পাকিস্তানের কাছে ৪.৩২ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ চাই বাংলাদেশ

দুই দেশের সম্পর্ক মজবুত করতে পাকিস্তানের কাছে একাত্তরের গণহত্যার জন্য আনুষ্ঠানিক ক্ষমা এবং প্রায় ৪.৩২ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার ঢাকায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচের সঙ্গে বৈঠকে এই দাবি উত্থাপন করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন।
বৈঠক শেষে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, আমি পাকিস্তানের সঙ্গে ঐতিহাসিকভাবে অমীমাংসিত বিষয়গুলো উত্থাপন করেছি। এর মধ্যে রয়েছে ১৯৭১ সালের গণহত্যার জন্য আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়া, আটকেপড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন, অবিভাজিত সম্পদে বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যা এবং ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে প্রেরিত বিদেশি সাহায্যের অর্থ হস্তান্তর।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আমাদের কাছে থাকা হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের এক সাবেক উপ-চেয়ারম্যানের হিসেবে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ ৪ বিলিয়ন ডলার, অন্য একটি হিসাবে ৪.৩২ বিলিয়ন ডলার। আমরা সেই সংখ্যাগুলো বৈঠকে উত্থাপন করেছি।
এছাড়া তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৭০ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যে ২০০ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা পাঠিয়েছিল, তা পাকিস্তান হস্তান্তর করেনি—সেই হিস্যাও আমরা দাবি করেছি।
পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এসব দাবির বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিশ্রুতি না এলেও, পররাষ্ট্র সচিব জানান, তারা আলোচনায় থাকার সদিচ্ছা প্রকাশ করেছে। তারা বলেছেন, তারা এসব বিষয় নিয়ে ভবিষ্যতে এনগেইজড থাকবে এবং আলোচনায় অংশ নেবে।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ বাংলাদেশ–পাকিস্তান পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১০ সালে। প্রায় দেড় দশক পর আবারও এই উচ্চ পর্যায়ের সংলাপ হওয়ায় উভয় পক্ষই এটিকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে, যদিও তাৎক্ষণিক কোনো সমাধানের আশা করা হয়নি।
বাংলাদেশ সরকার জানিয়েছে, ঐতিহাসিক ক্ষত নিরসন না হলে ভবিষ্যতের সম্পর্ক পূর্ণ আস্থার ভিত্তিতে গড়া সম্ভব নয়। পাকিস্তানের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা ও ক্ষতিপূরণের দাবি তাই কেবল অতীত পুনরুল্লেখ নয়, বরং দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তি স্থাপন।