মার্কিন ইহুদিদের বিক্ষোভ: ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিলের মুক্তির দাবি

ট্রাম্প টাওয়ারে বিক্ষোভ
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ট্রাম্প টাওয়ারের লবিতে ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিলের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ করেছে মার্কিন ইহুদিদের সংগঠন জিউশ ভয়েস ফর পিস। গত বৃহস্পতিবার আয়োজিত এই বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার পর পুলিশ ৯৮ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করে।
মাহমুদ খলিল কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং একজন ফিলিস্তিনি নাগরিক। তাঁর স্ত্রী মার্কিন নাগরিক এবং বর্তমানে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। গত বছর তিনি কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন তাঁকে দেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে, যা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে।
গত শনিবার মার্কিন অভিবাসন কর্তৃপক্ষ মাহমুদ খলিলকে গ্রেপ্তার করার পর যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ শুরু হয়। ট্রাম্প প্রশাসন তাঁকে ‘সন্ত্রাসবাদে’ সমর্থন দেওয়ার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দিতে চায়। তবে তাঁর আইনজীবী ও সমর্থকেরা বলছেন, গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের সমালোচনাকে ইচ্ছাকৃতভাবে সন্ত্রাসের সমর্থন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বিক্ষোভকারীরা ট্রাম্প টাওয়ারকে বিক্ষোভের স্থান হিসেবে বেছে নেন, কারণ ভবনটিতে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত বাসভবন ও ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের অফিস রয়েছে। জিউশ ভয়েস ফর পিস সংগঠনটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) পোস্ট দিয়ে জানিয়েছে, ‘ইহুদি হিসেবে আমরা এ অন্যায়কে গণহারে প্রত্যাখ্যান করছি।’
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছিলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী ডেব্রা উইংগার। তিনি বার্তা সংস্থা এপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি মাহমুদ খলিলের জন্য দাঁড়িয়েছি, যাঁকে অবৈধভাবে তুলে নেওয়া হয়েছে এবং গোপন স্থানে রাখা হয়েছে। এটা কি আপনাদের কাছে আমেরিকা বলে মনে হয়?’
নিউইয়র্ক থেকে আল–জাজিরার প্রতিনিধি ক্রিস্টেন সালুমি জানান, বিক্ষোভকারীরা প্রথমে সাধারণ পর্যটকদের পোশাকে ট্রাম্প টাওয়ারে প্রবেশ করেন। পরে তাঁরা লাল রঙের টি-শার্ট পরে খলিলের মুক্তির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। পুলিশ দ্রুত লবি ফাঁকা করে এবং ৯৮ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মাহমুদ খলিল বর্তমানে লুইজিয়ানার এক বন্দিশিবিরে আটক আছেন। মার্কিন কর্তৃপক্ষ তাঁকে বিতাড়িত করার সিদ্ধান্ত নিলেও, একজন ফেডারেল বিচারপতি সেই সিদ্ধান্তের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। খলিলের আইনজীবীরা তাকে নিউইয়র্কে সরিয়ে নেওয়ার আবেদন করেছেন, যাতে তিনি তাঁর গর্ভবতী স্ত্রীর কাছাকাছি থাকতে পারেন। তবে ট্রাম্প প্রশাসন এখনো তাঁকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়ার বিষয়ে অনড়।