যুক্তরাষ্ট্রে স্কুল-গির্জা-হাসপাতালেও চলবে অভিবাসী ধরপাকড়
যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ এখন থেকে স্কুল, গির্জা এমনকি হাসপাতালগুলোতেও অভিবাসীদের গ্রেপ্তার করতে পারবে।
ট্রাম্প প্রশাসন সংবেদনশীল এই স্থানগুলোতে অভিবাসী আটক কার্যক্রমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা বাতিল করার পর এখন এই ধরপাকড়ে আর কোনও বাধা নেই।
সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’ লিখেছে, ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস) এবং কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রটেকশন সংস্থাগুলোর ওপর এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এসব স্থানে অভিযান পরিচালনায় নিষেধাজ্ঞা ছিল।
এখন তা উঠে যাওয়ার পর ওই দুই সংস্থা তদারককারী মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ এক বিবৃতিতে বলেছে, “অপরাধীরা আর গ্রেপ্তার এড়াতে আমেরিকার স্কুল এবং গির্জাগুলোতে লুকিয়ে থাকতে পারবে না। ট্রাম্প প্রশাসনও আমাদের বাহাদুর আইনপ্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের হাত বেঁধে রাখবে না।”
মঙ্গলবার হোমল্যান্ড সিকিউরিটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি বেঞ্জামিন হাফম্যান এই সংবেদনশীল স্থানগুলো থেকে অভিবাসী গ্রেপ্তারের এই নির্দেশনাসহ আরও একটি নির্দেশনা জারি করেন।
সেটি হচ্ছে, বৈধ কাগজপত্র না থাকা কেউ গ্রেপ্তার হলে সেই ব্যক্তি যদি যুক্তরাষ্ট্রে দুবছরের বেশি সময় ধরে তার অবস্থান প্রমাণ করতে ব্যর্থ হন, তাহলে তাকে দ্রুতই দেশ থেকে বের করে দিতে পারবে কর্তৃপক্ষ।
ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে কঠোর অভিযানের অংশ হিসেবে এই পরিবর্তনগুলো এনেছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সোমবার হোয়াইট হাউজে ফিরেই একাধিক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন, যার মধ্যে একটি অ্যাপ বন্ধের নির্দেশনা রয়েছে। এই অ্যাপের কারণে কয়েক হাজার মানুষ সহজে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারত।
অ্যাপটি বন্ধ করা ছাড়াও শরণার্থী ব্যবস্থা স্থগিত করা এবং ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস) এর সঙ্গে স্থানীয় ও রাজ্য সরকারের সমন্বয় আরও জোরদার করারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘোষণা দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বাস করা লোকজনকে অবিলম্বে ধরপাকড় করা শুরু হবে। প্রেসিডেন্টের গণহারে অভিবাসী বিতাড়ন কর্মসূচি কার্যকর করার প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ট্রাম্পের সীমান্ত সম্রাট টম হোম্যান সোমবার সন্ধ্যায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “মঙ্গলবার থেকে অভিবাসন এজেন্টরা যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ছড়িয়ে পড়বে এবং অনথিভুক্তদের গ্রেপ্তার ও বহিষ্কারের কাজ শুরু করবে।”
এদিকে, সংবেদনশীল স্থানগুলোতে গ্রেপ্তারের অনুমতি দেওয়ার ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপ ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে বলে সতর্ক করেছেন আইনজীবীরা।
সেন্টার ফর ল অ্যান্ড সোশ্যাল পলিসি এক বিবৃতিতে বলেছে, “এই পদক্ষেপের কারণে অভিবাসীদের পরিবার ও তাদের সন্তানের পাশাপাশি মার্কিন শিশুরাও মারাত্মক মানসিক চাপের সম্মুখীন হতে পারে।”
এর আগে, মঙ্গলবার ওয়াশিংটনের এক বিশপ সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে অভিবাসী এবং এলজিবিটিকিউ+ জনগোষ্ঠীর প্রতি এত কঠোর না হওয়া আহ্বান জানিয়েছেন।