আরও ৮ প্রাণ কাড়ল ডেঙ্গু
দেশে গত একদিনে এইডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
তাদেরকে নিয়ে এ বছর ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা হলো ১৭৪ জন।
একদিনে ৮ জন এ বছর দৈনিক সর্বোচ্চ মৃত্যু, এর আগে গত ২৯ সেপ্টেম্বরও ৮ জনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বুধবার সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে চারজন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে মারা গেছেন।
এছাড়া তিনজন খুলনা বিভাগে এবং একজন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
বাংলাদেশে এর আগে ২০২৩ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ২৮১ জনের মৃত্যু হয়েছিল, যা এক বছরে সর্বোচ্চ মৃত্যু। ২০১৯ সালে ১৭৯ জন এবং ২০২১ সালে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে।
সে হিসেবে এ বছর ২ অক্টোবর পর্যন্ত ১৭৪ জনের মৃত্যু তৃতীয় সর্বোচ্চ। বছর শেষ হতে আরও প্রায় তিন মাস বাকী।
এ বছর সবচেয়ে বেশি ৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায়।
এছাড়া বরিশাল বিভাগে ১৭ জন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় ১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২১ জন, ঢাকা বিভাগে ৬ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ২৫ জন, খুলনা বিভাগে ১০ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ বছর সিলেট ও রংপুর বিভাগে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বুধবার পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ১০১৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
এ নিয়ে এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৯৯ জনে।
গত একদিনে ভর্তি রোগীদের মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩৯১ জন।
এছাড়া ঢাকা বিভাগে ২১৬ জন, ময়মনসিংহে ২৪ জন, চট্টগ্রামে ১৫০ জন, খুলনায় ৯২ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩৩ জন, রংপুর বিভাগে ৩১ জন এবং বরিশাল বিভাগে ৭৬ জন এবং সিলেট বিভাগে ৪ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছে ৩৪৫০ জন রোগী। এরমধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছে ১৬৯৯ জন রোগী। ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১৭৫১ জন।
এ বছর ভর্তি রোগীদের মধ্যে ১৮ হাজার ৭৩৯ জন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলায়। ঢাকার দুই মহানগর এলাকার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৪ হাজার ৩৬০ জন।
এ বছর চলতি সেপ্টেম্বর মাসে বছরের আগের ৮ মাসের চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হয়েছে। ওই মাসে ১৯২৪১ জন রোগী ভর্তির পাশাপাশি মৃত্যু হয়েছে ৮৩ জনের।
অক্টোবরের প্রথম দুই দিনে ২১৬১ জন রোগী ভর্তি হয়েছে, মৃত্যু ১১ জনের।
এর আগে জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ১ হাজার ৫৫ জন, যাদের মধ্যে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয় ৩৩৯ জন, যাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। মার্চ মাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩১১ জন; যাদের মধ্যে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এপ্রিল মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫০৪ জন, যাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে দুইজনের। মে মাসে ৬৪৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। জুন মাসে ৭৯৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের।
জুলাই মাসে ২৬৬৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়, তাদের মধ্যে ১২ জনের মৃত্যু হয়। অগাস্টে ৬৫২১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল, যাদের মধ্যে ২৭ জনের মৃত্যু হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর তথ্য রাখে ২০০০ সাল থেকে। এর মধ্যে ২০২৩ সালে এ রোগ নিয়ে সবচেয়ে বেশি ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি ১৭০৫ জনের মৃত্যুও হয় ওই বছর।