পাঠ্যবই সংকট: দুই মাস পরও তিন কোটি বই ছাপা বাকি

ছাপা হয়নি ৩ কোটি পাঠ্যবই
চলতি শিক্ষাবর্ষের দুই মাস পার হলেও এখনও সব শিক্ষার্থীর হাতে পাঠ্যবই পৌঁছেনি। বিশেষ করে নবম শ্রেণির ইংরেজিসহ মাধ্যমিকের অনেক বই এখনও ছাপা হয়নি। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) জানিয়েছে, প্রায় তিন কোটি বই এখনো ছাপা বাকি, যার বেশিরভাগই মাধ্যমিকের। এনসিটিবির দাবি, আগামী ১০ মার্চের মধ্যে বই বিতরণ শেষ হবে।
এর আগে, ৯ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব ও ১৩ জানুয়ারি শিক্ষা উপদেষ্টা জানিয়েছিলেন, ফেব্রুয়ারির মধ্যে শিক্ষার্থীদের হাতে সব বই পৌঁছে যাবে। কিন্তু সেই সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও সংকট কাটেনি।
এনসিটিবি অভিযোগ করেছে, ছাপাখানার মালিকরা কাগজ তুলছেন না, যার ফলে বই মুদ্রণ বিলম্বিত হচ্ছে। এনসিটিবি চেয়ারম্যান ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, ‘তিন কোটি বই ছাপার কাজ বাকি আছে। প্রিন্টিং প্রেসগুলো কাগজ ওঠায়নি। সে কারণে বই ছাপা হয়নি। তবে আগামী ১০ মার্চের মধ্যে ছাপা এবং সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে।’
মুদ্রণ শিল্প সমিতির সভাপতি তোফায়েল খান বলেন, ‘মার্চে কাগজ সরবরাহ করে ফেব্রুয়ারির মধ্যে বই চাইলো তো পাওয়া যাবে না। এনসিটিবি প্রথম কিস্তির কাগজ দিয়েছে দেরিতে। দ্বিতীয় কিস্তির কাগজ আজ মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দেওয়ার কথা থাকলেও পুরোটা দিতে পারছে না। দ্বিতীয় কিস্তির কাগজ না দিয়ে পাঠ্যবইয়ের জন্য চাপ দেওয়ার কারণে অনেকে বাইরে থেকে কাগজ কিনে বই ছেপেছে। অথচ এখন দ্বিতীয় কিস্তির বাকি কাগজসহ তৃতীয় কিস্তির সব কাগজ নিতে বলছে এনসিটিবি। যারা আগে কাগজ কিনে নিয়ে বই ছেপেছেন, তারা এনসিটির কাছ থেকে তৃতীয় কিস্তির সব কাগজ কিনবে কেন?’
কাগজ নিয়ে এই সংকট কেন জানতে চাইলে তোফায়েল খান বলেন, ‘এনসিটিবি’র ভুল পরিকল্পনার কারণে এমনটা ঘটেছে।’
এনসিটিবির তথ্য অনুযায়ী, এবার মোট ৪০ কোটি পাঠ্যবই ছাপানোর পরিকল্পনা ছিল। এর মধ্যে ৩ কোটি বই এখনও ছাপা হয়নি। মাধ্যমিক স্তরের ২৭.৪৩ কোটি বই ছাপা হলেও এখনো ৩.৫ কোটি বই বিতরণ বাকি। প্রাথমিক স্তরের ১১ লাখ বই ছাপা বাকি রয়েছে।
মুদ্রণ শিল্প সমিতির মতে, বেশিরভাগ বই মার্চের মাঝামাঝি বিতরণ করা সম্ভব হবে। তবে কিছু বই দেরিতে পৌঁছাতে পারে।