প্রতিবেশীদের মধ্যে বিদ্বেষ কারো জন্যই ভালো না: ভারতের সেনাপ্রধান
ভারতের সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী
প্রতিবেশী হিসেবে সুসম্পর্ক বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দিয়ে ভারতের সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেছেন, এই সম্পর্কে বিদ্বেষ কোনো পক্ষের জন্যই ভালো ফল আনবে না।
সোমবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর বার্ষিক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুই দেশের সেনাবাহিনী পর্যায়ে সম্পর্কে কোনো সমস্যা নেই। আর রাষ্ট্রীয় সম্পর্কের বিষয়ে আলোচনা করা যাবে তখনই, যখন ‘নির্বাচিত সরকার’ থাকবে।
গত অগাস্টে বাংলাদেশে ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসন অবসানের পর থেকেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে টানাপড়েন চলছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের কয়েকটি সীমান্তে ভারতের কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার চেষ্টা নিয়ে উত্তেজনা আরো বেড়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে ভারতীয় সেনাপ্রধানের সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিক বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন করেন।
জবাবে বাংলাদেশের সেনাপ্রধানের বক্তব্য মনে করিয়ে দিয়ে জেনারেল দ্বিবেদী বলেন, “তিনি বলেছেন, ‘কৌশলগত কারণে ভারত আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ’। আমাদের দিক দিয়েও বিষয়টা একই। কৌশলগত কারণে বাংলাদেশ আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।”
দুই দেশের সীমান্তের কথা বলতে গিয়ে মানচিত্রে ভারতের পাশে বাংলাদেশের ক্ষুদ্র অবস্থানের কথা তুলে ধরেন ভারতীয় সেনাপ্রধান।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ হল আরেকটি দেশ, যাদের সঙ্গে আমাদের সীমান্ত আছে। আপনারা যদি দেখেন, দক্ষিণ-পূর্ব দিকে ছোট একটা অংশ, সেটা আদতে পুরোটাই ভারত।
“আমরা প্রতিবেশী, আমাদের একসঙ্গে থাকতে হবে, পরস্পরকে বুঝতে হবে। কোনো ধরনের বিদ্বেষ আমাদের কারো স্বার্থের জন্যই ভালো হবে না।”
দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে কোনো ‘সমস্যা নেই’ দাবি করে জেনারেল দ্বিবেদী বলেন, “যখন পরিবর্তনটা হল (বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদল), তখন থেকেই আমি বাংলাদেশের সেনাপ্রধানের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। এমনকি গত ২৪ নভেম্বর ভিডিও কনফারেন্সেও আমাদের কথা হয়েছে।
“বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতার বিষয়ে যদি বলতে হয়, সেটা আগের মতই চলছে। আমাদের অফিসাররা সেখানে এনডিসিতে যোগ দিয়েছেন। ওই পক্ষ থেকেও কোনো সমস্যা নেই। শুধু একটা বিষয়, যৌথ মহড়া যেটা হত, বর্তমান পরিস্থিতির কারণে সেটা সাময়িকভাবে স্থগিত আছে। যখনই পরিস্থিতির উন্নতি হবে, আমাদের মহড়াও হবে।”
ভারতের সেনাপ্রধান বলেন, “এখন যদি দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে বলতে হয়, সম্পর্কের কথা আমরা তখনই বলতি পারি, যখন একটি নির্বাচিত সরকার থাকবে। সেনাবাহিনী পর্যায়ে দুই দেশের সম্পর্ক ভালো এবং একদম ঠিক আছে।”