জাহাঙ্গীরনগরের পোষ্য কোটা বাতিল ঘোষণা
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা বাতিল ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
বুধবার মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে আন্দোলনকারীদের উপস্থিতিতে পোষ্য কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির জরুরি বৈঠকে পোষ্য কোটা ‘সম্পূর্ণ বাতিলের সিদ্ধান্ত’ নেওয়া হয়েছে৷
“শিক্ষার্থীরা গত কয়েকদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিল। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে আমরা আজ কর্মকর্তা, কর্মচারীদের নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করি। আলোচনায় তারা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের ভূমিকা নিয়ে পোষ্য কোটা বাতিলের পক্ষে মত দেয়।"
বুধবার পোষ্য কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি হবে বলে জানান উপাচার্য।
পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে গত রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে অনশন শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
প্রশাসনের আশ্বাসে ওই দিন রাতে তারা অনশন ভাঙলেও পরদিন আবারও অনশন শুরু হয়। এরপর সোমবার রাতে পোষ্য কোটা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত জানায় প্রশাসন।
তাতে বলা হয়, এখন থেকে অনির্ধারিত সংখ্যক পোষ্য কোটার পরিবর্তে প্রতিবছর ৪০টি আসনে পোষ্য কোটায় শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। পোষ্য কোটায় ভর্তি হতে হলে অন্তত ৪০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে। একজন চাকরিজীবী একবারই পোষ্য কোটা ব্যবহার করতে পারবেন।
কিন্তু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবি তোলেন, আগের নিয়মেই পোষ্য কোটায় ভর্তি নিতে হবে। পোষ্য কোটা সংক্রান্ত সব শর্ত বাতিল এবং পুরনো নিয়ম বহালের দাবিতে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ।
ওই দাবিতে মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। অন্যদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সেদিন বটতলা থেকে মিছিল বের করে বিভিন্ন হল প্রদক্ষিণ করেন এবং পোষ্য কোটা সম্পূর্ণ বাতিলের দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন।
এ সময় তারা প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন।তাতে আটকে পড়েন প্রশাসনিক ভবনে অবস্থানরত শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এক পর্যায়ে উপাচার্য সেখানে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানে ৪ ঘণ্টা সময় চান৷
পরে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ দেখিয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয় প্রশাসনকে৷ রাত ৯টা থেকে তারা প্রশাসনিক ভবনে জড়ো হয়ে নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন।
রাত ১২টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা উপস্থিত হয়ে কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত জানান।