১২৮ জনের তালিকা পূর্ণাঙ্গ নয়, আরও তদন্ত হবে: ঢাবি

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ১৫ জুলাই থেকে ৫ অগাস্ট পর্যন্ত সহিংসতার ঘটনায় সত্যানুসন্ধান কমিটি দায়ী হিসেবে যে ১২৮ জনের তালিকা করেছে সেটি পূর্ণাঙ্গ নয় বলে জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অধিকতর তদন্তের জন্য সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. তাজমেরী এস এ ইসলামকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এই কমিটি ১২৮ জনের তালিকা আমলে নিয়ে পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হল, বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে সহিংস ঘটনায় জড়িতদের তথ্য চেয়ে চিঠি দেবে।
প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করে শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেবে। সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দোষীদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে বিভ্রান্ত না হতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ১৫ জুলাই থেকে ৫ অগাস্ট পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সহিংসতার ঘটনায় দায়ী হিসেবে ১২৮ জনের তালিকায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নের নাম রয়েছে।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের এক জরুরি সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ১৫ জুলাই থেকে ৫ অগাস্ট পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সহিংসতায় জড়িত শিক্ষার্থীদের সাময়িক বহিষ্কার করা হবে।
এদিকে তালিকায় ‘চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের নাম বাদ পড়েছে’ এমন অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার দুপুরে মিছিল নিয়ে তারা প্রশাসনিক ভবনের সামনে আসেন। তারা তালিকা পরিমার্জন করে হামলাকারীদের যুক্ত করার দাবি জানান।
মিছিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মোসাদ্দেক আলি ইবনে মোহাম্মদ বলেন, “আমাদের চোখের সামনে ছাত্রলীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী শিক্ষার্থীদের রক্তাক্ত করেছে। তাদের অনেকের ছবি এবং ভিডিও শিক্ষার্থীদের কাছেই আছে।
“বিভিন্ন হলের সভাপতি-সেক্রেটারি এবং পদ প্রত্যাশীরা আগ্রাসী হয়ে হামলার নেতৃত্ব দিয়েছে। কিন্তু তালিকায় তাদের নাম নেই। এটি উদ্দেশ্যমূলক কি না তদন্ত কমিটিকে তার জবাব দিতে হবে।”
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী এবি জোবায়ের বলেন, “সুস্পষ্ট ফুটেজ থাকার পরও অনেক সন্ত্রাসী তালিকায় আসেনি। ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছে। কিন্তু এ তালিকায় তার নাম নেই৷ এ রকম অনেক হামলাকারী তালিকায় আসেনি। উপাচার্যকে এর জবাব দিতে হবে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ বলেন, “এটা বহিষ্কারের চূড়ান্ত তালিকা নয়। এটি সত্যানুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে প্রাথমিকভাবে সিন্ডিকেটে অনুমোদন পেয়েছে।”
তালিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যারয়ের বাইরের কয়েকজনের নাম রয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তালিকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যে দুজনের নাম রয়েছে, তাদের বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব। পটুয়াখালীর যে ছাত্রলীগ কর্মীর নাম রয়েছে, তার বিরুদ্ধে ওখানকার প্রশাসনের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করব।”