অভিযান চালিয়ে পাকিস্তানের ট্রেনের ১০৪ যাত্রী উদ্ধার, ১৬ হামলাকারী নিহত

বেলুচিস্তানের বোলান জেলার পানির ও পেশি রেল স্টেশনের মাঝামাঝি রেলওয়ে টানেল ৮ এর কাছে ট্রেনটিতে হামলা হয়।
পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে সশস্ত্র বিদ্রোহীরা চারশোরও বেশি যাত্রাবাহী একটি ট্রেন ছিনতাই করার পর নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালিয়ে ১০৪ জন বেসামরিককে উদ্ধার ও ১৬ হামলাকারীকে হত্যা করেছে বলে দেশটির গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
রেলওয়ের কর্মকর্তারা ডনকে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল প্রায় ৯টার দিকে নয় বগির জাফর এক্সপ্রেস খাইবার পাখতুনখওয়ার পেশোয়ার শহরের উদ্দেশে বেলুচিস্তানের কোয়েটা ছেড়ে যায়। দুপুর প্রায় ১টার দিকে তারা খবর পান বেলুচিস্তানের বোলান জেলার পানির ও পেশি রেল স্টেশনের মাঝামাঝি মুশকাফের নিকটবর্তী রেলওয়ে টানেল ৮ এর কাছে ট্রেনটিতে হামলা হয়েছে।
এক কর্মকর্তা বলেন, “সশস্ত্র ব্যক্তিরা ট্রেনের লোকোমোটিভ লক্ষ্য করে রকেট ছোড়ে ও গুলিবর্ষণ করে, এতে ট্রেনটি থেমে যায়।”
প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলো থেকে জানা গেছে, হামলাকারীরা ট্রেনটির বেশ কয়েকজন নিরাপত্তা রক্ষীকে হত্যা করে ট্রেনটি ছিনতাই করে। তারপর তারা যাত্রীদের জাতীয় পরিচয়পত্র পরীক্ষা শুরু করে এবং কিছু যাত্রীকে জিম্মি করে ধরে নিয়ে যায়।
কোয়েটা থেকে পাকিস্তান রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মুহাম্মদ কাশিফ আন্তর্জাতিক এক বার্তা সংস্থাকে বলেছিলেন, “ট্রেনটিতে থাকা ৪৫০ জনেরও বেশি যাত্রীকে বন্দুকধারীরা জিম্মি করে রেখেছে। যাত্রীদের মধ্যে নারী ও শিশু আছে।”
এ হামলার মোট কতোজন হতাহত হয়েছেন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পাকিস্তানি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ট্রেনের চালকসহ অন্তত ১০ নিহত হয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সশস্ত্র হামলাকারীদের বড় একটি দল, যাদের কাছে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ও রকেট লঞ্চার আছে তার জিম্মিদের নিয়ে নিকটবর্তী পর্বতে আশ্রয় নিয়েছে। যাওয়ার আগে তারা বিস্ফোরক দিয়ে রেললাইন উড়িয়ে দিয়ে যায়।
জিও নিউজ জানিয়েছে, যে যাত্রীদের উদ্ধার করা হয়েছে তাদের মধ্যে ৫৮ পুরুষ, ৩১ নারী ও ১৫ শিশু রয়েছে। বাকি জিম্মিদের উদ্ধারে অভিযান চলমান আছে।
রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জাফর এক্সপ্রেসের উদ্ধার পাওয়া যাত্রীদের মধ্যে ৫৭ জনকে বুধবার ভোরে কোয়েটায় পাঠানো হয়েছে, আরও ২৩ জন মাখ শহরে রাখা হয়েছে।
নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানের পর সশস্ত্র হামলাকারীরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। অভিযান চলাকালে আহত ১৭ যাত্রীকে চিকিৎসার জন্য দ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বেলুচিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী বালুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এ হামলার দায় স্বীকার করেছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
হামলার খবর পাওয়ার পর পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী বহু প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে পর্বতময় বন্ধুর ওই এলাকায় অভিযান শুরু করে। বেসামরিকদের উপস্থিতি থাকায় অভিযানটি খুব সতর্কতার সঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে।