পাকিস্তানে ট্রেনে জিম্মি ঘটনা: ৩০ ঘণ্টা পর অবসান

পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে সশস্ত্র বিদ্রোহীদের একটি ট্রেনের যাত্রীদের জিম্মি করার ঘটনা নিরাপত্তা বাহিনীর ৩০ ঘণ্টার অভিযানের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। এ ঘটনায় ২১ জন বেসামরিক ও চার সেনা নিহত হয়েছেন বলে দেশটির সেনাবাহিনী জানিয়েছে।
বুধবার রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে ট্রেনে জিম্মি ঘটনা অবসানের ঘোষণা দিয়ে জানায়, এ অভিযানে নিরাপত্তা বাহিনী আত্মঘাতী বোমারুসহ ৩৩ বিদ্রোহীকে হত্যা করেছে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরি ও দেশটির তথ্যমন্ত্রী আত্তা তারার পৃথক বিবৃতিতে সফলভাবে অভিযান শেষ করার ও সব জিম্মিকে উদ্ধারের কথা জানান, জানিয়েছে ডন।
লে. জে. শরিফ জানান, বেলুচিস্তানের বোলান পর্বতের মাশকাফ টানেলের কাছে ছিনতাই হওয়া ট্রেন ৩৩ ‘সন্ত্রাসী’ নিহত হওয়ার মধ্য দিয়ে মুক্ত হয়েছে এবং জিম্মি থাকা বাকি সব যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি ট্রেনটিতে প্রায় ৪৪০ জন যাত্রী থাকার কথা উল্লেখ করলেও কতোজন জিম্মিকে উদ্ধার করা হয়েছে তা নির্দিষ্ট করে জানাননি।
তবে নিরাপত্তা বাহিনীর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ডনকে জানান, উদ্ধার অভিযান কয়েক পর্বে বিভক্ত ছিল। প্রথম পর্বে একশর কিছু বেশি যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়, দ্বিতীয় পর্বে আরও ৮০ যাত্রীকে উদ্ধারের পর মাখ শহরে সরিয়ে নেওয়া হয়।
প্রায় এক ডজনের মতো যাত্রী ও দুই রেলওয়ে পুলিশ অপহরণকারীদের আওতা থেকে পালিয়ে নিরাপদে বেলুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটায় ফিরতে সক্ষম হন।
আইএসপিআরের ডিজি পাকিস্তানি গণমাধ্যম দুনিয়া নিউজকে জানান, সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী, ফ্রন্টিয়ার কোর ও এসএসজির সেনারা এই অভিযানে অংশ নিয়েছে।
তিনি জানান, যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে সেটি সড়ক নেটওয়ার্ক ও জনবসতি থেকে অনেক দূরে হওয়ায় সেখানে পৌঁছানো অনেক কঠিন ছিল।
“সন্ত্রাসীরা নারী ও শিশুদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে,” বলেন তিনি।
নিরাপত্তা বাহিনীর ওই কর্মকর্তা ডনকে জানান, একদল সশস্ত্র ব্যক্তি ট্রেনটিতে ও এর আশপাশের এলাকায় টহল দিচ্ছিল। তারা তাদের জিম্মায় থাকা বাকি যাত্রীদের ওপর নজর রাখছিল।
“এসএসজি কমান্ডোরা জিম্মিদের বাঁচাতে অত্যন্ত সতর্কভাবে অভিযান চালায়। তারা বন্দুক লড়াইয়ে অবশিষ্ট হামলাকারীদের শেষ করে প্রায় ৬৮ জন জিম্মিকে উদ্ধার করে,” বলেন তিনি।
তিনি জানান, প্রায় সব অভিযান সম্পন্ন হয়েছে আর নিরাপত্তা বাহিনী এখন ‘ক্লিয়ারেন্স’ পর্বে আছে।