পিচঢালা কালো মহাসড়কে লালের মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে বসন্তের পলাশ

কালো পিচঢালা মহাসড়কের বুক চিরে লালের পসরা। ফুটেছে ফাগুনের পলাশ ফুল। ঢাকা থেকে চট্রগ্রাম যাওয়ার পথে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছেন এ ফুল। ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের প্রায় ১০০ কিলোমিটার জুড়ে কুমিল্লা। এর বেশির ভাগ জুড়ে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ফুল। তবে বসন্তের আগমনীতে সবচেয়ে বেশি ফুটেছে পলাশ ফুল। সড়কের বিভাজনে এ ফুল নজর কাড়ছে সবার।
ঋতুরাজ বসন্তের আগমনের সঙ্গে প্রকৃতিতে লেগেছে তার ছোঁয়া। মহাসড়কেও ফুটেছে আগুনরাঙা পলাশ ফুল ।
নান্দনিক সৌন্দর্যে প্রতিনিয়ত মুগ্ধ করছে ঢাকা -চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে চলাচলকারী মানুষদের। ছড়াচ্ছে অন্যরকম এক ভালবাসার ছোঁয়া। পলাশ ফুলের এমন সৌন্দর্যে চোখ জুড়িয়ে যায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম, মিয়ারবাজার, ইলিয়টগঞ্জ, দাউদকান্দি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মাঝের ডিভাইডারে, সারি সারি আগুনরাঙা পলাশ ফুল গাছ।
গাছে গাছে ফুটন্ত আগুনরাঙা পলাশ ফুল আর পাখিদের কিচিরমিচির শব্দ। দূর থেকে দেখে মনে হচ্ছে এ যেন মহাসড়কের মাঝে ফাগুনের আগুন।
পলাশ ফুলের এমন মোহনীয় রূপ এক ঝলক দেখতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন বিভিন্ন বয়সী মানুষ। আবার যাত্রাপথে ব্যক্তিগত পরিবহন থামিয়ে পলাশের সাথে ক্যামেরা বন্দি হতে ভুল করেন না অনেকে। কেউবা গাছের তলা থেকে কুড়িয়ে নিচ্ছেন পলাশের কমলা রঙের ঝরা পাঁপড়ি। কেউ কেউ করছেন টিকটক ভিডিও।
এ মহাসড়ক দিয়ে নিয়মিত চলাচলকারী সুয়াগাজী এলাকার বাসিন্দা আব্দুস সালাম বাপ্পি বলেন, শীতের জড়তাকে কাটিয়ে প্রকৃতিকে আবার রাঙিয়ে তুলেছে পলাশ। এ সড়কে দিয়ে চলাচলের সময় নিমিষেই যেন সময় ফুরিয়ে যায়। পলাশ ফুলের এমন সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে যেন ভ্রমণের ক্লান্তি চলে যায়।
এই মহাসড়কে দিয়ে নিয়মিত চলাচলকারী কাশেদুল হক চৌধুরী জানান, চাকুরীর সুবাদে এ সড়ক দিয়ে ঢাকায় নিয়মিত যাতায়াত করতে হয়। এ মহাসড়কের পলাশসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুল দেখে মন জুড়িয়ে যায়। বিশেষ করে ব্যস্ত জীবনে পিচঢালা পথের পলাশের লাল আভায় বসন্তের কথা মনে করে দিলো।
যাত্রীবাসী বাসের চালক শামছুল আলম জানান, ফেনীতে যাওয়ার পথে মহাসড়কের মিয়ারবাজার এলাকায় সড়ক বিভাজনে অনেকটা অংশে ফুটেছে পলাশ ফুল। দেখতে নিজের কাছেও ভাল লাগে, যাত্রীরাও গাড়ীর গতি কমাতে বলে ফুলের ছবি তুলতে।
আবৃত্তি শিল্পী ও সংগঠক কাজী মাহতাব সুমন বলেন, পলাশ গাছ এক সময় প্রায় বাড়িতে বাড়িতে দেখা যেতো।
পলাশ গাছ ও ফুল গ্রামাঞ্চলের আঁকাবাঁকা সড়কের মোড়ে, বাগানে বা যত্রতত্র দেখা মিললেও এখন বিলুপ্ত প্রায়।
পলাশের নাম জানেন না এমন লোক পাওয়া যায় না তেমনি এই প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা পলাশ ফুল চিনেন বা দেখেছেন এমন সংখ্যাও খুবই কম। প্রকৃতিকে ধ্বংস করে নগরায়নের ছোঁয়ায় এ গাছ এখন দেখা যায় না বললেই চলে। এর মাঝে মহাসড়কে পলাশের দেখা সত্যিই আনন্দের বার্তা।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা বাসসকে জানান, বছর জুড়ে মহাসড়কের সৌন্দর্য বাড়াতে ঋতুভেদে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের গাছ লাগানো হয়েছে। যাতে প্রত্যক ঋতুতে মহাসড়কটি ফুলে ফুলে সজ্জিত থাকে। বসন্তের শুরুতে এ মহাসড়কের বিভাজনে বিভিন্ন স্থানে পলাশ ফুল তার বসন্তের মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে। এ মহাসড়কটিকে আরো নান্দনিক করতে আমরা কাজ করছি।