গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরানোর ‘পরিকল্পনার’ বিরোধিতা আরব রাষ্ট্রগুলোর
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের পরামর্শমতো গাজা ভূখণ্ড থেকে ফিলিস্তিনিদের সরানোর পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছে পাঁচটি আরব রাষ্ট্র। এই রাষ্ট্রগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ও ঊর্ধ্বতন এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বিষয়টি নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে একটি যৌথ চিঠি পাঠিয়েছেন।
রয়টার্স জানায়, সোমবার পাঠানো চিঠিটিতে সই করেছেন জর্ডান, মিশর, সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এবং ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা হুসেইন আল-শেখ।
অ্যাক্সিওস প্রথম এই খবর প্রকাশ করে জানায়, শীর্ষ এই কূটনীতিকরা রোববার কায়রোতে বৈঠক করেছেন।
২৫ জানুয়ারি ট্রাম্প প্রথম পরামর্শ দেন, জর্ডান ও মিশর গাজা থেকে আরও ফিলিস্তিনিদের নিয়ে গিয়ে আশ্রয় দিতে পারে। এ পরামর্শ কী স্বল্প না দীর্ঘ মেয়াদী সমাধান হিসেবে দেওয়া হচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, “যে কোনোটাই হতে পারে।”
নিজেদের ঘরবাড়ি থেকে তাদের স্থায়ীভাবে তাড়িয়ে দেওয়া হতে পারে, ফিলিস্তিনিদের দীর্ঘ দিন ধরে করা এমন আশঙ্কা প্রতিধ্বনিত হয় মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্যে; সমালোচকরা যাকে জাতিগত নির্মূলের প্রস্তাব বলে অভিহিত করেছেন। তখনই জর্ডান, মিশর ও অন্য আরব রাষ্ট্রগুলো এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিল।
“গাজার পুনর্নির্মাণ গাজার জনগণের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত হয়ে ও অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে হওয়া উচিত। ফিলিস্তিনিরা তাদের ভূমিতে বসবাস করবে আর এটি পুনর্নির্মাণে সাহায্য করুন,” পাঠানো চিঠিতে এমনটি বলা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, “আর পুনর্নির্মাণকালে তাদের কর্তাসত্ত্বা থেকে তাদের বঞ্চিত করা উচিত নয়, কারণ তাদের অবশ্যই বিশ্ব সম্প্রদায়ের সমর্থনে প্রক্রিয়াটির মালিকান নিতে হবে।”
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১৫ মাস ধরে চলা ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলায় গাজায় ৪৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এতে সেখানে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে যা ইসরায়েল অস্বীকার করেছে। বর্তমানে একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতির মধ্যদিয়ে গাজার লড়াই বন্ধ আছে।
ইসরায়েলিদের সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের দশকের পর দশক ধরে সহিংসতা ও রক্তপাত ঘটে চলছে। তারই মধ্যে ২০২৩ এর ৭ অক্টোবর গাজার শাসক গোষ্ঠী হামাস ও এর মিত্র সংগঠনগুলোর ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে নজিরবিহীন হামলা চালায়। এতে প্রায় ১২০০ জন নিহত হয় বলে ভাষ্য ইসরায়েলের।
পাশাপাশি ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা ইসরায়েল থেকে ২৫০ জনেরও বেশি মানুষকে ধরে গাজায় নিয়ে জিম্মি করে রাখে। এই হামলার প্রতিশোধ নিতে ওই দিন থেকেই গাজায় স্মরণকালের অন্যতম ভয়াবহ হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী।