যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কে প্রবৃদ্ধি কমলেও বৈশ্বিক মন্দার আশঙ্কা নেই

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতিতে বৈশ্বিক বাজারে অস্থিরতা, তবে বিশ্বমন্দার শঙ্কা উড়িয়ে দিল আইএমএফ — বললেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত পাল্টা শুল্কের ফলে বৈশ্বিক বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা দেখা দিলেও এতে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সংস্থাটি গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে প্রকাশিত পূর্বাভাসে এ মন্তব্য করেছে।
আইএমএফ-এর মতে, বাণিজ্য উত্তেজনা বিশ্বজুড়ে শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে এবং বিভিন্ন দেশের মধ্যে আস্থার ফাটল ধরিয়েছে। সংস্থাটির পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, "আমাদের নতুন প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস উল্লেখযোগ্যভাবে নিম্নমুখী হবে, তবে এতে বৈশ্বিক মন্দা দেখা দেবে না।"
আইএমএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বলেছেন, এই অনিশ্চয়তা মোকাবিলায় প্রতিটি দেশকে নিজেদের অর্থনীতি শক্তিশালী করার লক্ষ্যে দ্বিগুণ প্রচেষ্টা চালাতে হবে। ইউরোপের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, 'পরিষেবা খাতে অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের বাধা কমাতে হবে এবং একক বাজারকে আরও গভীর করতে হবে।'
২ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন, যার মধ্যে রয়েছে ১০ শতাংশ ন্যূনতম শুল্ক। ঘোষণার দিন থেকেই এটি কার্যকর হয়। পরবর্তীতে ৯ এপ্রিল থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল আরও উচ্চহারে শুল্ক, তবে তা চীন ছাড়া অন্যান্য দেশের জন্য ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়। এরপর ট্রাম্প প্রশাসন চীনসহ সব দেশের ইলেকট্রনিক পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক প্রত্যাহার করে।
এই শুল্ক ঘোষণার ফলে বিশ্ব পুঁজিবাজারে বড় ধস নামে, যা এখনো কাটেনি। এ অবস্থায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের ব্যয় ও বিনিয়োগে কৃচ্ছ্রতা শুরু করেছে। কিছু দেশ নিজেদের মতো করে শুল্কের প্রতিক্রিয়ায় প্রস্তুতি নিচ্ছে।
চীনের প্রসঙ্গে আইএমএফ প্রধান জর্জিয়েভা বলেন, দেশটিকে সামাজিক সুরক্ষা বাড়াতে হবে, যাতে জনগণ কম 'সতর্কতামূলক সঞ্চয়' করে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে ঋণ কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
এদিকে, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও), যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ইসিবি) — সবাই ট্রাম্পের শুল্ক নীতিকে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির ঝুঁকির অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে। ইসিবি তো ইতোমধ্যে মূল সুদের হার পর্যন্ত কমিয়েছে।
তবে আইএমএফ-এর বিশ্লেষণে এখন পর্যন্ত বিশ্বমন্দার আশঙ্কাকে তুলনামূলকভাবে কম ঝুঁকিপূর্ণ বলা হয়েছে।