জনসমর্থনে ভর করে আলোচনায় ইস্তাম্বুলের কারাবন্দী মেয়র ইমামোগলু

তুরস্কে একরেম ইমামোগলুর গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে লাখো মানুষের বিক্ষোভ, সরকারের বিরুদ্ধে এক জোরালো বার্তা
দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুর মুক্তির দাবিতে তুরস্কজুড়ে লাখো মানুষ বিক্ষোভ করেছে বলে দাবি করেছেন তাঁর সমর্থকেরা। যদিও সঠিক অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি, তবু পর্যবেক্ষকেরা একে গত এক দশকে সবচেয়ে বড় সরকারবিরোধী বিক্ষোভ হিসেবে দেখছেন।
ইমামোগলুর বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, চাঁদাবাজি, অবৈধ তথ্য রেকর্ড ও টেন্ডার জালিয়াতিসহ একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছেন, যেকোনো অপরাধের বিচার আদালতেই হবে এবং সড়কে সহিংসতা কোনো সমাধান নয়।
প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) নেতা ওজগুর ওজেল বিক্ষোভে অংশগ্রহণ ও আগাম নির্বাচনের দাবি জানিয়ে একটি পিটিশন শুরু করেছেন। একইসঙ্গে তিনি সরকারি দলের ঘনিষ্ঠ প্রতিষ্ঠানগুলোর বয়কটেরও আহ্বান জানিয়েছেন।
ইমামোগলুর জনপ্রিয়তার পেছনে রয়েছে তাঁর সদয়, খোলামেলা ও বিভেদহীন রাজনৈতিক মানসিকতা। ২০১৯ সালে একে পার্টির শক্ত ঘাঁটি ইস্তাম্বুলের মেয়র পদে জয়লাভ করে তিনি জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন। মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অবকাঠামো, সামাজিক পরিষেবা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য উন্নয়নে তাঁর ভূমিকা প্রশংসিত হয়েছে।
তবে সমালোচনার মুখেও পড়েছেন তিনি—বিশেষ করে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় সঠিকভাবে প্রস্তুতি না নেওয়া ও ব্যয়ের লাগাম টানতে না পারার কারণে। ডেইলি সাবাহসহ কিছু সরকারপন্থী গণমাধ্যম তাঁর বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে।
সরকার বলছে, আদালতের সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক নয় এবং বিচার বিভাগের ওপর কোনো রাজনৈতিক প্রভাব নেই। তবে বিরোধীদের দাবি, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেওয়া ঠেকাতেই এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ইমামোগলুর স্ত্রী দিলেক কায়া ইমামোগলু বলেন, 'আমার স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কারণ তিনি বারবার ব্যালট বাক্সে তাঁদের হারিয়েছেন।' তাঁর মতে, জনগণের ভালোবাসা ও গণতন্ত্রের শক্তি দিয়ে এই প্রতিকূলতা মোকাবিলা করা সম্ভব।