ক্যাপিটল হিল: দেড় সহস্রাধিক দাঙ্গাবাজকে ক্ষমা করলেন ট্রাম্প
চার বছর আগে যে স্থাপনায় কট্টর সমর্থকদের হামলার ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন ডনাল্ড ট্রাম্প, সেই ক্যাপিটল হিলেই শপথগ্রহণের পরপর ওই দাঙ্গাবাজদের ক্ষমা করলেন ৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
বিবিসি লিখেছে, ওভাল অফিসে বসার পরপর ট্রাম্প বেশ কিছু নির্বাহী আদেশে সই করেছেন, যার মধ্যে ক্যাপিটল দাঙ্গার প্রায় ১,৬০০ জনকে ক্ষমার আদেশও রয়েছে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অনেককে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
দাঙ্গার সময় ডেমোক্রেটিক হাউস স্পিকার ছিলেন ন্যান্সি পেলোসি।
ট্রাম্পের আদেশের প্রতিক্রিয়ায় তিনি সোশাল মিডিয়ায় বলেছেন, “এই পদক্ষেপ আমাদের বিচার ব্যবস্থা এবং ক্যাপিটল, কংগ্রেস ও সংবিধান রক্ষায় শারীরিক ও মানসিক আঘাতের শিকার হওয়া নায়কদের জন্য চরম অপমান।
বিবিসি লিখেছে, ডনাল্ড ট্রাম্প ক্যাপিটল হিলের সব দাঙ্গাবাজকের মুক্তি দেবেন কি না তা নিয়ে কিছু প্রশ্ন ছিল। তার ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ধারণা দিয়েছিলেন, যারা বেশি মাত্রার সহিংসতার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল, তারা ক্ষমা নাও পেতে পারে।
কিন্তু ট্রাম্পের আদেশে দেখা গেছে, যারা পুলিশ অফিসারদের উপর আক্রমণ করেছিলেন, জানালা ভেঙেছিলেন বা কংগ্রেসের অফিস ভাঙচুরকারীরাও মুক্তির আদেশ পেয়েছেন।
এখন পর্যন্ত দোষী সাব্যস্ত বা গ্রেপ্তার হওয়া প্রায় ১,৬০০ দাঙ্গাবাজের সবাই ক্ষমা পেয়েছেন। একমাত্র ব্যতিক্রম হল ১৪ জন হোতা; অতি ডানপন্থি ‘প্রাউড বয়েজ’ এবং ‘ওথ কিপারস’র এই সদস্যরা দীর্ঘ সাজা পেয়েছেন। তারা ‘কমিউটেশন’ পাবেন, যার অর্থ তাদের রেকর্ড মুছে ফেলা হবে না, তবে তারাও মুক্তি পাবেন।
অনেকেই কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মুক্তি পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। প্রাউড বয়েজ নেতা এনরিক ট্যারিওর জন্য মিয়ামিতে পার্টির পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
প্রথমবার ২০১৬ সালে নির্বাচনে জিতে ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে উঠলেও সেই চার বছর গেছে ‘বিশৃঙ্খলা আর সমালোচনার’ মধ্যে। এরপর ২০২০ সালে দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়লেও হেরে যান জো বাইডেনের কাছে। আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেও ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়তে তিনি ছিলেন অনড়। আর শেষ পর্যন্ত হোয়াইট হাইজের চাবি হাতে পেয়ে যান ৭৮ বছর বয়সী রিপাবলিকান ডনাল্ড ট্রাম্প।
দ্বিতীয় দফার নির্বাচনের হেরে যাওয়ার পর ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে যৌথ অধিবেশনে ডেমোক্র্যাট জো বাইডেনের নির্বাচনে জয়ের স্বীকৃতির প্রক্রিয়া চলার সময় রিপাবলিকান দলের তৎকালীন পরাজিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের কট্টর সমর্থকরা ভবনটিতে হামলা চালায়।
এতে পুলিশসহ অন্তত পাঁচ জন নিহত হয়েছিলেন। ট্রাম্প-সমর্থকদের নজিরবিহীন ওই তাণ্ডবে হতভম্ব হয় যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা বিশ্বের মানুষ। এই হামলাকে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের ওপর বড় ধরনের আঘাত বলে বর্ণনা করেন অনেকেই। দাঙ্গার ঘটনাকে ‘অভ্যুত্থানচেষ্টা’ বলে অভিহিত করেছেন অনেক আমেরিকান রাজনীতিবিদ।