জাবিতে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে প্রশাসনিক ভবন অবরোধ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা সম্পূর্ণরূপে বাতিলের দাবিতে প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে শিক্ষার্থীরা একটি মিছিল বের করেন। পরে মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও আবাসিক হল ঘুরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে অবস্থান নেয়। এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ভবনের ভেতরে থাকা সবাইকে তালাবদ্ধ করে রাখেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি সম্পর্কে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী নিবিড় ভূঁইয়া বলেন, "জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা অযৌক্তিক পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে। আমাদের বিশ্বাস, এই কোটা বৈষম্যমূলক এবং অপ্রয়োজনীয়।" তিনি আরও বলেন, "অজপাড়া গাঁয়ের একজন কৃষকের সন্তান যদি মেধার ভিত্তিতে জাহাঙ্গীরনগরে পড়াশোনা করতে পারে, তাহলে একজন শিক্ষার্থী যে জাহাঙ্গীরনগরের ছোট থেকে বড় হয়েছে, ভালো স্কুল কলেজে পড়াশোনা করেছে তার কোনো ধরনের প্রিভিলেজ লাগবে বলে আমরা বিশ্বাস করি না।"
আইন ও বিচার বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী কাওছার আলম বলেন, "বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে। এর আগে উপাচার্যের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা অনশন থেকে সরে এলেও এখনো প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর সিদ্ধান্ত আসেনি।"
অন্যদিকে, পোষ্য কোটার বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধা পুনর্বহালের দাবিতে প্রতিবাদ মিছিল করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার সমিতি, কর্মচারী সমিতি ও কর্মচারী ইউনিয়নের সদস্যরা। কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুর রহমান বাবুল বলেন, "পোষ্য কোটা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধাকে ব্যাহত করে না। এটি একটি প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা, যা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্যও প্রযোজ্য।" তিনি আরও জানান, পোষ্য কোটার পুরনো সুবিধাগুলো পুনর্বহাল না হওয়া পর্যন্ত তারা লাগাতার কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন।
বিক্ষোভের সময় উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন। তিনি বলেন, "আমি এককভাবে এ সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।"
তবে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে তাদের অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।