শনিবার ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, মাঘ ১৯ ১৪৩১, ০২ শা'বান ১৪৪৬

ব্রেকিং

বিশ্ব ইজতেমা: আখেরি মোনাজাত ‘সকাল সোয়া ৯টার মধ্যে’ বিশ্ব ইজতেমায় দুদিনে ৪ মুসল্লির মৃত্যু জুলাই অভ্যুত্থান এবারের বইমেলায় নতুন তাৎপর্য নিয়ে এসেছে : প্রধান উপদেষ্টা সোশ্যাল বিজনেস ইয়ুথ সামিটে প্রধান উপদেষ্টা: তরুণরা পুরো বিশ্বকে পাল্টে দিতে পারে তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি ‘বিশেষভাবে বিবেচনা’ করা হচ্ছে: শিক্ষা মন্ত্রণালয় অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েও বিচারবহির্ভূত হত্যা কেন, প্রশ্ন রিজভীর পুরস্কার গ্রহণ করলেন বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্তরা ফ্যাসিবাদের বিচার দেশের মাটিতেই হবে : ডা. শফিকুর রহমান ইজতেমা এলাকায় রাত ১২টা থেকে গণপরিবহন বন্ধ সরকার নিজেরাও জানে না কী চায়: গয়েশ্বর এবার ফিলাডেলফিয়ায় শিশুসহ ৬ আরোহী নিয়ে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত

শিক্ষা

তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি ‘বিশেষভাবে বিবেচনা’ করা হচ্ছে: শিক্ষা মন্ত্রণালয়

 প্রকাশিত: ১৮:৪৫, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি ‘বিশেষভাবে বিবেচনা’ করা হচ্ছে: শিক্ষা মন্ত্রণালয়

সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবির বিষয়টি যেখানে সরকার ‘বিশেষভাবে বিবেচনা করছে’ সেখানে সময় বেঁধে দিয়ে আন্দোলন করার যৌক্তিকতা দেখছে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

আন্দোলন সংশ্লিষ্টদের 'ধৈর্য্য ধরার' অনুরোধ করে মন্ত্রণালয় 'জনজীবনে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয় বা কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হয়' এমন কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার জন্য আন্দোলনকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

শনিবার বিকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়।

মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা সিরাজ উদ দৌলা খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "সাত কলেজকে স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো দিতে ইউজিসি চেয়ারম্যানের গঠিত কমিটি সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরে শিক্ষার্থীদের যে দাবি, তা নিয়েও কাজ করছে। তাদের সে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

“তাই জনদুর্ভোগ এড়াতে কর্মসূচি থেকে বিরত থাকতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের অনুরোধ জানানো হয়েছে।"

বিবৃতিতে বলা হয়, "সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে চলমান আন্দোলনের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় তথা সরকার অবহিত রয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো যাচ্ছে যে, ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সাতটি কলেজের সমন্বয়ে একটি পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের লক্ষ্যে ইউজিসির চেয়ারম্যান মহোদয়ের নেতৃত্বে গঠিত একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি কাজ করছে। এক্ষেত্রে সরকারি তিতুমীর কলেজের বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

"ইতোমধ্যে এই কমিটি তিতুমীর কলেজসহ সাতটি কলেজের শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাদের সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে। এই কলেজগুলোর শিক্ষার সুযোগ সুবিধা ও মানোন্নয়নই বর্তমানে সরকারের প্রধান লক্ষ্য এবং এক্ষেত্রে করণীয় সকল বিকল্পই সরকারের বিবেচনায় থাকবে।"

সর্বস্তরের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ন্যায়সঙ্গত দাবি-দাওয়ার বিষয়ে সরকার ‘সবসময় সচেতন ও সহানুভূতিশীল রয়েছে’ বলেও বিবৃতিতে আশ্বস্ত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি থেকে আলাদা করার সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে এসব কলেজে আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে না।

সরকারি এই সাতটি বড় কলেজের জন্য পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে সরকার। সাত কলেজকে প্রতিষ্ঠানিক কাঠামোর রূপ দিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যানরে নেতৃত্বে একটি কমিটি কাজ করছে।

সরকারি এই সাত কলেজ হল ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ।

এর মধ্যে সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী নিজেদের জন্য একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। শিক্ষালয়টির প্রধান ফটকে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়’ লেখা ব্যানারও টানিয়ে দিয়েছেন তারা। সরকারি ঘোষণার দাবিতে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে কলেজের সামনে অনশনে বসেছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী।

ঢাকার মহাখালীতে কলেজের সামনে সড়ক অবরোধ করে বৃহস্পতিবার থেকে দফায় দফায় তাদের কর্মসূচি চলছে। সড়ক অবরোধের কারণে যানজটে ভুগতে হচ্ছে ওই পথ দিয়ে যাওয়া যানবাহন ও যাত্রীদের।

তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন কর্মসূচি ইতোমধ্যে চতুর্থ দিনে গড়িয়েছে। শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দিয়েছেন, শনিবার বিকাল ৪টার মধ্যে এ বিষয়ে ঘোষণা না এলে তারা ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করবেন।

আন্দোলনকারীদের ‘তিতুমীর ঐক্য’র সাত দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ, ‘বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রশাসন গঠন করে ২৪-২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা, শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না হলে অনতিবিলম্বে শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন করা।

এছাড়া ২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ন্যূনতম আইন এবং সাংবাদিকতা বিষয় সংযোজন, অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষার গুণগতমান শতভাগ বাড়াতে আসন সংখ্যা সীমিত এবং আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার বিনির্মাণে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিত করার দাবিও রয়েছে অনশনে থাকা শিক্ষার্থীদের।