বাংলাদেশে ইসলামিস্টদের উত্থান নিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানাল প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

বাংলাদেশে ইসলামিস্টদের উত্থান নিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনকে "উদ্বেগজনক এবং বিভ্রান্তিকর" বলে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সিএ প্রেস উইং থেকে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিউইয়র্ক টাইমসের নিবন্ধটি ইঙ্গিত দেয় যে বাংলাদেশ ধর্মীয় চরমপন্থার উত্থানের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে, এটি বাংলাদেশের বাস্তব চিত্র তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। বিভ্রান্তিকর এই চিত্রায়ন দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতাকে অতিসরলীকৃত করে এবং ১৮ কোটি মানুষের সমগ্র জাতিকে অন্যায়ভাবে কলঙ্কিত করার ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
নিবন্ধের প্রতিবাদ জানিয়ে প্রেস উইং জানায়, এতে ধর্মীয় উত্তেজনা ও রক্ষণশীল আন্দোলনের কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা তুলে ধরা হলেও বাংলাদেশের সামগ্রিক অগ্রগতিকে উপেক্ষা করা হয়েছে। বিশেষ করে নারীর অধিকার এবং সুরক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নারীদের সুরক্ষা ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অথচ নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে ভিন্ন চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
প্রেস উইং আরও জানায়, বাংলাদেশের মতো দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ধর্মীয় সহিংসতার মধ্যে পার্থক্য করা গুরুত্বপূর্ণ। শেখ হাসিনার বিদায়ের পর সংঘটিত বিভিন্ন সংঘর্ষকে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যদিও প্রকৃতপক্ষে এসব ঘটনা রাজনৈতিক কারণে ঘটেছে। রাজনৈতিক দলগুলো প্রায়শই সমর্থন আদায়ে ধর্মকে ব্যবহার করে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। এই কারণে, ঘটনাগুলোর প্রকৃত কারণ ব্যাখ্যা না করে সেগুলোকে শুধুমাত্র সাম্প্রদায়িক সংঘাত হিসেবে উপস্থাপন করা বিভ্রান্তিকর।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো ও সন্ত্রাসবাদবিরোধী প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই প্রতিশ্রুতিকে আরও জোরদার করছে। সামাজিক সংস্কার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে এবং এই প্রচেষ্টাকে ভুল তথ্যের মাধ্যমে প্রশ্নবিদ্ধ করা উচিত নয়।
প্রেস উইং আরও জানায়, বাংলাদেশের প্রকৃত উন্নয়ন ও পরিস্থিতির জটিলতাকে স্বীকার করার পরিবর্তে উসকানিমূলক প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করা অনুচিত। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ যে অগ্রগতি অর্জন করেছে, সেটিকে যথাযথ স্বীকৃতি দেওয়া উচিত।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, "বাংলাদেশ যখন পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে, তখন কট্টরপন্থী ইসলামিস্টরা একটি সুযোগ খুঁজছে।" তবে এই বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করে প্রেস উইং জানায়, এই নিবন্ধে বাংলাদেশ সম্পর্কে একপেশে ও বিভ্রান্তিকর দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরা হয়েছে, যা বাস্তবতার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়।