ভারতের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে পাকিস্তান সিনেটে প্রস্তাব পাস

সিনেটে ভারতের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে পাকিস্তানের পাল্টা প্রস্তাব
কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় পাকিস্তান জড়িত—ভারতের এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে পাকিস্তানের সিনেটে সর্বসম্মতভাবে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। আজ শুক্রবার সিনেটে উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার এই প্রস্তাব উত্থাপন করেন। তিনি জানান, পানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার কিংবা যেকোনো ধরনের সামরিক উসকানির জবাবে দেশের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় পাকিস্তান সম্পূর্ণ প্রস্তুত।
সিনেটে গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়, ২২ এপ্রিল পেহেলগামে ঘটে যাওয়া হামলায় পাকিস্তানকে জড়ানোর ভারতীয় প্রচেষ্টা ‘অসার ও ভিত্তিহীন’। এতে আরও উল্লেখ করা হয়, নিরীহ মানুষ হত্যা পাকিস্তানের মূল্যবোধের পরিপন্থী, এবং ভারতের এই প্রচার পাকিস্তানের মর্যাদাহানির উদ্দেশ্যে চালানো একটি পরিচিত অপপ্রচারের অংশ।
পেহেলগামের ওই হামলায় ২৬ জন নিহত ও ১৭ জন আহত হন, যাঁদের বেশিরভাগই ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা পুরুষ পর্যটক ছিলেন। নিহতদের একজন নেপালের নাগরিক।
এই হামলার পরদিন ভারত একতরফাভাবে ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে এবং সীমান্ত বন্ধসহ কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাসের মতো পদক্ষেপ নেয়। এর প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (NSC) বৈঠকে পাকিস্তানও পাল্টা পদক্ষেপের ঘোষণা দেয়। এর মধ্যে রয়েছে ভারতের উড়োজাহাজের জন্য আকাশসীমা বন্ধ এবং ভারতীয়দের দেওয়া সার্ক ভিসা বাতিল।
সিনেটে আজ পাস হওয়া প্রস্তাবে বলা হয়, শান্তির পক্ষে পাকিস্তানের জনগণের প্রতিশ্রুতি থাকলেও দেশের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও স্বার্থে হস্তক্ষেপ সহ্য করা হবে না। একইসঙ্গে ভারতকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চালানো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও গুপ্তহত্যার দায়ে জবাবদিহির আহ্বান জানানো হয়।
প্রস্তাবের শেষাংশে পাকিস্তান আবারও কাশ্মীরের জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের প্রতি তাদের ‘নৈতিক, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সমর্থন’ পুনর্ব্যক্ত করে।
প্রস্তাব উত্থাপনকালে ইসহাক দার বলেন, “যদি কেউ পাকিস্তানে রাজনৈতিক হঠকারিতার চিন্তা করে, তবে মনে রাখা উচিত—আমাদের সশস্ত্র বাহিনী পুরোপুরি প্রস্তুত।”
সিনেটর শেরি রেহমান বলেন, “মোদি সরকার আগে থেকেই পানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছে। এমনকি যুদ্ধের সময়ও যেটা হয়নি, এখন সেই পানি চুক্তিকেও অস্ত্র বানাতে চায় তারা। আমরা তা হতে দেব না।”