এবার গাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করল ইসরায়েল

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে গাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু করার প্রস্তুতির মধ্যেই এ পদক্ষেপ নিল দেশটি।
রোববার ইসরায়েলের জ্বালানিমন্ত্রী এলি কোহেন অবিলম্বে গাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখার আদেশ দেন।
আল জাজিরা জানিয়েছে, সামাজিক মাধ্যম এক্স এ এক পোস্টে কোহেন বলেছেন, তিনি গাজা ভূখণ্ডের বিদ্যুৎ সরবরাহ ‘অবিলম্বে বন্ধ করার’ একটি আদেশে স্বাক্ষর করেছেন।
পোস্টে তিনি লিখেছেন, “কথা অনেক হয়েছে, এখন সময় পদক্ষেপ নেওয়ার!”
এক সপ্তাহ আগে ইসরায়েল ২০ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি অধ্যুষিত যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় সব ধরনের ত্রাণের সরবরাহ আটকে দেয়। গাজা যুদ্ধের শুরুর দিনগুলোতেও ইসরায়েল গাজা ‘অবরুদ্ধ’ করার ঘোষণা দিয়েছিল। বর্তমান পরিস্থিতি অনেকটা যুদ্ধের ওই প্রথম দিনগুলোর অবস্থাই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে বলে মত পর্যবেক্ষকদের।
ইসরায়েলের এমন পদক্ষেপে রোজার এ সময়টিতে ত্রাণের স্বল্পতার মধ্যে গাজার পানি বিশুদ্ধকরণ প্রকল্পগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার হুমকির মুখে পড়বে।
বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখার এ সিদ্ধান্তকে হামাস ‘ব্ল্যাকমেইল’ বলে বর্ণনা করেছে। ইসরায়েল ত্রাণ সরবরাহ আটকে দেওয়ার পরও হামাস এমনটি বলেছিল।
হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের স্বাক্ষরিত অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্ব ১ মার্চ শেষ হয়েছে। তারপর থেকে উভয়পক্ষই সর্বাত্মক যুদ্ধে ফিরে আসা থেকে বিরত রয়েছে। তবে বিচ্ছিন্ন কিছু সহিংসতার ঘটনা অব্যাহত আছে।
যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে আলোচনা অবিলম্বে শুরু করার জন্য হামাস বারবার আহ্বান জানিয়ে আসছে।
এই যুদ্ধবিরতি গাজায় ১৫ মাস ধরে চলা যুদ্ধের সাময়িক অবসান ঘটিয়েছে। এই যুদ্ধ প্রায় ৫০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন আর ইসরায়েলের অবিরাম বোমাবর্ষণে গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
তিন পর্বের যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্ব আরও দীর্ঘায়িত করতে চেয়েছিল ইসরায়েল। কিন্তু হামাস চায় প্রাথমিকভাবে উভয়পক্ষ যে পরিকল্পনায় সম্মত হয়েছিল সে অনুযায়ী চুক্তি করে দ্বিতীয় পর্বের যুদ্ধবিরতি শুরু করতে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্বে ইসরায়েল যেতে না চাওয়ার মধ্য দিয়ে গাজা ও মিশরের মধ্যে অবস্থিত সংকীর্ণ ভূখন্ড ফিলাডেলফিয়া করিডোর থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহারের অনিচ্ছা প্রকাশ পেয়েছে।
গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে ইসরায়েল মানবতাবিরোধী অপরাধ করছে, এমন অভিযোগ করেছে আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো ও মানবাধিকার কর্মীরা।