প্রোটিন সমৃদ্ধ ৮টি ফল যা রাখবে আপনাকে সুস্থ ও সতেজ

ফলের শক্তি, প্রোটিনের গুণ সমৃদ্ধ এই ৮টি ফল
ফলমূল খাদ্য তালিকায় যুক্ত করলে ভালো পরিমাণে প্রোটিন পাওয়া সম্ভব ।
প্রোটিন শরীরের পেশি গঠনে, টিস্যু পুনর্গঠনে এবং সামগ্রিক সুস্থতার জন্য অপরিহার্য একটি পুষ্টি উপাদান। সাধারণত মাংস, দুগ্ধজাত খাবার ও শস্য থেকে প্রোটিন গ্রহণ করা হয়। তবে কিছু ফলও প্রোটিনের ভালো উৎস হতে পারে। যদিও অন্যান্য খাদ্য উপাদানের তুলনায় ফলের প্রোটিনের পরিমাণ কম, তবে নির্দিষ্ট কিছু ফল এই প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করতে পারে।
যারা উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে প্রোটিন পেতে চান, তাদের জন্য এখানে কয়েকটি ফলের তালিকা দেওয়া হলো। তবে মনে রাখবেন, বিভিন্ন জাতের ফলে প্রোটিনের পরিমাণ কিছুটা ভিন্ন হতে পারে। কোনো পরিবর্তন করার আগে একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
১. পেয়ারা (২.৬ গ্রাম প্রোটিন প্রতি ১০০ গ্রামে)
পেয়ারা ফাইবার, ভিটামিন C ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ একটি সুপারফুড। এটি হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। কাঁচা, সালাদ বা জুস হিসেবে উপভোগ করা যায়।
২. অ্যাভোকাডো (২ গ্রাম প্রোটিন প্রতি ১০০ গ্রামে)
অনেকে এটিকে সবজি মনে করলেও অ্যাভোকাডো আসলে একটি ফল, যা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ও প্রোটিনের ভালো উৎস। এটি ফাইবার, পটাশিয়াম এবং হৃদয়-সাশ্রয়ী মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট সরবরাহ করে। ওজন নিয়ন্ত্রণ, ত্বকের সুস্থতা এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে। স্মুদি, সালাদ বা টোস্টের ওপর মেখে খাওয়া যায়।
৩. কাঁঠাল (১.৭ গ্রাম প্রোটিন প্রতি ১০০ গ্রামে)
কাঁঠাল এখন উদ্ভিজ্জ মাংসের বিকল্প হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এতে রয়েছে খাদ্যআঁশ, ভিটামিন B6 এবং পটাশিয়াম। এর তন্তুময় গঠন একে বিভিন্ন তরকারি, স্টার-ফ্রাই এবং টাকোর উপকরণ হিসেবে ব্যবহার উপযোগী করে তুলেছে।
৪. এপ্রিকট (১.৪ গ্রাম প্রোটিন প্রতি ১০০ গ্রামে)
তাজা এপ্রিকট একটি স্বাস্থ্যকর ডায়েটের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে পারে। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন A রয়েছে, যা চোখের জন্য ভালো। শুকনো এপ্রিকটে প্রোটিনের ঘনত্ব আরও বেশি থাকে, যা যেকোনো সময় সহজে খাওয়া যায়।
৫. কমলা (১.২ গ্রাম প্রোটিন প্রতি ১০০ গ্রামে)
কমলা সাধারণত ভিটামিন C-এর জন্য পরিচিত, তবে এটি কিছুটা প্রোটিনও সরবরাহ করে। এতে থাকা ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও ত্বকের যত্নে সহায়তা করে। স্ন্যাকস হিসেবে, ফলের বাটিতে বা জুস বানিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
৬. কলা (১.১ গ্রাম প্রোটিন প্রতি ১০০ গ্রামে)
কলা শুধু কার্বোহাইড্রেটেরই ভালো উৎস নয়, এতে প্রোটিনও রয়েছে। এটি পটাশিয়াম সরবরাহ করে, যা পেশির কার্যকারিতা ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। কলা সহজেই বহনযোগ্য এবং স্মুদি, ব্রেকফাস্ট বোল ও বেকড আইটেমে ব্যবহার করা যায়।
৭. কিউই (১.১ গ্রাম প্রোটিন প্রতি ১০০ গ্রামে)
কিউই একটি পুষ্টিগুণে ভরপুর ফল। এতে রয়েছে ভিটামিন C ভিটামিন K ও ফাইবার, যা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এটি কাঁচা খেতে পারেন, সালাদে মিশিয়ে নিতে পারেন বা স্মুদির সঙ্গে উপভোগ করতে পারেন।
৮. পিচ (০.৯ গ্রাম প্রোটিন প্রতি ১০০ গ্রামে)
পিচ প্রোটিনের পাশাপাশি ভিটামিন A ভিটামিন C ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে। এটি হজমে সহায়তা করে ও ত্বকের যত্নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাজা পিচ খাওয়া যায়, স্মুদিতে ব্যবহার করা যায় বা ওটমিলে মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে।
এই ফলগুলো খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে প্রাকৃতিকভাবে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।