বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

মুমিনের জীবনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের প্রভাব

আল-আমিন সিরাজী

 প্রকাশিত: ২০:১৩, ৩ ডিসেম্বর ২০২৩

মুমিনের জীবনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের প্রভাব

ছবি সংগৃহীত

 

ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম একটি হলো নামাজ। এটি আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের অন্যতম মাধ্যম। ইবাদতের মধ্যে সর্বোত্তম ইবাদত। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা (দ্বিনের ওপর) অবিচল থাকো, যদিও তোমরা আয়ত্তে রাখতে পারবে না।

জেনে রাখো, তোমাদের আমালসমূহের মধ্যে সর্বোত্তম হলো নামাজ। সবেমাত্র মুমিন ব্যক্তিই যত্ন সহকারে অজু করে। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৭৭) 

নামাজের মাধ্যমে বান্দা মহান রবের সঙ্গে কথোপকথন করে। নামাজের মাধ্যমে বান্দার রুহ তাজা হয়। নামাজের মাধ্যমে বান্দা গুনাহমুক্ত হয়। নামাজের প্রতিটি সিজদায় বান্দার মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয়।

উবাদাহ ইবনুস-সামিত (রা.) থেকে বর্ণিত যে , তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছেন: যখন কোনো বান্দা আল্লাহর জন্য একটি সিজদা করে  আল্লাহ এর বিনিময়ে তাকে একটি নেকি দান করেন তার একটি গুনাহ মাফ করেন এবং তার মর্যাদা বেরে যায় । অতএব তোমরা অধিক সংখ্যায় সিজদা করো। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৪২৪)

নামাজ এত শক্তিশালী ইবাদত যে নামাজের মাধ্যমে গুনাহ মাফ হয়ে যায়। মানুষ যখন দৈনন্দিন নামাজগুলো ঠিকমতো আদায় করে, তখন নামাজের মধ্যবর্তী সময়ের সব পাপ মাফ হয়ে যায়। ইবনে শিহাব (রহ.) বলেন, উরওয়াহ হুমরান থেকে বর্ণনা করেন, উসমান (রা.) অজু করে বলেন, ...আমি নবী (সা.)-কে বলতে শুনেছি, যে কোনো ব্যক্তি সুন্দর করে অজু করবে এবং নামাজ আদায় করবে, পরবর্তী নামাজ আদায় করা পর্যন্ত তার মধ্যবর্তী সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। (বুখারি, হাদিস : ১৬০)

অন্য হাদিস এ  ইরশাদ হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমাদের কারো ঘরের সামনে যদি নহর (প্রবাহিত) থাকে এবং সে যদি তাতে প্রতিদিন পাঁচবার গোসল করে, তবে কি তার শরীরে কোনো প্রকার ময়লা থাকতে পারে? সাহাবায়ে কেরাম বলেন যে , না তার শরীরে কোনো ময়লা থাকতে পারে না। রাসুল (সা.) বলেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের দৃষ্টান্তও এরূপ। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের দ্বারা আল্লাহ গুনাহসমূহ মিটিয়ে দেন। (নাসায়ি, হাদিস : ৪৬২)

এ ছাড়া পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এই উম্মতের শ্রেষ্ঠত্বের প্রীতক। কারো কারো মতে এই উম্মতের জন্য এমন পাঁচটি সময় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয়েছে, যখন আল্লাহর বিশেষ নবীরা নামাজ আদায় করেছেন। যেমন—আঁধার রাতে আদম (আ.) দুনিয়ায় নিক্ষিপ্ত হন। ফজরের সময় তিনি আলোর ছোঁয়া দেখে শোকরিয়াস্বরূপ দুই রাকাত নামাজ আদায় করেন। আল্লাহ তাআলা তা এ উম্মতের ওপর অবতীর্ণ করেছেন। জোহরের চার রাকাত ইব্রাহিম (আ.)-এর স্মারক। তাঁর সন্তান ইসহাক (আ.) জন্মগ্রহণ করলে তিনি শুকরিয়াস্বরূপ চার রাকাত নামাজ আদায় করেন। আসরের চার রাকাত ওজাইর (আ.)-এর স্মারক, এই সময় মহান আল্লাহ তাকে জীবিত করলে তিনি শুকরিয়াস্বরূপ নামাজ আদায় করেন (কেউ কেউ আবার ইউনুস (আ.)-এর কথাও বলেন)। মাগরিবের তিন রাকাত দাউদ (আ.)-এর স্মৃতিবিজড়িত। এশার নামাজ আমাদের নবীজি (সা.)-এর নিজে আদায় করতেন। (কারো কারো মতে এ সময় ফেরাউনের কবল থেকে মুক্তি পেয়ে মুসা (আ.) চার রাকাত নামাজ আদায় করেছেন) তাই উম্মতে মোহাম্মদির প্রতি এশার বিধান দেওয়া হয়েছে।’ (শরহু মাআনিল আছার, মেরি নামাজ)

Online_News_Portal_24