সোমবার ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, মাঘ ২০ ১৪৩১, ০৪ শা'বান ১৪৪৬

ব্রেকিং

খালেদা জিয়াকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর চিঠি রিটার্ন দাখিল না করা টিআইএনধারীরা নোটিস পাবেন: এনবিআর চেয়ারম্যান শিক্ষা উপদেষ্টার বক্তব্য ‘প্রত্যাখান’, মহাসড়ক থেকে সরে কলেজের সামনে তিতুমীর শিক্ষার্থীরা ফের লোকসানে বেক্সিমকো; উৎপাদন না থাকায় ‘কাঁচামাল বিক্রি’ সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি, আত্মহত্যার হুমকি দিলেন আহতরা ১৯ টাকা বাড়লো ১২ কেজি এলপিজি গ্যাসের দাম সাত কলেজ নিয়ে আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ চলছে: উপদেষ্টা রোজায় ভোগ্যপণ্য নিয়ে সমস্যা হবে না, আশ্বাস বাণিজ্য উপদেষ্টার ক্যাডেট কলেজে ভর্তির লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ মাজার জিয়ারতে যাওয়ার পথে এক পরিবারের চারজনের মৃত্যু তিতুমীরে আমরণ অনশনরত ৩ শিক্ষার্থীর অবস্থা আশঙ্কাজনক ভোটার হালনাগাদ: নিবন্ধনকেন্দ্রে নিরাপত্তা দিতে আইজিপিকে ইসির নির্দেশ আখেরি মোনাজাতে শান্তি ও কল্যাণ কামনা আখেরি মোনাজাতে ৪০ লাখ মুসল্লির অংশগ্রহণ নারীরাও আখেরি মোনাজাতে শরিক হলেন

ইসলাম

আখেরি মোনাজাতে শান্তি ও কল্যাণ কামনা

 আপডেট: ১২:৫৪, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আখেরি মোনাজাতে শান্তি ও কল্যাণ কামনা

গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরে আখেরি মোনাজাতে অংশগ্রহণ করলেন লাখো মানুষ, যার মধ্য দিয়ে শেষ হলো বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের প্রথম ধাপ। মোনাজাতে বিশ্বের মুসলিমদের মধ্যে ঐক্য, শান্তি, কল্যাণ কামনা করা হয়।

রোববার শুরায়ে নেজাম (জুবায়ের) অনুসারীদের ইজতেমার আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা জুবায়ের আহমেদ। সকাল ৯টা ১১ মিনিটে শুরু হয় এই মোনাজাত, যা চলে ৯টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত।

মোনাজাতে বিশ্বের মুসলমানদের হেদায়েত, ঐক্য, শান্তি, সমৃদ্ধি, ইহকাল ও পরকালের নাজাত এবং দ্বীনের দাওয়াত সর্বত্র পৌঁছে দেওয়ার জন্য দোয়া করা হয়। তাছাড়া সব ধরনের গুনাহ থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়। মোনাজাত শেষে ‘আমিন আমিন’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে টঙ্গীর তুরাগ তীর ও ইজতেমা ময়দানের আশপাশ।

এর আগে বাদ ফজর ভারতের মাওলানা আব্দুর রহমান হেদায়তি বয়ান শুরু করেন; তা বাংলায় তরজমা করেন মাওলানা আব্দুল মতিন। যারা বিশ্ব ইজতেমা ময়দান থেকে জামাত গঠন করে দ্বীনের কাজে বের হবেন, তারা কী আমল করবেন এবং যারা মহল্লায় ফিরে যাবেন, তারা কী আমল করবেন তার দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেওয়া হয় এই বয়ানে।

হেদায়তি বয়ানের পর ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা নসিহতমূলক বয়ান করেন, বয়ানটি তরজমা করেন মাওলানা জুবায়ের আহমেদ।

মোনাজাতে অংশ নিতে রোববার ফজরের নামাজের পর থেকেই ইজতেমা ময়দানের দিকে রওনা দেন আশপাশ এলাকার মানুষ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মহাসড়কে তাদের স্রোত বাড়তে থাকে। ভোরের আলো ফোটার আগেই হাজার হাজার মানুষ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে নেমে আসেন।

ভোগড়া বাইপাস থেকে ইজতেমা মাঠ পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটেই অতিক্রম করেন অসংখ্য মানুষ। কারণ বিপুল জনসমাগমের কারণে যানবাহনের চলাচল সীমিত হয়ে পড়ে। মোনাজাতের আগেই ইজতেমা ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।

একপর্যায়ে ময়দানের আশপাশের অলিগলি, সড়ক, বাসাবাড়ি, কলকারখানার ছাদে, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক, টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকার ফ্লাইওভারের উপরে, টঙ্গী-ঘোড়াশাল ও কামারপাড়া সড়কে অবস্থান নিয়ে মোনাজাতে অংশ নেন অসংখ্য মানুষ। তুরাগ নদে নৌকায় বসে এবং আশেপাশে যানবাহনের ছাদে বসেও মোনাজাতে অংশ নিতে দেখা যায় অনেককে।

বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা শত শত নারী ইজতেমা ময়দানের আশপাশ, কলকারখানা ও বাসাবাড়ির ছাদসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন। ভারত, পাকিস্তান, সৌদি আরব, কাতার, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ইন্দোনেশিয়া, চীনসহ বিভিন্ন দেশের তাবলিগ জামাতের ৩ হাজার ২০০ বিদেশি মেহমান এবারের ইজতেমায় অংশগ্রহণ করেন।

এদিকে যারা ইজতেমা ময়দানে যেতে পারেননি, তাদের জন্য গাজীপুরের চান্দনা ঈদগাহ মাঠ, ভোগড়া মধ্যপাড়া নায়েববাড়ি জামে মসজিদ, ভোগড়া ঈদগাহ মাঠসহ বিভিন্ন এলাকায় টিভি লাইভের মোনাজাত মাইকে প্রচার করা হয়েছে। এসব স্থানে শত শত নারী-পুরুষ আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন।

এর আগে শুক্রবার বাদ ফজর আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিশ্ব ইজতেমা, যাতে অংশ নেন ঢাকার একাংশ ও ৪১ জেলার শুরায়ে নেজাম (জুবায়ের) অনুসারী। এবার এই পন্থিদের ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুই ধাপে।

দ্বিতীয় দফার ইজতেমা শুরু হবে সোমবার, যা বুধবার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে। তাতে অংশ নেবেন ঢাকার বাকি অংশ ও ২২ জেলার অনুসারীরা। এরপর ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রয়ারি অনুষ্ঠিত হবে মাওলানা সাদ অনুসারীদের ইজতেমা।

গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম খান বলেন, “আখেরি মোনাজাতের শেষে মুসল্লিদের বাড়ি ফেরা পর্যন্ত ইজতেমা ময়দানসহ আশপাশের এলাকায় প্রায় সাত হাজার পুলিশ নিয়োজিত রয়েছে। খিত্তায় খিত্তায় মুসল্লিদের বেশে সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

“মুসল্লিরা যাতে দ্রুত ও নিরাপদে ইজতেমা ময়দান ত্যাগ করতে পারের সেজন্য বাস, ট্রেনসহ সব ধরনের যানবাহনের ব্যবস্থা রয়েছে।”

অফিসগামীদের ভোগান্তি: এদিকে গণপরিবহন সংকটে টঙ্গী থেকে উত্তরামুখী সড়কে চরম ভোগান্তিতে পড়েন অফিসগামী যাত্রীরা।

টঙ্গীর ইজতেমা মাঠ সংলগ্ন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গীর মিলগেট থেকে আবদুল্লাহপুর, ঢাকার কামারপাড়া-টঙ্গীর মন্নুগেট সড়ক এবং ঢাকা-আশুলিয়া সড়কের আবদুল্লাহপুর থেকে কামারপাড়া পর্যন্ত পুরো এলাকায় ছিল মানুষের ঢল। এসময় যান চলাচল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েন অফিসগামীরা।