ডিজিটাল আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে অ্যাপল ও মেটার বিপুল অর্থদণ্ড

ডিজিটাল আইন ভাঙায় অ্যাপল ও মেটাকে ৭০০ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা করল ইইউ
ডিজিটাল বাজারে প্রতিযোগিতা বিধিনিষেধ লঙ্ঘনের অভিযোগে অ্যাপল এবং মেটাকে মোট ৭০০ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এর মধ্যে অ্যাপলকে ৫০০ মিলিয়ন ইউরো এবং মেটাকে ২০০ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা করা হয়েছে। বুধবার ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কমিশন এই সিদ্ধান্ত জানায়।
ইইউ জানায়, এই দুটি প্রযুক্তি জায়ান্ট ডিজিটাল মার্কেটস অ্যাক্ট (ডিএমএ) লঙ্ঘন করেছে। ২০২২ সালে কার্যকর হওয়া এই আইনের অধীনে এটি প্রথম জরিমানা। আইন অনুযায়ী, বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে প্রতিযোগীদের জন্য খোলা রাখতে হয় তাদের প্ল্যাটফর্ম। তবে অ্যাপল এবং মেটা সেই শর্ত না মানায় এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
অ্যাপলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের অ্যাপ স্টোরে কড়া নিয়ম আরোপ করে তারা প্রতিযোগীদের জন্য অসুবিধা সৃষ্টি করেছে। অপরদিকে মেটা ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম অ্যাপে সাবস্ক্রিপশন মডেল চালু করে ব্যবহারকারীদের তথ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ সীমিত করেছে।
অ্যাপল ও মেটা এই জরিমানার বিরুদ্ধে আপিলের ঘোষণা দিয়েছে। অ্যাপল বলেছে, এই আইন ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা হুমকিতে ফেলতে পারে। মেটা অভিযোগ করেছে, কমিশনের সিদ্ধান্ত তাদের ব্যবসায়িক মডেলকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইইউর এই পদক্ষেপ বিশ্বব্যাপী সফটওয়্যার ডেভেলপারদের জন্য ইতিবাচক বার্তা। এপিক গেমসের প্রধান টিম সুইনি এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, এটি প্রযুক্তি বাজারে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতার জন্য এক বড় ধাপ।
ভোক্তা সুরক্ষা সংগঠন বিউকের প্রধান অগাস্টিন রেইনা বলেন, অ্যাপল ও মেটা ইচ্ছাকৃতভাবে আইনের ব্যাখ্যা এড়িয়ে গেছে। ইইউ পার্লামেন্টের সদস্যরাও কঠোর অবস্থান নিয়েছেন—বলে দিয়েছেন, আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইইউর চলমান শুল্ক বিরোধের প্রেক্ষাপটে এই সিদ্ধান্তকে কৌশলগত বলেও মনে করছেন কেউ কেউ। ট্রাম্প ইইউর আইনকে ‘অন্যায্য’ বলায় এ নিয়ে ভবিষ্যতে আরও উত্তেজনা তৈরি হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইউরোপীয় কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই সিদ্ধান্ত ইউরোপের ভোক্তাদের স্বার্থ সুরক্ষা ও প্রযুক্তি বাজারে ন্যায্য প্রতিযোগিতা বজায় রাখার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে। এখন দেখার বিষয়—এই জরিমানার প্রভাব কতদূর গড়ায় এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউর সম্পর্কের ওপর কী প্রভাব ফেলে।