‘এরদোয়ানের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী’ ইস্তাম্বুলের মেয়র আটক

মেয়র ইকরাম ইমামোগলু
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ানের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী, ইস্তাম্বুলের মেয়র ইকরাম ইমামোগলুকে আটক করেছে তুরস্কের কর্তৃপক্ষ। ইমামোগলুর বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ রয়েছে, যার মধ্যে দুর্নীতি, ঘুষ লেনদেন, টেন্ডার জালিয়াতি এবং অপরাধমূলক সংগঠনের নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। বিরোধী দল সিএইচপি (রিপাবলিকান পিপলস পার্টি) ইমামোগলুর আটককে ‘অভ্যুত্থানচেষ্টা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে এবং এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানায়।
ইমামোগলুর বিরুদ্ধে দুটি তদন্ত চলছে। প্রথম তদন্তে অভিযোগ করা হয়েছে যে, তিনি ইস্তাম্বুল পৌরসভা থেকে কিছু টেন্ডারের সঙ্গে সম্পর্কিত অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। এই ঘটনায় মোট ১০০ জন সাংবাদিক এবং ব্যবসায়ীকে সন্দেহ করা হচ্ছে। দ্বিতীয় তদন্তে ইমামোগলুর বিরুদ্ধে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)-কে সহায়তা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। পিকেকে তুরস্ক এবং তার পশ্চিমা মিত্রদের কাছে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত।
ইমামোগলু, যিনি দুই দফা ইস্তাম্বুলের মেয়র ছিলেন, তুরস্কের অন্যতম জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ। তার জনপ্রিয়তা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, বিরোধী দল তাকে আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এরদোয়ানের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচনা করছিল। এই কারণে সমালোচকদের ধারণা, তাকে আটক করা হয়েছে যাতে তার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণের পথ বন্ধ করা যায়।
এছাড়া, একদিন আগেই ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয় তার ডিগ্রি বাতিল করেছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে ইমামোগলুকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা দেওয়া হতে পারে। ২০২৮ সালে তুরস্কে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা, তবে তুর্কি সংবিধান অনুযায়ী, এরদোয়ান ওই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। তবে তিনি আগাম নির্বাচন ঘোষণা করে আবার ক্ষমতায় আসতে পারেন।
ইমামোগলুর আটকের পর, ইস্তাম্বুলের গভর্নরের কার্যালয় শহরে চার দিনের জন্য সব ধরনের সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এই ঘটনার পর, ইমামোগলু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেন, যাতে তিনি জানান যে, তিনি কোনোভাবেই হাল ছাড়বেন না এবং কঠিন পরিস্থিতির মুখে অটল থাকবেন।
এমন পরিস্থিতিতে, তুরস্কে রাজনীতি আরো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে, এবং ইমামোগলুর আটকের ঘটনা দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সূচনা হতে পারে বলে অনেকেই আশঙ্কা করছেন।