সরকারি স্কুলে ভর্তি: ৮ দিনেই আসনের ৩ গুণ আবেদন
সারাদেশে সরকারি স্কুলে ভর্তি আবেদন শুরু হওয়ার ৮ দিনের মধ্যে আসনের তিনগুণ দরখাস্ত পড়েছে। তবে এ সময়ে বেসরকারি স্কুলে আবেদন জমা পড়েছে আসনের মাত্র ১৪ শতাংশ।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক শাখার উপপরিচালক মোহাম্মদ আজিজ উদ্দিন এ তথ্য জানিয়েছেন।
সরকারি এবং মহানগর ও জেলা সদর পর্যায়ের বেসরকারি মোট ৩ হাজার ৮৭৮টি স্কুলের ১১ লাখ ১৬ হাজার ৫৫৫টি শূন্য আসনে ভর্তির জন্য গত ১২ নভেম্বর অনলাইনে আবেদন শুরু হয়। এ প্রক্রিয়া চলবে আগামী ৩০ নভেম্বর বিকাল ৫টা পর্যন্ত।
উপপরিচালক মোহাম্মদ আজিজ উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দেশের ৬৮০টি সরকারি স্কুলে প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে ১ লাখ ৮ হাজার ৬৬২টি শূন্য আসন রয়েছে। এসব আসনের বিপরীতে মঙ্গলবার বিকাল ৩টা ২০ মিনিট পর্যন্ত আবেদন করেছে ৩ লাখ ৩৪ হাজার ২২৬ জন। তারা মোট ৫ লাখ ৩ হাজার ১৪৫টি আসন ‘পছন্দ’ করেছে।
মহানগর ও জেলা সদর পর্যায়ের বেসরকারি ৩ হাজার ১৯৮টি স্কুলের প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে ভর্তিতে শূন্য আসনের সংখ্যা ১০ লাখ ৭ হাজার ৬৭১টি।
উপপরিচালক আজিজ জানান, এসব স্কুলে মঙ্গলবার বিকাল ৩টা ২০ মিনিট পর্যন্ত ১ লাখ ৪৪ হাজার ৫৪৫ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছে। তারা ‘পছন্দ’ দিয়েছে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৭০২টি আসনে, যা মোট আসনের ১৪.৩৪ শতাংশ।
আগামী ১২ ডিসেম্বর ঢাকার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে কেন্দ্রীয়ভাবে লটারির মাধ্যমে ভর্তিচ্ছুদের স্কুল ঠিক হবে বলে জানান তিনি।
অনলাইনে (https://gsa.teletalk.com.bd) ১১০ টাকা ফি দিয়ে ভর্তির আবেদন করতে পারছে শিক্ষার্থীরা। প্রতিটি আবেদনে সর্বোচ্চ পাঁচটি স্কুলে পছন্দের ক্রমানুসারে নির্বাচন করা যাবে।
আবেদনের সময় সরকারি স্কুলের ক্ষেত্রে থানাভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি স্কুলের ক্ষেত্রে মহানগর এলাকা ও জেলার সদর উপজেলা পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
উপজেলা পর্যায়ের বেসরকারি স্কুলগুলো স্থানীয় ভর্তি কমিটির অনুমোদন নিয়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় লটারির মাধ্যমেই শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারবে। তাদের জন্য অনলাইনে আবেদনের প্রয়োজন পড়বে না।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর জানিয়েছে, জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এবং সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীর বয়স ছয় বছরের বেশি হতে হবে। তবে কাঙ্ক্ষিত শিক্ষাবর্ষের ১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীর সর্বনিম্ন বয়স পাঁচ বছর এবং ৩১ ডিসেম্বর তারিখে সর্বোচ্চ বয়স সাত বছর হলেও আবেদন করা যাবে।
তার মানে যাদের জন্ম তারিখ ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে ২০২০ সালের ১ জানুয়ারির মধ্যে- তারা আগামী বছর প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির আবেদনের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
কোটা
ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীর ভর্তি উপযুক্ত সন্তান সংখ্যার সমসংখ্যক আসন সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ে সংরক্ষিত থাকবে। এক্ষেত্রে তাদের অনলাইনে আবেদন করার প্রয়োজন নেই।
তবে শিক্ষক-কর্মচারী সরকারি মাধ্যমিক বালক বিদ্যালয়ে কর্মরত থাকলে এবং তার ভর্তি উপযুক্ত সন্তান বালিকা হলে কাছের সরকারি বালিকা বা সহশিক্ষা বিদ্যালয়ে আসন সংরক্ষিত রাখতে হবে।
শিক্ষক-কর্মচারী সরকারি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে কর্মরত থাকলে এবং তার ভর্তি উপযুক্ত সন্তান বালক হলে কাছের সরকারি বালক বা সহশিক্ষা বিদ্যালয়ে আসন সংরক্ষিত রাখতে হবে।
শিক্ষক যদি সহশিক্ষা বিদ্যালয়ে কর্মরত থাকেন, তাহলে তার ভর্তি উপযুক্ত সন্তানের ভর্তির জন্য কর্মরত বিদ্যালয়েই আসন সংরক্ষিত রাখতে হবে।
কর্মরত বিদ্যালয়ে ভর্তির উপযুক্ত কাঙ্ক্ষিত শ্রেণি না থাকলে কাছের বালক-বালিকা বা সহশিক্ষা বিদ্যালয়ে আসন সংরক্ষিত রাখতে হবে।
বেসরকারি স্কুলের ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাকাসহ সারা দেশের মহানগরী ও জেলা সদরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মচারী ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের সন্তানদের ন্যূনতম যোগ্যতা থাকলেই ভর্তির সুযোগ পাবে। তবে পোষ্য বা আত্মীয়স্বজন বা ব্যবস্থাপনা কমিটির জন্য আসন সংরক্ষণ থাকবে না।