পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিওর সমালোচনায় মাস্ক

ইলন মাস্কের ছাঁটাই পরিকল্পনায় ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ
ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন মার্কিন প্রশাসনে ইলন মাস্কের ভূমিকা নিয়ে এক উত্তপ্ত মন্ত্রিসভা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার হওয়া এ বৈঠকে মূলত কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যয় হ্রাস ও জনবল সংকোচনের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। ট্রাম্প প্রশাসনের ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি (ডিওজিই)-এর নেতৃত্বে থাকা মাস্ক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত কর্মী ছাঁটাই না করার অভিযোগ তোলেন এবং তাঁকে শুধুমাত্র "টেলিভিশনে ভালো" বলে কটাক্ষ করেন।
এই প্রযুক্তিসম্রাট বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও ‘টেলিভিশনেই ভালো’। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কূটনীতিক হিসেবে তাঁর কাজের কোনো প্রশংসা করার বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মাস্কের সংস্থা ডিওজিই ইতিমধ্যে জনবল সংকটে থাকা ফেডারেল এভিয়েশন প্রশাসনে (FAA) নিয়ন্ত্রক কর্মী ছাঁটাইয়ের চেষ্টা করেছে, যা নিয়ে পরিবহনমন্ত্রী শন ডাফির সঙ্গে তাঁর মতবিরোধ হয়। উত্তপ্ত আলোচনার একপর্যায়ে ট্রাম্প হস্তক্ষেপ করে জানান, তিনি এখনো ডিওজিইকে সমর্থন করেন, তবে সরকারি ব্যয় সংকোচনের চূড়ান্ত দায়িত্ব মন্ত্রীদের উপরই থাকবে, মাস্কের দল কেবল পরামর্শ দিতে পারবে।
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতেই যুক্তরাষ্ট্রে দুটি বিমান দুর্ঘটনার পর পরিবহন বিভাগ ব্যাপক চাপে রয়েছে। অন্যদিকে, মাস্কের নেতৃত্বাধীন ডিওজিই কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যয় কমাতে ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে, যার মধ্যে লাখ লাখ সরকারি কর্মীদের আগাম বেতনের বিনিময়ে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের আহ্বান জানানো এবং নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষানবিশদের বরখাস্তের নির্দেশনাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে অনেক সংস্থা এই আদেশ বাস্তবায়ন করেনি, কারণ তারা এসব কর্মীদের অপরিহার্য মনে করে।
মন্ত্রিসভার বৈঠকের বিষয়ে ট্রাম্প তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট দিয়ে বলেন, তিনি মন্ত্রীদের নির্দেশ দিয়েছেন সরকারি ব্যয় সংকোচনে ডিওজিইর সঙ্গে কাজ করতে। তবে ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে ন্যূনতম হারে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন। বৈঠক নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প দাবি করেন, সেখানে কোনো বাদানুবাদ হয়নি এবং মাস্ক ও রুবিওর সম্পর্ক সৌহার্দ্যপূর্ণ।
ট্রাম্প বলেন, ‘সেখানে কোনো বাদানুবাদ হয়নি। তাঁদের মধ্যকার সম্পর্ক হৃদ্যতাপূর্ণ।’
সম্প্রতি মাস্ক এক কনজারভেটিভ সম্মেলনে চকচকে করাত হাতে হাজির হন, যা কেন্দ্রীয় ব্যয় কমানোর প্রতি তাঁর প্রতিশ্রুতির প্রতীক বলে মনে করা হচ্ছে। তাঁর আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ ডেমোক্র্যাটদের পাশাপাশি ট্রাম্প প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তাদেরও উদ্বেগে ফেলেছে।
বর্তমানে ট্রাম্প ও মাস্কের মধ্যে দৃঢ় সম্পর্ক দেখা গেলেও, ওয়াশিংটনে গুঞ্জন চলছে যে তাঁদের এই অংশীদারিত্ব শেষ পর্যন্ত টিকবে কি না।