাদের জন্য! প্রতিজ্ঞা করি অন্তত এ কথাগুলো পালন করবো

  • প্রথম রমাদান থেকেই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ‌ মসজিদে জামাতের সাথে তাকবীরে উলা সহকারে আদায় করব। রমাদানের একটি দিনেও কোন একটি ওয়াক্তের তাকবীরে উলা যেন ফউত না হতে পারে! বিশেষভাবে মাগরিবের তাকবীরে উলা ধরার জন্য সম্ভব হলে মসজিদে ইফতারি করব। অন্যথায় একটি খেজুর ও পানি দিয়ে ইফতার করে জামাতে শরিক হয়ে তারপর বাসায় এসে বাকি ইফতার করব।

  • প্রতিদিন কমপক্ষে এক পারা কুরআন তিলাওয়াত করব। সম্ভব হলে এক বসায়। নতুবা প্রতি ওয়াক্ত নামাজের পর কমপক্ষে পাঁচ পৃষ্ঠা তিলাওয়াত সমাপ্ত না করে জায়নামাজ থেকে উঠবো না। প্রতি ওয়াক্ত নামাজের সাথে যদি পাঁচ পৃষ্ঠা তিলাওয়াত যুক্ত করে নেয়া যায় তাহলে খুব সহজেই রমাদানে একটি খতম হয়ে যাবে। 

  • মসজিদের খতমে তারাবিতে শরীক হয়ে ২০ রাকাত তারাবীহ পরিপূর্ণ পড়বো।

  • রাতে সাহরি খেতে উঠে খাবার প্রস্তুত হতে হতে অন্তত দুই রাকাত তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করব।

  • রমাদানে যতটুকু সম্ভব দান সদাকাহ করব। রোজাদারদের ইফতার করানোর মহৎ কাজে অবশ্যই শরীক থাকবো।

  • রোজা অবস্থায় কারো সাথে ঝগড়া করবো না কিংবা কারো সাথে দুর্ব্যবহার করব না, কারো ওপর রাগ করবো না। রোজার সম্মানে ঘরে ও বাইরে সবার সাথে নরম ও মিষ্টি ব্যবহার করবো।

  • রোজা অবস্থায় পরিচিত অপরিচিত কারো কোন দোষ নিয়ে আলোচনা করব না।

  • রমাদানে সকল ধরনের গুনাহ, পাপ কাজ, নিষিদ্ধ কাজ ও আল্লার নাফরমানি থেকে সম্পূর্ণরূপের বিরত থাকার আপ্রাণ চেষ্টা করবো।

  • পূর্ণ রমাদানে যতটুক সম্ভব ফেসবুক/ইউটিউব ও অ্যান্ড্রয়েড ফোন থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন রাখবো। মোবাইল এর মাধ্যমে যেন কোন গুনাহ সংগঠিত না হয় সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখবো।

  • কোন পর নারীর সাথে অপ্রয়োজনীয় আলাপচারিতায় লিপ্ত হব না বা কোন পর নারীর প্রতি দৃষ্টিপাত করবো না।

  • গান বাজনা শ্রবণ থেকে এবং কোন নারীর ভিডিও দেখা থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকবো।

  • সম্ভব হলে রমাদানের শেষ দশকে কোন আলেম ও বুজুর্গের সোহবতে থেকে তাঁর মসজিদে তাঁর সঙ্গে ইতিকাফ করব। নতুবা অন্তত নিজ এলাকার মসজিদে ইতিকাফ করব। 

দ্বিতীয় স্তর

উপরোক্ত বিষয়গুলোর ইহতিমামের পাশাপাশি নিম্নক্ত বিষয়গুলো গুরুত্ব সহকারে পালন করা

  • ব্যক্তিগত তিলাওয়াতের মাধ্যমে রমাদানের প্রত্যেক দশকে একটি করে খতম করা। 

  • সাহরির শেষ সময়ের অন্তত এক ঘন্টা পূর্বে ঘুম থেকে ওঠা। 

ওজু ইস্তিঞ্জা ১০ মিনিট, 

অন্তত চার রাকাত তাহাজ্জুদের নামাজ ধীরেসুস্থে ১০ মিনিট, 

কিছু সময় আল্লাহ আল্লাহ যিকির ও অন্যান্য যিকির ৫ মিনিট,

দু’আ ও মুনাজাত ৫ মিনিট, 

তিলাওয়াত ৫ মিনিট। 

  • আর বাকী থাকে ২৫ মিনিট। এ সময়ে সাহরি খাওয়া। সাহরী খাওয়া সুন্নত ও ইবাদত। তাই খাওয়ার চাহিদা না থাকলেও অন্তত একটা খেজুর ও পানি খেয়ে নেয়া। 

  • অবশ্যই শেষ দশকে ইতিকাফ করা।

  • সামর্থ থাকলে রমাদানে ওমরাহ করা।

  • বাদ ফজর ইশরাক পর্যন্ত অজীফাহ, তিন তসবীহ ও তিলাওয়াতে মগ্ন থাকা। ইশরাক না পড়ে না ঘুমানো। 

তিন তসবিহ- ইস্তিগফার ১০০ বার, 

سبحان الله والحمد لله ولآ إلٰه إلا الله والله أكبر 

সুবহানাল্লাহি ওয়ালহামদুলিল্লাহি ওয়া লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার ১০০ বার, দুরুদ শরীফ-সাল্লাল্লাহু আলান নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি বা অন্য কোন দুরুদ ১০০ বার।

  • পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের পরের অযীফা, সকাল সন্ধ্যার অযীফাহ এবং ঘুমের পূর্বের অযীফাহ যেন তরক না হয়।

  • ইশরাক পড়ে কিছু সময় বিশ্রাম নিয়ে ঘুম থেকে উঠে চাশতের নিয়তে দুই/চার রাকাত নামাজ পড়া।

  • বাদ মাগরিব সুন্নতের পর চার/ছয় রাকাত আওয়াবিনের নামাজ পড়া। 

  • সকল প্রকারের সময় নষ্টকারী কাজ এবং অনর্থক কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখা। 

  • পুরো রমাদানটা আল্লাহর জন্য কুরবান করে দেয়া। উপরোক্ত আমলগুলোর পাশাপাশি পূর্ণ রমাদানটা নিজেকে ফারেগ করে কোন আল্লাহওয়ালার সোহবতে কাটানো বা রমাদানে (ওলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত দাওয়াতে তাবলীগের জামায়াতের সাথে) চিল্লায় চলে যাওয়া। 

রমাদান তাদের জন্য যারা রমাদান আসার পূর্বেই রমাদানের প্রস্তুতি গ্রহণ করে। নতুবা দেখা যাবে রমাদান আসতে আসতেই শেষ হয়ে গেছে। রমাদানের আগে যেমন ছিলাম এখনো তেমনি আছি। যদি তাই হয় তাহলে আরো ভয়ের সংবাদ হল রাসূলের অভিশাপ। যে রমাদান পেলো, কিন্তু গুনাহ মাফ করাতে পারল না, সে ধ্বংস হোক! নবীজি বললেন আমিন। তাই আসুন আমরা রমাদানকে সাজানোর একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করি।

এবারের রমাদানটা একটু ব্যতিক্রম করতে পারি না আমরা! রমাদান শেষে যেন বলতে পারি, 

  • এবার রমাদানে আমার এক ওয়াক্ত নামাজের তাকবীরে উলাও ফউত হয়নি।

  • এবার রমাদানে আমি কোন গুনাহ করিনি।

  • এবার রমাদানে আমি কারো গীবত করিনি। 

  • এবার রমাদানে আমি কারো সাথে দুর্ব্যবহার করিনি।

  • এবার রমাদানে আমি ২/৩/৫/১০ খতম কুরআন তিলাওয়াত করেছি।

  • এবার রমাদানে আমার এক দিনও তাহাজ্জুদ মিস হয়নি আলহামদুলিল্লাহ। 

এমন একটি রমাদান যদি কাটাতে পারি তাহলে আমাদের বাকি জীবন সুন্দর হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ!

যে আল্লাহকে পেলো সে সবই পেল।